বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

অক্টোবরেই ২০০ আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে চায় বিএনপি

‘গ্রিন সিগন্যালে’ বিভ্রান্তি, আনুষ্ঠানিক ঘোষণার পরামর্শ স্থায়ী কমিটির
একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ২২ অক্টোবর ২০২৫ | ২:৩৬ অপরাহ্ন

বিএনপি লোগো
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে চলতি অক্টোবর মাসের মধ্যেই প্রায় ২০০ আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে বিএনপি। তবে একক প্রার্থীকে গোপনে ‘গ্রিন সিগন্যাল’ দেওয়ার প্রক্রিয়ায় নির্বাচনী এলাকায় বিভ্রান্তি সৃষ্টি হতে পারে—এমন আশঙ্কায় আনুষ্ঠানিকভাবে নাম ঘোষণার পরামর্শ দিয়েছেন দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্যরা।

গত সোমবার রাতে গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠকে এসব বিষয়ে আলোচনা হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।

সূত্রমতে, বৈঠকে নেতারা মনে করেন, জামায়াতে ইসলামীর মতো প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলো যেখানে ইতোমধ্যে প্রার্থী ঘোষণা করে মাঠে নেমে পড়েছে, সেখানে বিএনপির প্রার্থী চূড়ান্তকরণে বিলম্ব হলে নির্বাচনের মাঠে তারা পিছিয়ে পড়তে পারে। তাই দ্রুত প্রার্থী ঘোষণার ওপর জোর দেওয়া হয়।

প্রায় ১৫০টি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করতে তেমন জটিলতা না থাকলেও শতাধিক আসনে একাধিক শক্তিশালী প্রার্থী ও অভ্যন্তরীণ গ্রুপিং থাকায় একক প্রার্থী বাছাইয়ে কিছুটা বেগ পেতে হচ্ছে দলটিকে। এসব আসনের প্রার্থীদের ঢাকায় ডেকে এনে দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি অনুগত থাকার জন্য ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কঠোর বার্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এরপর থেকেই আসনভিত্তিক একক প্রার্থীকে গোপনে গ্রিন সিগন্যাল দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়।

কিন্তু স্থায়ী কমিটির বৈঠকে কয়েকজন সদস্য বলেন, এভাবে গোপনে একজনকে চূড়ান্ত করার বার্তা দেওয়ায় এবং বিষয়টি খোলাসা না করায় নির্বাচনী এলাকায় বিভ্রান্তি ও অসন্তোষ তৈরির ঝুঁকি থাকছে। এর চেয়ে তফসিলের পর পার্লামেন্টারি বোর্ডের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী ঘোষণা করাই শ্রেয়।

ভোটগ্রহণ কর্মকর্তা ও সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে উদ্বেগ

বৈঠকে নির্বাচন কমিশনের ‘ভোটগ্রহণ কর্মকর্তার প্যানেল’ তৈরির উদ্যোগ নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন বিএনপি নেতারা। তারা আশঙ্কা প্রকাশ করেন, এই তালিকায় জামায়াত-শিবিরপন্থীদের প্রাধান্য দেওয়া হতে পারে, যা নির্বাচনের নিরপেক্ষতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করবে। এ বিষয়ে আজ বুধবার প্রধান নির্বাচন কমিশনারের (সিইসি) সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দলের উদ্বেগ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়।

এছাড়াও, অন্তর্বর্তী সরকারের কয়েকজন উপদেষ্টার সাম্প্রতিক বক্তব্য ও কর্মকাণ্ড এবং প্রশাসনে রদবদল নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। নেতারা মনে করেন, এসব পদক্ষেপ সরকারের নিরপেক্ষতাকে ক্ষুণ্ন করছে এবং প্রশাসনের ‘জামায়াতীকরণ’ হচ্ছে, যা সুষ্ঠু নির্বাচনের পথে বাধা সৃষ্টি করতে পারে।

এসব উদ্বেগের কথা জানাতেই মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক করেন বলে জানা গেছে।