বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

ছাদে সৌরবিদ্যুৎ: উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনা কি বাস্তবায়ন সম্ভব?

৬ মাসে ৩০০০ মেগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ: সরকারের পরিকল্পনা ‘উচ্চাভিলাষী’ বলছে আইইইএফএ
একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ১৯ অগাস্ট ২০২৫ | ১১:০৬ পূর্বাহ্ন


জ্বালানি সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকার আগামী ছয় মাসের মধ্যে ৩ হাজার মেগাওয়াট নতুন ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুৎ স্থাপনের একটি ‘উচ্চাভিলাষী’ লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। তবে আন্তর্জাতিক গবেষণা সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিকস অ্যান্ড ফিন্যানশিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইইএফএ) বলছে, লক্ষ্যটি ইতিবাচক হলেও এর বাস্তবায়নে কারিগরি সক্ষমতা, অর্থায়ন এবং সময়সীমার মতো বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

আইইইএফএ-এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ১৭ বছরে দেশে মাত্র ২৪৫ মেগাওয়াট ছাদভিত্তিক সৌরবিদ্যুৎ স্থাপিত হয়েছে। সেই তুলনায় মাত্র ছয় মাসে ৩ হাজার মেগাওয়াট স্থাপনের জন্য ১২ গুণেরও বেশি দ্রুতগতিতে কাজ করতে হবে, যা প্রায় অসম্ভব।

প্রতিবেদনটির লেখক ও আইইইএফএ-এর প্রধান জ্বালানি বিশ্লেষক শফিকুল আলম বলেন, “সরকারি অফিস, হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পর্যাপ্ত অনুমোদিত বিদ্যুৎ লোড না থাকায় এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব নয়।” তিনি বলেন, “তহবিল বরাদ্দ, দরপত্র আহ্বান ও প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ডিসেম্বর ২০২৫-এর সময়সীমা বাড়ানো প্রয়োজন হবে। এছাড়া দেশে মাত্র ১৫-২০টি উচ্চমানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান থাকায় এত বড় কাজ স্বল্প সময়ে সম্পন্ন করা কঠিন।”

সরকারি প্রতিষ্ঠানে ক্যাপেক্স (সরকারের নিজস্ব অর্থায়ন) এবং হাসপাতাল ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ওপেক্স (বেসরকারি বিনিয়োগ) মডেলে এই প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। শফিকুল আলম বলেন, ক্যাপেক্স মডেলে দ্রুত বাস্তবায়ন সম্ভব হলেও রক্ষণাবেক্ষণের অভাব একটি বড় ঝুঁকি। অন্যদিকে, গ্রামীণ এলাকায় লোডশেডিংয়ের কারণে ওপেক্স মডেলে বিনিয়োগকারীরা আগ্রহী নাও হতে পারেন।

আইইইএফএ সফল বাস্তবায়নের জন্য প্রতিবেশী ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে, যেখানে ধারাবাহিক নীতির কারণে নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। প্রতিবেদনে দীর্ঘমেয়াদী রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি, টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (স্রেডা) মাধ্যমে বাস্তব সম্ভাবনা যাচাই, অংশীজনদের সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং একটি স্বাধীন মনিটরিং ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার ওপরও জোর দেওয়া হয়েছে।