
চট্টগ্রাম : ১৯৭৯ সালে চট্টগ্রামের বাকলিয়ায় নির্বাচনী ক্যাম্পেইনে আসেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান। এসময় উপস্থিত অন্যান্যদের ধরে নির্বাচনী প্রচারণার মাইক হাতে নেন শামসুল হক চৌধুরী। জিয়াউর রহমানের উপস্থিতিতে বঙ্গবন্ধু ও আওয়ামী লীগকে লাগামহীনভাবে গালাগালি করাতে সেদিন জিয়াউর রহমানের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সক্ষম হন শামসুল হক। সেদিন তার ’বিচ্ছু সামশু’ নামটি জিয়াউর রহমান দিয়েছিলেন।
একুশে পত্রিকার কাছে এই তথ্য দিয়েছেন চট্টগ্রাম আবাহনী লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের ক্রীড়া সম্পাদক দিদারুল আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, জিয়ার প্রোডাক্টের কাছে কখনো বঙ্গবন্ধু কিংবা তার মেয়ের জন্য ভালোবাসা থাকবে না। থাকবে শুধু বাইরের একটা রূপ দিয়ে ব্যবহার করে উনার থেকে কিছু হাতিয়ে নেয়া। প্রকৃতপক্ষে তার অন্তরে বিএনপি-জাতীয়পার্টি। মুখের উপর তিনি আওয়ামী লীগ।
বুধবার দুপুরে একুশে পত্রিকাকে দেয়া এক ভিডিও সাক্ষাৎকারে দিদারুল আলম চৌধুরী বলেন, ডবলমুরিং থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক থাকার সময় তিনটি টাইপ মেশিন চুরি করে হাতেনাতে ধরা পড়েছিলেন শামসুল হক চৌধুরী। এই ঘটনায় ১৭ দিন হাজতবাসও করেন শামসুল। পরবর্তীতে জাতীয়পার্টিতে যোগ দিয়ে নিউমার্কেট মোড়ে আওয়ামী লীগের মিটিং পণ্ড করার জন্য বোমা হামলা চালান তিনি। আমাদের মোশাররফ ভাই আহত হয়েছিলেন। বোমা হামলার পরে আমাদের নেতা ইসহাক মিয়া কিন্তু মাইকে বলেছিলেন, তুমি কে হামলাকারী আমি তোমাকে ভালো করে চিনেছি। তোমার নামের প্রথম বর্ণ ’শ’, তোমার ঘাড় বেটে।
যখন তিনি আওয়ামী লীগে যোগ দিতে চাচ্ছেন, স্টেডিয়ামে গরু জবাই করলেন। বাবু ভাই আর আমি বহু চেষ্টা করে ওকে যোগ দিতে দিইনি। একমাত্র স্বাক্ষী এখন আলাউদ্দিন নাছিম, প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন এপিএস। তার সাথে যোগাযোগ করে আওয়ামী লীগের ৫০ বছর পূর্তিতে তার যোগদানের চেষ্টা আমরা রুখে দিই। পরবর্তীতে ঢাকার কিছু নীতিভ্রষ্ট ক্রীড়াসংগঠক টাকার বিনিময়ে তাকে আওয়ামী লীগে যোগদান করার সুযোগ দেয়। সৈয়দ সেলিম নবীর (বর্তমানে ভারতে বসবাসকারী) কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা নিয়ে শেখ রাসেল ক্রীড়া সংসদে দিয়ে আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ পান। একটু আগেও সেলিম নবী ইন্ডিয়া থেকে আমাকে ফোন করে বলল, তার টাকাটা আজ পর্যন্ত শামসুল হক দেননি। তাকে বলা হয়েছিল পরিচালক করা হবে। কদিন আগে পরিচালক পদ ঘোষণা করা হয়েছে, সেখানে সেলিম নবীর নাম নেই। তিনি এমপি বা হুইপ যদি না হতেন তাহলে একবাক্যে বলতাম, তার মতো একজন বিশ্বপ্রতারক; বাংলাদেশে না বিশ্বে দুষ্কর। বলেন আওয়ামী লীগের প্রবীণ এ নেতা।
এরপর তিনি আবাহনীর সাইনবোর্ড ধারণ করলেন। আবাহনীর প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটা দুর্বলতা আছে, যেহেতু সংগঠনটি তার প্রিয়ভাই শেখ কামালের হাতেগড়া। শামসুল হক চৌধুরী চেয়েছিলেন আবাহনীকে হাতিয়ার করে রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠা পেতে। শেষপর্যন্ত তাই হলো। এই আবাহনীকে তিনি পুরোপুরি কাজে লাগান, ষোল আনা উশুল করে নিলেন।
দিদারুল আলম চৌধুরী বলেন, আমার শ্রদ্ধেয় নেত্রী, আমার বড়বোনকে অনুরোধ করবো যে অনাদর্শিক যারা আছে, তাদের ছাঁটাই করতে হবে। বঙ্গবন্ধুর যে আদর্শিক সন্তান, সে পেটে পাথর বেধে উপোস থাকবে, কিন্তু চুরি করতে যাবে না।
প্রসঙ্গত, আবাহনী লিমিটেডের ব্যাংক হিসাবের তিন সিগনেটরির একজন দিদারুল আলম। তাকে বাদ দিয়ে সংগঠনের অর্থ নয়ছয় হলে আবেদন করে দিদারুল আলম ব্যাংক হিসাবটি বন্ধ করে দেন। এরপর দিদারুল আলম নিজেই হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর ছেলে নাজমুল হক চৌধুরী শারুনকে ফোন করে তার বাবার সঙ্গে জমি নিয়ে চলা বিরোধটি মিটিয়ে ফেলতে অনুরোধ করেন এবং দেখা করার জন্য সময় চান। ফোনালাপের শুরুতে ব্যবহার ভালো করলেও শেষের দিকে আবাহনীর ব্যাংক হিসাব বন্ধ করার বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শারুন এবং একপর্যায়ে চড়-থাপ্পড়ের হুমকি এবং রাস্তাঘাটে নগ্ন করে পিটানোসহ অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করেন দিদারুল আলমকে। মূলত তার জের ধরেই শামসুল হক চৌধুরী প্রসঙ্গে মুখ খুললেন দিদারুল আলম চৌধুরী। ফাঁস করে দিলেন তাঁর জারিজুরি।
https://www.facebook.com/EkusheyPatrika/videos/532339144266485/?__xts__[0]=68.ARAep0wDNjGSvkQL__ZqiNnzQ5d2BPYsf7icxeUX9IKOnENpYiQfY7hTgWPWgUKO7XL_BhyKnCvQFpyHu-fvFEm0EfnmbZYXnb6DxHFmxOmoFqMG7XDL-yNv_Akb2IcxVtzQT96vovWfev8ko2207dKXZlGD8OX_c-hiQL-ejrdtoNMqxOZ4XSuj88MTaToy7O7mjF2GwoDhVtpwlnVlwyeZsJzDgTPomGQwAmmbbx5u5FFaeS4HaGGBf9bJtDOZv7UIRrdpu7JFNT_D9wMTqrJX4WrMZxOZVq1mMEXFaA3XrwrACmpUanbLxSITCd0BuF2r3qAhMxmLusN_BWSlNaMT0Be9gxk&__tn__=K-R
