শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২

চকরিয়ায় চিংড়িজোনে প্রবাসী খুন: ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা, ‘পুরুষশূন্য’ গ্রাম

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি | প্রকাশিতঃ ২৯ অক্টোবর ২০২৫ | ১১:২৪ অপরাহ্ন


কক্সবাজারের চকরিয়ার চিংড়িজোনে দুই সন্ত্রাসী গ্রুপের গোলাগুলিতে সিরাজুল ইসলাম নামে এক প্রবাসী নিহতের ঘটনায় ১৮ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় হত্যা মামলা হয়েছে। নিহতের বাবা ওমর আলী বাদি হয়ে মঙ্গলবার রাতে চকরিয়া থানায় মামলাটি দায়ের করেন। মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ৮-১০ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গত ২৫ অক্টোবর বিকাল আড়াইটার দিকে চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নের সওদাগরঘোনা চারাবটতলী এলাকায় জাহাঙ্গীর আলম ও নেজাম উদ্দিন গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলির সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান সিরাজুল ইসলাম।

চকরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঘটনার দিন রাতেই অভিযান চালিয়ে নুর মোহাম্মদ মানিক ওরফে মানিক্কা (৪৫) ও কুতুবউদ্দিন (২৬) নামে এজাহারভুক্ত দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এসময় মানিক্কার কাছ থেকে একটি দেশে তৈরি বন্দুক উদ্ধার করা হয়।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছেন, সিরাজুল ইসলাম হত্যার ঘটনার জের ধরে এলাকায় ব্যাপক লুটপাট চালাচ্ছে প্রতিপক্ষের লোকজন। গত দু’দিনে একাধিক বাড়ি ভাঙচুর করে গরু-ছাগল ও আসবাবপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ অবস্থায় ভয় ও আতঙ্কে নারী-পুরুষেরা এলাকা ছাড়ছেন। সওদাগরঘোনা এলাকা এক প্রকার পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে।

এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, চকরিয়া উপজেলার চিরিঙ্গা ইউনিয়নের চিংড়িজোন খ্যাত চরণদ্বীপ ও রামপুর মৌজায় জাহাঙ্গীর আলম ও নেজাম উদ্দিন গ্রুপের অত্যাচারে স্থানীয়রা অতিষ্ঠ। এই দুই গ্রুপকে ঘের মালিক ও চাষিদের নিয়মিত চাঁদা দিতে হয়। চিংড়িঘের দখল ও চাঁদা তোলা নিয়েই মূলত এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে।

এলাকাবাসীর অভিযোগ, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বৈধ এবং অবৈধ চিংড়িঘের দখল-বেদখল নিয়ে একাধিক সশস্ত্র গ্রুপের উত্থান ঘটে। দীর্ঘদিন ধরে গ্রুপগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব চলে আসছিল এবং ইতোমধ্যে চিংড়িঘের দখল নিয়ে ৫-৬টি হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। আধিপত্য বিস্তার নিয়ে গ্রুপগুলো অবৈধ অস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে, আর তাদের বেপরোয়া আচরণে সাধারণ মানুষের প্রাণ যাচ্ছে।

ওসি মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান চলছে।