চট্টগ্রাম : তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ন্যায় প্রতিষ্টার স্বার্থে বাংলাদেশে বঙ্গবন্ধু হত্যা ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পটভূমি যারা রচনা করেছে তাদের মূখোশ যদি উম্মোচন না করি তাহলে ৫০ বছর পর কারা বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের কুশিলব ছিলেন, কারা পটভুমি রচনা করেছিলেন, কারা পেছন থেকে কলকাঠি নেড়েছিলেন তাদের মুখোশ অনুম্মোচিত থেকে যাবে। ইতিহাস ও ন্যায় প্রতিষ্টা করার স্বার্থে তাদের মুখোশ উম্মোচনা করা এখন সময়ের দাবি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক চক্র এবং এদেশে যারা বাংলাদেশ ও স্বাধীনতা চায়নি মুক্তিকামী মানুষের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিল তাদের যোগসাজসে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার সাথে সরাসরি যুক্তদের বিচার হয়েছে। কিন্তু বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের নীলককশা যারা প্রণয়ন করেছিল তাদের বিচার হয়নি।
শনিবার (৩ আগস্ট) বিকেলে চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে জিয়াউর রহমান ওঁৎপ্রোত ভাবে যুক্ত ছিলো দাবি করে আওয়ামী লীগের এই মুখপাত্র বলেন, জিয়াউর রহমান যে ইতিহাসে বর্বরোচিত বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন সেটা বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের পর বিদেশি টেলিভিশনে কর্ণেল ফারুক ও রশিদের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে সেটি প্রকাশিত হয়েছে। এই হত্যাকান্ড নিয়ে যে সমস্ত বই পুস্তক পরবর্তিতে প্রকাশিত হয়েছে সেগুলোর মাধ্যমেও আজকে স্পস্ট হয়েছে জিয়াউর রহমান বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের সাথে যুক্ত ছিলেন।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের পর বিপর্যস্ত বাংলাদেশকে উত্তরণ ঘটিয়ে বঙ্গবন্ধু যখন বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন তখন যারা ৭১এর পরাজিত শক্তি বাংলাদেশ চায়নি এবং আন্তর্জাতিকভাবে বিরুদ্ধাচরণ করেছিল তারাই যৌথভাবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছিল।
আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ অদম্য গতিতে এগিয়ে চলছে। তিনি আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বাংলাদেশের পরিচয় বদলে দিয়েছেন। স্বাধীনতার পরের দরিদ্র বাংলাদেশ এখন নিম্ম মধ্যম আয়ের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের দেশ ও ৪১ সাল নাগাদ উন্নত দেশে রূপান্তরিত করার ঘোষণা দিয়েছেন।
কর্ণফুলি নদীর উপর কালুরঘাট সেতু নির্মাণের জটিলতা নিরসনে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাবেন বলে স্থানীয়দের আশ্বস্ত করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, গত সপ্তাহে আমার উদ্যোগে ও কেবিনেট সচিবের আয়োজনে ঢাকায় বৃহত্তর চট্টগ্রামের উন্নয়নের জন্য একটা উন্নয়ন সমন্বয় সভা হয়েছে। সেখানে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী, শিক্ষা উপমন্ত্রী, রেল, যোগাযোগ, নৌ পরিবহনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও চট্টগ্রামের মেয়রসহ সমস্ত উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা অংশ নেন। সেখানেও কালুরঘাট সেতু নিয়ে আলোচনা হয়েছে। কালুরঘাট সেতু নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে সেটা নিরসনকল্পে আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে যাব। এই জটিলতা নিরসন করে খুব সহসাই কালুরঘাট সেতুর নির্মাণ কাজ শুরু হবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল আমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারন সম্পাদক চেয়ারম্যান মোকারম হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান বক্তা ছিলেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন চৌধুরী।
বিশেষ অতিথি ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহাতাব উদ্দিন চৌধুরী।
এতে অন্যান্যদের মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল করিম বাবুল, রেজাউল করিম রাজা, এস এম জসিম উদ্দিন, রিদুয়ানুল হক টিপু, সেকান্দর আলম বাবর, মুক্তিযোদ্ধা রাজেন্দ্র প্রসাদ, আ হ ম নাছির উদ্দিন প্রমূখ বক্তব্য রাখেন।
একুশে/এসসি