মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

লালদিঘীকে ভুলে গেছে আওয়ামী লীগ!

প্রকাশিতঃ ১১ অগাস্ট ২০১৯ | ৭:৫৩ অপরাহ্ন

হিমাদ্রী রাহা : লালদিঘীর মাঠ, যে মাঠকে রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা বলে থাকেন রাজনীতির পীঠস্থান। সেই ৬ দফা আন্দোলন থেকে শুরু করে নানা আন্দোলন সংগ্রামে কিংবা সভা সমাবেশে সবসময়ই সরগরম থাকতো লালদিঘী। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের সভা সমাবেশ মানেই লালদিঘীর মাঠ। যার নেপথ্য নায়ক ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের প্রয়াত সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী।

দলীয় সাধারণ সমাবেশ কিংবা শ্রমিক সমাবেশসহ নানা দাবি আদায়ের আন্দোলনে মহিউদ্দিন চৌধুরীর নেতৃত্বে সরব থাকতো লালদিঘী মাঠ। কিন্তু তিনি মারা যাওয়ার পর ভাটা পড়ে লালদিঘীর সভা সমাবেশে। দলীয় সমাবেশ বা সম্মেলন হয়ে পড়ে হলমুখী। সর্বশেষ ২০১৮ সালের ডিসেম্বরের ১৮ তারিখ জাতীয় নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের প্রার্থীতা পরিচয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীর সাথে ভিডিও কনফারেন্সের আয়োজন করা হয় এই লালদিঘীর মাঠে। তাও কোন সভা কিংবা সমাবেশ নয়। কিন্তু কেন এই লালদিঘী বিমুখিতা?

এবিষয়ে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন একুশে পত্রিকাকে বলেন, লালদীঘি মাঠে দীর্ঘদিন ধরে কোনো সভা সমাবেশ হচ্ছে না তা নয়, আসলে সেখানে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। স্থায়ী মঞ্চ করা হচ্ছে। তা শেষ হলেই সেখানে আমরা আবার সভা-সমাবেশ করবো। এই মাঠের গুরুত্ব অনেক। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এই মাঠ থেকে চট্টগ্রামের উন্নয়নের ডাক দিয়েছেন। নানা আন্দোলন সংগ্রামের সূতিকাগার এই লালদিঘীর মাঠ। আমাদের রাজনৈতিক পীঠস্থান। সামনে নানা কর্মসূচিি রয়েছে। যার বেশিরভাগই লালদিঘীর মাঠে হবে।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি যখন মুসলিম হাই স্কুলের ছাত্র তখন থেকেই লালদিঘীর সভা সমাবেশ দেখতে অভ্যস্থ। সেই অভ্যাসই আমাকে রাজনীতির ময়দানে নিয়ে আসে। কিন্তু এ কথা সত্যি মহিউদ্দিন চৌধুরী মারা যাওয়ার পর লালদিঘীতে খুব একটা সভা সমাবেশ হয়নি। তিনি নানা সভা সমাবেশ করে দলকে ব্যস্ত রাখতো। আর তাঁর সভা সমাবেশ মানেই লালদিঘীর ময়দান। তাছাড়া আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন দল হওয়ায় নানা বাধ্যবাধকতার কারণে আমাদের বেশিরভাগ সভা সমাবেশ হলভিত্তিক হয়ে গেছে। এছাড়া এখনাকার রাজনীতি হয়ে গেছে মিডিয়া ও ফেসবুক কেন্দ্রিক। এসব কারণে লালদিঘীতে তেমন সভা-সমাবেশ হচ্ছে না। তবে আশা করছি শোকের মাস অর্থাৎ আগস্টের পর আমরা দলীয় নেতারা সবাই একসাথে বসে লালদিঘীর মাঠে সভা সমাবেশ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবো।

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক  এম এ সালাম বলেন, লালদিঘীর মাঠের গুরুত্ব অপরিসীম। এম এ আজিজ, এম এ মান্নান, জহুর আহমেদ চৌধুরী থেকে শুরু করে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এই মাঠে ভাষণ দিয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর ডাকেও নানা আন্দোলন সংগ্রামে লালদিঘীর মাঠে সরব থাকত। কিন্তু ইদানীংকালে লালদিঘীর মাঠে সভাসমাবেশ কম হওয়ার কারণ হলো একেতো বর্ষাকাল তার উপর সেখানে সৌন্দর্যবর্ধনের কাজ চলছে। এসব কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে ওখানে আমরা কোন সভা সমাবেশের আয়োজন করতে পারিনি। তবে সামনে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে অনেকগুলো কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। তখন আশাকরি লালদিঘীর মাঠ আবার সভা-সমাবেশে সরগরম হয়ে উঠবে।

একুশে/এইচআর/এটি