আনোয়ারা প্রতিনিধি : আনোয়ারা পারকি সমুদ্র সৈকতের ঝাউবাগান বিলীন হতে বসেছে সাগরের ঢেউয়ে। সাগরের ঢেউয়ে গাছের গোড়া থেকে বালি সরে ঝাউগাছগুলো উপচে পড়েছে। অন্যদিকে স্থানীয় কিছু লোক উপচে পড়া গাছগুলো কেটে নিয়ে উজাড় করছে ঝাউবাগান। ফলে সৌন্দর্য হারাতে বসেছে পারকি সমুদ্র সৈকত।
সোমবার (১৬ সেপ্টেম্বর) স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত কয়েক বছরে বিলীন হয়ে গেছে প্রায় ছয় শতাধিক গাছ। গোড়া থেকে বালু সরে যাওয়ায় এসব ঝাউগাছ উপড়ে পড়ে যাচ্ছে। পারকি উপকূল এলাকায় বন বিভাগের লাগানো ঝাউগাছের বাগানটি এভাবেই হুমকির মুখে পড়েছে।
জানা গেছে, উপকূল বাঁধ রক্ষা করার জন্য বনবিভাগ ১৯৯৩-৯৪ এবং ২০০২ সালে পর্যায়ক্রমে প্রায় ৮০ হেক্টর জায়গায় ঝাউগাছ লাগায় পারকি ও আশপাশের এলাকায়। গাছগুলো বড় হতে থাকলে স্থানীয়দের কাছে এটি ঝাউবাগান বলে পরিচিতি পেতে শুরু করে। বর্তমানে দেশব্যাপী বেশ পরিচিতি লাভ করেছে পর্যটন স্পট পারকি সমুদ্র সৈকত। নদী, সাগর মোহনা, বন্দরে পণ্যবাহী জাহাজের আসা-যাওয়ার মনোরম দৃশ্য, ৮ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতে সারি সারি ঝাউগাছ, বেলাভূমিতে হাজারো লাল কাঁকড়ার বিচরণ সবমিলিয়ে কক্সবাজার ও কুয়াকাটার পর দেশের সবচেয়ে সম্ভাবনাময় সমুদ্র সৈকত পারকি। কিন্তুু সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে ওই বাগানের আয়তন ছোট হয়ে আসছে। সর্বশেষ গত ২০ দিনে সাগরের ঢেউয়ের কারণে ঝাউগাছের গোড়া থেকে বালু সরে বাগানের ঝাউগাছগুলো উপড়ে পড়েছে।
স্থানীয় বারশত ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও চট্টগ্রাম বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য এমএ কাইয়ূম শাহ্ বলেন, পারকি সৈকতে দীর্ঘদিন ধরে একটি জাহাজ আটকে আছে ও সাগর থেকে বালু উত্তোলনের কারণে সৈকতে পলি মাটি জমে আছে। তাই সাগরের ঢেউ আঘাত হানছে ঝাউগাছগুলোতে। আমি বিষয়টি নিয়ে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় কথা বলেছি। এ বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ, না হলে দেশের সম্ভাবনাময় সমুদ্র সৈকতটি নষ্ট হয়ে যাবে।
এ প্রসঙ্গে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, পারকি সমুদ্র সৈকতের সৌন্দর্য্য ও উপকূল বাঁধরক্ষায় বনবিভাগ গাছগুলো লাগিয়েছিল। সমুদ্র পৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ায় জোয়ারে প্রতিনিয়ত বিলীন হচ্ছে ঝাউগাছ। এ বিষয়ে বনবিভাগের সাথে যোগাযোগ করা হবে। যদি কারো বিরুদ্ধে গাছ কেটে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায় তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।