
কনটেইনার পরিবহনে ৭ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হলেও বিশ্বের শীর্ষ ১০০ বন্দরের তালিকায় এক ধাপ পিছিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। আন্তর্জাতিক শিপিং বিশ্লেষক সংস্থা লয়েডস লিস্টের ২০২৫ সালের তালিকায় দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দরের অবস্থান ৬৮তম, যা আগের বছর ছিল ৬৭তম।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সর্বোচ্চ সংখ্যক কনটেইনার পরিবহন করেও অবকাঠামোগত ঘাটতি, প্রকল্প বাস্তবায়নে ধীরগতি, আধুনিক প্রযুক্তির অভাব এবং দক্ষ জনবলের সংকটের কারণে চট্টগ্রাম বন্দর অন্যদের তুলনায় পিছিয়ে পড়েছে।
লন্ডনভিত্তিক বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো শিপিং বিষয়ক সংবাদমাধ্যম লয়েডস লিস্ট ‘ওয়ান হানড্রেড পোর্টস ২০২৫’ শীর্ষক বিশেষ প্রকাশনায় সম্প্রতি এই তালিকা প্রকাশ করে।
তালিকা অনুযায়ী, ২০২৪ সালে চট্টগ্রাম বন্দর ৩২ লাখ ৭৫ হাজার একক (TEUs) কনটেইনার পরিবহন করেছে, যা ২০২৩ সালে ছিল ৩০ লাখ ৫০ হাজার। সেই হিসাবে এক বছরে কনটেইনার পরিবহন ৭ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়েছে।
কনটেইনার পরিবহন বাড়ার পরেও বৈশ্বিক তালিকায় পিছিয়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বন্দর ব্যবহারকারীরা বলছেন, চট্টগ্রাম বন্দর উন্নতি করলেও বিশ্বের অন্যান্য বন্দরগুলো আরও দ্রুতগতিতে এগিয়েছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক একজন চেয়ারম্যান বলেন, “এবারে আমরা সর্বোচ্চ সংখ্যক কনটেইনার হ্যান্ডেল করেছি; কিন্তু বিশ্বের অন্য বন্দরগুলো আমাদের চেয়ে বেশি করেছে। পর্যাপ্ত অবকাঠামো তৈরি না হওয়া, বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতা, আধুনিক প্রযুক্তির স্বল্পতা ও দক্ষ জনবলের সংকটই এর মূল কারণ। এজন্য আমরা পিছিয়ে গেছি।”
একই মত দিয়ে বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের ভাইস চেয়ারম্যান শফিকুল আলম জুয়েলও মনে করেন, এই চারটি বিষয়ে নজর না দিলে ভবিষ্যতে প্রতিযোগিতায় আরও পিছিয়ে পড়তে পারে দেশের প্রধান এই সমুদ্রবন্দর।
লয়েডস লিস্টের তালিকা অনুযায়ী, ৫ কোটি ১৫ লাখ কনটেইনার পরিবহন করে এবারও শীর্ষে রয়েছে চীনের সাংহাই বন্দর। দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে সিঙ্গাপুর বন্দর এবং চীনের নিংবো বন্দর।
তবে এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, “লয়েডস লিস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে ক্রমতালিকা বা বৈশ্বিক অবস্থানের তথ্য এখনো আমাদের জানায়নি। এটি পেলে আমরা প্রতিক্রিয়া জানাবো।”
লয়েডস লিস্টের তথ্য অনুযায়ী, গত এক দশকে চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে ভালো অবস্থান ছিল ২০১৯ সালে, সেবার বন্দরটি তালিকার ৫৮তম স্থানে উঠে এসেছিল।