চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এবারের মাধ্যমিক পরীক্ষায় পাসের হার বেড়েছে। একই সাথে বেড়েছে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও। বেড়েছে শতভাগ পাস করা বিদ্যালয়ের সংখ্যা। এবারের পাসের হার ৯০ দশমিক ৪৪ শতাংশ। ২০১৫ সালে পাসের হার ছিল ৮২ দশমিক ৭৭ শতাংশ। সে হিসেবে এ বছর পাসের হার বেড়েছে ৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে এবার জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজার ৬৬৬ জন শিক্ষার্থী। গতবার জিপিএ-৫ পেয়েছিল ৭ হাজার ১১৬ জন। এ বোর্ডে মেয়েদের তুলনায় এবারে ছেলেরা ভাল ফলাফল করেছে। চট্টগ্রামে ৯০ দশমিক ৯৭ শতাংশ ছেলে পাস করেছে। মেয়েদের পাশের হার ৮৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড সূত্রে জানা গেছে, এবার চট্টগ্রাম বোর্ডে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৭ হাজার ৬৬৬ জন শিক্ষার্থী। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা ছিল ৭ হাজার ১১৬ জন। সে হিসেবে এবার চট্টগ্রাম বোর্ডে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী বেড়েছে ৫৫০ জন। চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে ৮৮টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা শতভাগ পাশ করেছে। ২০১৫ সালে শতভাগ পাস করা বিদ্যালয় ছিল ৪০টি। এবার পাসের হার শূন্য রয়েছে এমন কোন বিদ্যালয় চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে নেই।
এদিকে এবারে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের অধীনে ১৬৯টি কেন্দ্রে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। মোট ৯৯৮টি বিদ্যালয়ের ১ লাখ ১৩ হাজার ২৮৭ জন পরীক্ষার্থী রেজিস্ট্রেশন করে। এর বিপরীতে পরীক্ষায় অংশ নেয় ১ লাখ ১৩ হাজার ৭০ জন শিক্ষার্থী। এর মধ্যে পাস করেছে ১ লাখ ২ হাজার ২৬১ জন। বিজ্ঞানে ২৩ হাজার ৬৪২, মানবিকে ২৫ হাজার ৭০০ ও ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৫২ হাজার ৯১৮ জন পাস করেছে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড জানায়, পরীক্ষায় অংশ নেওয়া ছাত্রদের মধ্যে ৪৭ হাজার ৪৩২ জন এবং ছাত্রীদের মধ্যে ৫৪ হাজার ৮২৮ জন ছাত্রী পাশ করেছে। এবারের পরীক্ষায় বিজ্ঞান বিভাগে গড় পাসের হার ৯৫ দশমিক ৯১ শতাংশ, মানবিক বিভাগে ৮৩ দশমিক ৮২ শতাংশ এবং ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে ৯১ দশমিক ৬২ শতাংশ।
চট্টগ্রামের মেয়েদের তুলনায় ছেলেদের ফলাফল ভাল হয়েছে। মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে ছেলে পাশ করেছে ৯০ দশমিক ৯৭ শতাংশ। মেয়ে পাশ করেছে ক্ষেত্রে ৮৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ।
চট্টগ্রাম মহানগরের বিদ্যালয়গুলো বাদ দিয়ে চট্টগ্রাম জেলা বিদ্যালয়গুলোতে পাসের হার ৯০ দশমিক ৩৭ শতাংশ। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা ছিল ৮২ দশমিক ৫৭ শতাংশ। মহানগরের বিদ্যালয়গুলোসহ চট্টগ্রাম জেলায় পাসের হার ৯২ দশমিক ২৮ শতাংশ। ২০১৫ সালে এ সংখ্যা ছিল ৮৫ দশমিক ২৭ শতাংশ।
এবারে তিনটি বিভাগের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগে ২৪ হাজার ৫৭১ জন, মানবিক বিভাগে ৩০ হাজার ৬৮৮ জন এবং ব্যবসায় শিক্ষায় ৫৭ হাজার ৭০০ জন পরীক্ষার্থী ছিল।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মোহাম্মদ মাহবুব হাসান বলেন, এবারের সার্বিক ফলাফল সন্তোষজনক। পাসের হার ও জিপিএ-৫ পাওয়া শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেড়েছে। গতবার মানবিক বিভাগে শিক্ষার্থীরা একটু খারাপ করলেও এবার ভাল করেছে। এবারে তিন পার্বত্য জেলায়ও পাসের হার বেড়েছে।
চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে শিক্ষাবোর্ডে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ ও পাশের হারের দিক থেকে সবচেয়ে ভাল ফলাফল করেছে কলেজিয়েট স্কুল। এ বিদ্যালয়ে ৪০২ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৭৯ জন। পাসের হারও শতভাগ। দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে চট্টগ্রাম সরকারি মুসলিম হাই স্কুল। ৪১৪ জন এ বিদ্যালয় থেকে এসএসসিতে অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৩৮জন। ডা.খাস্তগীর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে তৃতীয় স্থানে। ৩১৯ জন ছাত্রীর মধ্যে এ বিদ্যালয়ের ২৮০জন জিপিএ-৫ পেয়েছে। চতুর্থ স্থানে রয়েছে নাসিরাবাদ সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ের ৩৮৫ জন ছাত্র পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৬৪ জন। পাস করেছে ৩৪২জন শিক্ষার্থী। পঞ্চম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ মহিলা সমিতি উচ্চ বিদ্যালয়। এ বিদ্যালয়ের ৪১২ জন ছাত্রী পরীক্ষায় অংশ নিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫৬জন। এছাড়া চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের ৩২২জন শিক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২১৯জন। পাস করেছে ৩২১ জন শিক্ষার্থী। এছাড়া ফৌজদারহাট ক্যাডেট কলেজে ৫৬ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিয়ে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৫৫ জন। পাশের হার শতভাগ।
