বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

রাখাইনের পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে, বাংলাদেশে নতুন রোহিঙ্গা ঢলের আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | প্রকাশিতঃ ১৯ অগাস্ট ২০২৫ | ১০:৫৮ পূর্বাহ্ন

রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ
মিয়ানমারে আগামী ডিসেম্বরের জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাখাইন রাজ্যে জান্তা বাহিনীর ব্যাপক সামরিক অভিযানের ফলে আরাকান আর্মির সঙ্গে সংঘাত তীব্রতর হয়েছে। এর সঙ্গে ভয়াবহ খাদ্য সংকট যুক্ত হওয়ায় রাজ্যটি দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। বিশ্লেষকরা আশঙ্কা করছেন, যুদ্ধ ও দুর্ভিক্ষের এই জোড়া সংকটে বাংলাদেশে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের নতুন ঢল নামতে পারে।

মিয়ানমারের সামরিক জান্তা আগামী ২৮ ডিসেম্বর জাতীয় নির্বাচনের ঘোষণা দিয়ে এর আগে রাখাইনের якоতটা সম্ভব এলাকা পুনর্দখলের জন্য অভিযান জোরদার করেছে। কিন্তু বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) রাজ্যের ১৭টি টাউনশিপের মধ্যে ১৪টির নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে, যার ফলে সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী ও রক্তক্ষয়ী রূপ নিয়েছে। জান্তা বাহিনী রাজধানী সিত্তে এবং চীনের সহায়তায় নির্মিত গভীর সমুদ্রবন্দর সমৃদ্ধ কিয়াকফিউ টাউনশিপ ধরে রাখতে বিমান হামলা ও ভারী গোলাবর্ষণ চালিয়ে যাচ্ছে।

যুদ্ধের ভয়াবহতার পাশাপাশি রাখাইনে তীব্র হয়েছে খাদ্য সংকট। জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডব্লিউএফপি) জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় রাখাইনে ৫৭ শতাংশ পরিবার এখন ন্যূনতম খাদ্য জোগাড় করতে পারছে না। সামরিক অবরোধের কারণে উত্তরাঞ্চলে ত্রাণ সহায়তা কার্যত বন্ধ। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গ্রামের মানুষ খাদ্যের অভাবে বাঁশগাছের কোন্দা খেয়ে বেঁচে থাকার চেষ্টা করছে এবং হতাশা থেকে আত্মহত্যার মতো ঘটনাও ঘটছে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এই অসহনীয় পরিস্থিতি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে আবারও দেশত্যাগে বাধ্য করতে পারে। নির্বাচনের আগে জান্তার সামরিক অভিযান আরও তীব্র হলে অথবা খাদ্য সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে Rohingya অনুপ্রবেশের পুনরাবৃত্তি ঘটার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে।

এরই মধ্যে জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থা (ইউএনএইচসিআর) জানিয়েছে, গত ১৮ মাসে রাখাইনের সহিংস পরিস্থিতি থেকে বাঁচতে নতুন করে প্রায় দেড় লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, যাদের অধিকাংশই নারী ও শিশু। ২০১৭ সালের পর এটিই সবচেয়ে বড় অনুপ্রবেশের ঘটনা। আন্তর্জাতিক সহায়তা সংকুচিত হয়ে আসার এই সময়ে নতুন করে শরণার্থীর ঢল বাংলাদেশের জন্য পরিস্থিতি আরও সংকটপূর্ণ করে তুলতে পারে।