
দুর্বল পাঁচ ইসলামী ব্যাংক একীভূত করার উদ্যোগে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পর এবার সম্মতি দিয়েছে ইউনিয়ন ব্যাংক। তবে এক্সিম ব্যাংক নিজেরাই ঘুরে দাঁড়াতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে সময় চেয়েছে।
আমানতকারীদের অর্থ ফেরত ও আর্থিক খাতে স্থিতিশীলতা ফেরানোর লক্ষ্যে এই ব্যাংকগুলোকে একীভূত করতে চায় বাংলাদেশ ব্যাংক। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে বুধবার ইউনিয়ন ও এক্সিম ব্যাংকের সঙ্গে আলাদা বৈঠক করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা।
বৈঠক দুটিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ভার্চুয়ালি যুক্ত ছিলেন। এ সময় চার ডেপুটি গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, ইউনিয়ন ব্যাংকের বিতরণ করা প্রায় ২৮ হাজার কোটি টাকা ঋণের ৯৮ শতাংশই খেলাপি। আর এক্সিম ব্যাংকের ৫২ হাজার কোটি টাকা ঋণের প্রায় অর্ধেক খেলাপি হয়ে পড়েছে।
বৈঠকে ইউনিয়ন ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একীভূতকরণ প্রস্তাবে সম্মতি জানায়। তবে এক্সিম ব্যাংক সময় চাওয়ার পর গভর্নর তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, “আপনারা আমাদের সহায়তা করেন।”
জবাবে এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন বলেন, “স্যার, আপনি দোয়া করেন। আমরা ঘুরে দাঁড়াতে পারব।”
বৈঠক শেষে ইউনিয়ন ব্যাংকের চেয়ারম্যান এম ফরিদ উদ্দীন সাংবাদিকদের বলেন, “আমানতকারীরা প্রতিনিয়ত টাকা নিতে এসে পাচ্ছেন না। এ জন্য যত দ্রুত এসব ব্যাংক নিয়ে সিদ্ধান্ত হবে, তত ভালো। এক্ষেত্রে একীভূত, পুনর্গঠন বা অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।”
তিনি জানান, ইউনিয়ন ব্যাংক থেকে একটি শিল্প গ্রুপ ২৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে, যাদের নামে ঋণ নেওয়া হয়েছে তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এই ঋণের বিপরীতে ১৭ হাজার কোটি টাকার বন্ধকি সম্পত্তি দেখানো হলেও এর প্রকৃত মূল্য এক হাজার কোটি টাকারও কম বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে, এক্সিম ব্যাংকের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম স্বপন জানিয়েছেন, তারা ব্যাংকের আর্থিক সূচক উন্নয়নে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কী সিদ্ধান্ত দেয়, তার জন্য অপেক্ষা করছেন তারা।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে এক্সিম ব্যাংকের দেওয়া ঘুরে দাঁড়ানোর পরিকল্পনাটি আরও সুনির্দিষ্ট করে জমা দিতে বলা হয়েছে। আমানতকারীর অর্থ ফেরত, খেলাপি ঋণ আদায়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে নেওয়া সাড়ে ৮ হাজার কোটি টাকা ধার পরিশোধ এবং মূলধনের ঘাটতি পূরণের বিষয়ে বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, আজ বৃহস্পতিবার গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক এবং সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের সঙ্গেও এ বিষয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।