চবি উপাচার্য হতে চাইলেই দোষ!


চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে উপাচার্য পদে যেতে আগ্রহী শিক্ষকদের অনুসারীরা লিপ্ত হয়েছে কাঁদা ছোড়াছুড়িতে। বেনামে লিফলেট, পোস্টার, ফেসবুকে অশ্লীল ভাষায় প্রচারণা চালাচ্ছে তারা। অভিযোগ রয়েছে, উপ উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ও ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি প্রফেসর সুলতান আহমেদের অনুসারী শিক্ষকরাই নানা অপপ্রচারে লিপ্ত রয়েছে। কেউ উপাচার্য হতে আগ্রহ প্রকাশ করলেই তার বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রপাগান্ডা জুড়ে দিচ্ছে এক শ্রেণীর শিক্ষক। এ যেন উপাচার্য পদে যেতে চাওয়াই দোষের কিছু।

জানা গেছে, চবিতে বর্তমান উপাচার্য প্রফেসর ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর মেয়াদ শেষ হতে যাচ্ছে আগামী ১৫ জুন। এ পদে যেতে ‘দৌড়ঝাঁপ’ শুরু করেছে ‘প্রার্থী’রা। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয় থেকে উপাচার্য কে হবেন সে বিষয়ে একপ্রকার চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বমহলে গ্রহণযোগ্যতা ও একাডেমিক এক্সিলেন্সি বিচারে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের জ্যেষ্ঠ এক শিক্ষককে এ পদের জন্য সুপারিশও করা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী দফতরের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। সাম্প্রতিক সময়ে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে একই ব্যক্তিকে দ্বিতীয়বার উপাচার্য পদে পদায়ন না করার নীতি অনুসরণের ফলে বর্তমান উপাচার্য ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর কপালও পুড়তে যাচ্ছে।

এরই মধ্যে উপাচার্য পদে না আসার ‘আশংকা’ থেকে উপ উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ও ব্যাংকিং বিভাগের সভাপতি প্রফেসর সুলতান আহমেদের অনুসারী শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে অপপ্রচারে লিপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে গত তিন বছর উপ উপাচার্য পদে দায়িত্বপালনের আগে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট বড় কোনো দায়িত্ব পালন না করা, প্রশাসনিক অভিজ্ঞতা অর্জনে ব্যর্থতা, বঙ্গবন্ধু চেয়ার নিয়ে বিতর্কে জড়ানো, কর্মকর্তাদের সঙ্গে দূর্ব্যবহার, নিয়মের অতিরিক্ত যাতায়াত ভাতাগ্রহণ, জামায়াত-শিবির নিয়োগে সুপারিশ, নিজ এলাকার আত্মীয়স্বজন নিয়োগসহ নানা অভিযোগের কারণে উপাচার্য পদে পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে প্রফেসর ড. শিরীণ আখতারের। প্রফেসর শিরীণের অনুসারী কয়েকজন শিক্ষক এ আশংকা থেকে অন্য গ্রহণযোগ্য শিক্ষকদের বিরুদ্ধে ‘উঠেপড়ে’ লেগেছেন।

উপাচার্য হিসেবে প্রফেসর শিরীণের পিছিয়ে পড়ার কারণ অনুসন্ধানে জানা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ে গত তিন বছর উপ উপাচার্য পদে দায়িত্বপালনের আগে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট বড় কোনো দায়িত্ব তাঁকে পালন করতে হয়নি। ফলে প্রশাসনিক নানা বিষয়ে তাঁর অভিজ্ঞতার ঘাটতি রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় বঙ্গবন্ধু চেয়ারের নীতিমালাসহ এ পদে বর্তমান উপাচার্যকে বঙ্গবন্ধু গবেষণা কেন্দ্র নির্বাহী কমিটি কর্তৃক নিয়োগ প্রদানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের উচ্চ পর্যায়ে সমালোচনার মুখে পড়েন উপ উপাচার্য। যদিও পরবর্তীতে সর্বশেষ সিন্ডিকেটে বঙ্গবন্ধু চেয়ার অনুমোদনের সময় তিনি এ বিষয়ে আর কোনো আপত্তি তুলেননি। এছাড়াও শিক্ষক ও কর্মচারী নিয়োগেও তিনি প্রভাব খাটিয়েছেন বলে অভিযোগ রয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি তাঁর পিএইডি ছাত্র কাইছার উদ্দিন নামে এক শিবির নেতাকে বাংলা বিভাগে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে সুপারিশ করেছেন। এছাড়াও তিনি তাঁর আত্মীয় দিলশাত জাহান, তাঁর পিএস মোহাম্মদ ইউনুচের স্ত্রী এবং বাংলা বিভাগের পিয়ন আলীর মেয়েকে নিয়োগ দিয়েছেন তিনি।

নিয়োগ বাণিজ্যের অভিযোগে ছাত্রলীগের দাবির প্রেক্ষিতে সম্প্রতি শাহ জালাল হলের প্রভোস্টের পদ থেকে অপসারণ হওয়া প্রফেসর ড. সুলতান আহমদেরও উপাচার্য পদে যাওয়া সম্ভাবনা কমেছে বহুগুণে। কারণ হিসেবে জানা গেছে, তাঁর কথায় শিক্ষক, কর্মচারী নিয়োগ দিতে হয় উপাচার্যদের। বিগত তিন উপাচার্যের সময়ে তাঁর আপন ভাইসহ অন্তত ১২ জন নিকটাত্মীয় ও তাঁর গ্রামের লোকের চাকরি দিয়েছেন তিনি। তাঁর সুপারিশ ছাড়া বিবিএ অনুষদের শিক্ষক নিয়োগ হয় না বলেও প্রচার রয়েছে। তাঁর হাতে নিয়োগ হওয়াদের মধ্যে রয়েছে, তার আপন ভাই কামরুল, তার শ্বশুর বাড়ির আত্মীয় সেলিম, চার চাচাতো ভাই নাছির, জসিম, মাহবুব, এয়ার মোহাম্মদ, তার গ্রামের আত্মীয় মোহাম্মদ রাশেদ, ওসমান গণি, নাঈমুদ্দিন। সম্প্রতি নিয়োগ দিয়েছেন ব্যাংকিং বিভাগের উচ্চমান সহকারী আরাফাতুল করিমকে। তিনি তার ভাতিজা হিসেবেই পরিচিত। এদের সকলের বাড়িই ড. সুলতানের গ্রাম রাউজানের হিংগলায়। সম্প্রতি ছাত্রলীগ নিয়োগ বাণিজ্য ও প্রভোস্টের দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগ তুলে তাকে এ পদ থেকে অপসারণের দাবি তুলে। ছাত্রলীগের চাপের মুখে বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য তাকে প্রভোস্টের পদ থেকে বরখাস্ত করেন।

প্রফেসর সুলতান ও শিরীণের অনুসারী শিক্ষকরা আওয়ামী লীগের অনুসারী প্রবীণ শিক্ষক, বিভিন্ন প্রশাসনিক পদে একাধিকবার নির্বাচিত শিক্ষককে বিএনপিপন্থি, জামায়াতপন্থিসহ নানা মিথ্যাচার করছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট সদস্য ও নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাদাত আল সাজীব, কাজীম নূর সোহাদ, মাইদুল ইসলাম বর্তমান উপ উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ও প্রফেসর সুলতান আহমেদের অনুসারী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিচিত। এ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সরকার ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নাল এবং ফেসবুকে অপপ্রচারের সুস্পষ্ট অভিযোগ। যে অভিযোগগুলো গড়িয়েছে আদালত ও তদন্ত কমিটি পর্যন্ত। অন্যদিকে সমাজতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষক মাইদুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেসবুকে কটূক্তির অভিযোগে আইসিটি আইনে মামলা রয়েছে। এ মামলায় তিনি কারাভোগও করেছেন।

এছাড়া বর্তমান উপ উপাচার্য প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার ও প্রফেসর সুলতান আহমেদের অন্যতম অনুসারী হিসেবে পরিচিতরা হলেন, নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রহমান নাসির, সাবেক প্রক্টর ও লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌলা ও খসরুল আলম কুদ্দুসী।

এদের মধ্যে নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. রহমান নাসিরের বিরুদ্ধে কোটা বিরোধী আন্দোলন ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের নামে সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি সে সময় নিজেও এসব আন্দোলন অংশ নিয়েছেন।

এছাড়া সাবেক প্রক্টর ও লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে রয়েছে ছাত্রলীগের কোন্দল সৃষ্টির অভিযোগ। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিগত প্রশাসনের সময়ে প্রয়াত চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে নিজের একটি গ্রুপ তৈরী করেছিলেন। তিনি মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের মামলা ও নির্যাতনের মাধ্যমে ক্যাম্পাস থেকে বেরও করে দিয়েছিলেন। পরে মহিউদ্দিন চৌধুরী তত্ত্ববধানে তাঁর অনুসারীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে প্রক্টর সিরাজ উদ দৌলার অনুসারী আশরাফুজ্জামান আশার গুলিতে মহিউদ্দিন চৌধুরীর অনুসারী তাপস সরকার নিহত হন। বিভিন্ন পত্রিকায় ওই সময় এ তথ্যগুলো প্রকাশ পেয়েছিল।

এছাড়া ২০০৯ সালের পর থেকে আওয়ামীপন্থি শিক্ষক হিসেবে পরিচিত লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক খসরুল আলম কুদ্দুসী সাবেক প্রক্টর সিরাজ উদ দৌলার অনুসারী হিসেবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

সিন্ডিকেট সদস্য ও নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক সাদাত আল সাজিব চবি সমাজবিজ্ঞান জার্নালে প্রকাশিত তার একটি আর্টিকেলে বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে এবং আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে বিতর্কিত হয়েছেন।

জানা গেছে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত ‘জার্নাল অব সোশ্যাল সায়েন্স’- এর ২০১৭ সালের নভেম্বর সংখ্যায় প্রকাশিত ‘ফ্রিডম অব এক্সপ্রেশন ইন বাংলাদেশ: এ ক্রিটিক্যাল আন্ডারস্ট্যান্ডিং অব কন্সটিটিউশন্যাল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডস’ শিরানামে একটি প্রবন্ধ লিখেন সাদাত আল সাজিব।

সাজিব ‘জার্নাল অব সোশ্যাল সায়েন্স’-এ প্রকাশিত তার প্রবন্ধে দেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে কড়া সমালাচনা করেন। একই সাথে তিনি বতর্মান সরকারের সময় গুম, হত্যা বেড়ে যাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেন। শুধু তাই নয়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করা হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সরকার সমালাচনা করে তিনি উল্লেখ করেন, দেশের বেশিরভাগ মানুষ মনে করছে আদালতের রায়ের ওপর রাজনৈতিক প্রভাব খাটানো হচ্ছে।

জার্নালটির ১১২ নম্বর পৃষ্ঠায় তিনি সম্প্রতি আদালত কর্তৃক আমার দেশ পত্রিকা বন্ধের সিদ্ধান্তে রাজনৈতিক প্রভাব ছিল উল্লেখ কর তিনি লিখেন, However, the general public are of the viwe that this judgment was given under political influence as the Newspaper `Amar Desh was critici“ing the government by exercising their right to publish the news.

অর্থাৎ সাধারণ জনগণের অভিমত হচ্ছে, সংবাদ প্রকাশের অধিকার প্রয়োগ করে আমার দেশ সরকারের সমালাচনা করছে বলেই রাজনৈতিক প্রভাবের অধীন এই রায় দেওয়া হয়েছিল।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, Ones right to criticize the government for wrong doing is an aspect of a democratic state. But, people are often seen to be arrested or got disappeared or kidnapped if the said or wrote something against public authority. অর্থাৎ ভুল কাজের জন্য সরকারের সমালোচনা করার অধিকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের একটি দিক। কিন্তু যদি সরকারের বিরুদ্ধে কিছু লিখা বা বলা হয় এদেশে মানুষকে প্রায়ই গ্রেফতার, গুম ও অপহৃত হতে দেখা যায়।

বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী ও ব্যবসায়ী জামাল উদ্দিনকে উপস্থাপন করে তিনি লিখেন, ‘Firstly, maû politicians and businessmen in the recent past have been victims of movement in our country. The famous businessmen Ellias Ali and Jamal Uddin are notable examples of such incidents. Secondly, the editor of Amar Desh… অর্থাৎ প্রথমত সাম্প্রতিক অতীতে অনেক রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ী আমাদের দেশ এমন কর্মকান্ডের শিকার হয়েছেন। খ্যাতিমান ব্যবসায়ী ইলিয়াস আলী ও জামাল উদ্দিন এমন ঘটনার উল্লেখযোগ্য উদাহরণ।’

তিনি লিখেন, ‘দ্বিতীয়ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতা প্রয়োগ করা রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে লেখালেখি করায় আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে গ্রেফতার ও কারাবন্দী করা হয়। এবং সংবাদপত্রের স্বাধীনতা বজায় রেখে সংবাদ প্রকাশ করায় আমার দেশ পত্রিকা জোর করে বন্ধ করে দেওয়া হয়।

এদিক শিক্ষক সাদাত আল সাজিব ও কাজিম নুর সোহাদ আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘সইজ’ এ প্রকাশিত ‘কনটস্টড পিস: দ্য চিটাগাং হিল ট্র্যাক্টস পিস একর্ড’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রবন্ধে তারা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে চারবার শুধুমাত্র শেখ মুজিব হিসেবে উপস্থাপন করেন। এক জায়গায় বঙ্গবন্ধুর নামের বানানও লিখেন ভুল।

এছাড়া প্রবন্ধটির ২৭২ নম্বর পৃষ্ঠায় তারা দাবি করেন, এখনো পাহাড়ের অধিবাসীরা বাংলাদেশ সেনাবাহিনী ও সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীদের হাতে নির্যাতন, দুর্ব্যবহার ও বৈষম্যের শিকার হচ্ছে। যদিও এক্ষেত্রে এন. উদ্দিনের একটি লেখা থেকে এটি রেফারেন্স হিসেবে দেখানো হয়েছে।
এদিকে একই পৃষ্ঠায় সাজিব ও সোহাদ লিখেন, বাংলাদশ সেনাবাহিনী এবং বর্ডার গার্ড (বিজিবি) পাহাড়ে থাকা উপজাতিদের জমি এখনা দখল করে আছে।

এদিকে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক জার্নালে এ ধরণের তথ্য প্রদানকে রাষ্ট্রদ্রোহীতা ও দেশের প্রচলিত আইনের লঙ্ঘন বলে মন্তব্য করেছেন বিশেষজ্ঞরা। একই সাথে বিশ্বমঞ্চে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা হয়েছে বলেও দাবি করেন সংশ্লিষ্টরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের সাবেক এক ডিন বলেন, আওয়ামীলীগ সরকারের বদান্যতায় সাজিব, সোহাদ পর্যাপ্ত পয়েন্ট না থাকার পরও বিশেষ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে নিয়োগ পেয়েছেন। তারা আওয়ামীপন্থী হলুদ দলের সদস্য হলেও তাদের প্রকাশিত প্রবন্ধে মিথ্যাচারের মাধ্যমে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।

যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে অবস্থান নেওয়া এবং মিথ্যাচারের মাধ্যমে দেশের সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টিকারী একটি পত্রিকাকে আদালত আইনগতভাবে বন্ধ করে দিয়েছে। অথচ সোশ্যাল সায়েন্স জার্নালের প্রবন্ধে তারা মন্তব্য করেছেন, বর্তমান আওয়ামীলীগ সরকার আদালতের ওপর প্রভাব খাটিয়ে পত্রিকাটি বন্ধ করেছে। এ সরকারের আমলে অসংখ্য টিভি চ্যানেল ও পত্রিকা অনুমাদন দেওয়া হলেও তারা দাবি করেছে সরকার গণমাধ্যমের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে।

অন্যদিকে আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘সেইজ’- এ প্রকাশিত প্রবন্ধে উল্লেখিত মন্তব্যের বিষয়ে সাবেক এক ডিন বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের জাতিগত সমস্যা সমাধানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে বিশ্বজুড়ে প্রশংসিত হয়েছে। তারা পার্বত্য আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখে চলছে। সেই সব ভূমিকার কথা উল্লেখ না করে বিশ্বের কাছে সেনাবাহিনীকে কলুষিত করার অপপ্রয়াস চালানোর অংশ হিসেবে সেইজ জার্নালে তাদের প্রকাশিত প্রবন্ধে মন্তব্য করেছে।

শুধু তাই নয়, তারা বলছে সরকারী কর্মকর্তা কর্মচারীরা উপজাতিদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার ও বৈষম্য সৃষ্টি করছে।

অথচ গোটা পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রশাসনের শীর্ষ পদে রয়েছে পাহাড়ের নাগরিকরা। পার্বত্য জেলার সংসদ সদস্য অবাঙালি, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ, পার্বত্য চট্টগ্রাম উনয়ন বোর্ডসহ সকল স্তরের শীর্ষ পদে পাহাড়িদের প্রতিনিধিত্ব সরকার নিশ্চিত করেছে।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য বেশ কিছুদিন আগে একুশে পত্রিকার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে সহকারী অধ্যাপক সাদাত আল সাজিব জানান, এ বিষয়ে তার কিছুই বলার নেই।