বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

৬ বছরেও চালু হয়নি বান্দরবান হাসপাতালের নতুন ভবন, মেঝেতে ঠাঁই রোগীদের

আইসিইউ-সিসিইউ না থাকায় ছুটতে হয় চট্টগ্রামে, ভোগান্তি চরমে
একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ২৬ অক্টোবর ২০২৫ | ৭:৪৭ পূর্বাহ্ন


নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার দীর্ঘ ছয় বছর পেরিয়ে গেলেও প্রশাসনিক জটিলতায় চালু করা যাচ্ছে না বান্দরবান ২৫০ শয্যা হাসপাতালের নতুন ভবন। ফলে জেলার লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র ভরসাস্থল ১০০ শয্যার পুরোনো হাসপাতালেই চাপ বাড়ছে, শয্যা সংকটে রোগীদের থাকতে হচ্ছে মেঝেতে।

আধুনিক সুযোগ-সুবিধা সম্বলিত নতুন ভবনটি অব্যবহৃত পড়ে থাকায় উন্নত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জেলাবাসী। পুরোনো ১০০ শয্যার হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) বা হৃদরোগীদের জন্য করোনারি কেয়ার ইউনিট (সিসিইউ) না থাকায় সামান্য জটিল রোগী হলেই পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, যা নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য চরম ভোগান্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২০০৫ সালে ১০০ শয্যা নিয়ে যাত্রা শুরু করা বান্দরবান সদর হাসপাতালটি জেলার প্রধান চিকিৎসা কেন্দ্র। সময়ের সঙ্গে রোগীর সংখ্যা বাড়লেও বাড়েনি শয্যা বা সেবার পরিধি। দুর্গম পাহাড়ি এলাকা থেকে আসা রোগীদের প্রায়ই হাসপাতালের মেঝেতে বিছানা পেতে চিকিৎসা নিতে হয়।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোয়াংছড়ির বাসিন্দা আয়েশা বেগম বলেন, “শয্যা খালি না থাকায় মেঝেতেই থাকতে হচ্ছে। আমার মতো অনেক রোগীকেই মেঝেতে রাখা হয়। নতুন ভবনটি চালু হলে অন্তত শয্যার অভাব কিছুটা হলেও দূর হবে।”

সদরের বাসিন্দা ফরিদা বেগম বলেন, “পুরাতন ভবনে আইসিইউ-সিসিইউ না থাকায় আমাদের ছোটখাটো সমস্যাতেও চট্টগ্রামে যেতে হয়। অথচ নতুন ভবনে সেই সুবিধা রয়েছে। সেটি চালু করলে সেবার মান বাড়বে।”

থানছি থেকে আসা উক্য সিং মারমা জানান, স্ত্রীর মাথা ব্যথার চিকিৎসার জন্য আসলেও আধুনিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় তাকেও চট্টগ্রামে রেফার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বান্দরবান জেলার সিভিল সার্জন ডা. শাহীন হোসেন চৌধুরী বলেন, “নতুন ভবনের অবকাঠামোগত সব কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এখন প্রশাসনিক অনুমোদন ও জনবল নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হলেই খুব দ্রুত আধুনিক ২৫০ শয্যার হাসপাতালটি চালু করা সম্ভব হবে।” তিনি আশা প্রকাশ করেন, নতুন হাসপাতাল চালু হলে জেলার চিকিৎসাসেবার মান অনেক উন্নত হবে।