চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনের প্রচারণার শেষ মুহূর্তে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহ তৈরি করেছে সুফি মতাদর্শে বিশ্বাসী ‘অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য’ প্যানেল। প্রার্থীরা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ের প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সম্প্রতি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনার ও বুদ্ধিজীবী চত্বর এলাকায় প্যানেলটির পক্ষে প্রচারণা চালাতে দেখা যায়। এ সময় অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য মনোনীত পূর্ণাঙ্গ প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী মুহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম এবং এজিএস পদপ্রার্থী শহীদুল ইসলাম শাহেদসহ অন্যান্য সম্পাদকীয় পদের প্রার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। তারা ভোট চেয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাছে যাচ্ছেন এবং তাদের পক্ষ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলে দাবি করেছেন।
ভিপি পদপ্রার্থী মুহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিত্ব করতে আমরা চাকসু নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আমরা চাই সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করুক। শেষ মুহূর্তে আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের মাঝে প্রচারণা চালিয়ে বেশ সাড়া পাচ্ছি।”
প্যানেলের নির্বাহী সদস্য পদপ্রার্থী মুহাম্মদ সাব্বির রহমান জানান, তারা সবার কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন এবং শিক্ষার্থীদের মূল্যবান ভোটে নির্বাচিত হওয়ার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী।
এর আগে গত ৯ অক্টোবর অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য প্যানেল সহিংসতাবিরোধী মূল্যবোধকে ধারণ করে তাদের ১৬ দফা নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করে।
ইশতেহারের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে, চাকসু নির্বাচনকে নিয়মিত করতে একাডেমিক ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত করা, শিক্ষার্থী পরিচয়ে বৈষম্যমূলক আচরণ পরিহার, ক্যাম্পাসে দলীয় আধিপত্য ও দখলদারিত্ব রোধ, শিক্ষক মূল্যায়নের মাধ্যমে মানসম্মত শিক্ষা ও ইনসাফপূর্ণ ফলাফল নিশ্চিত করা, শাটলের শিডিউল বৃদ্ধি, নতুন হল নির্মাণের মাধ্যমে প্রত্যেক শিক্ষার্থীর আবাসন নিশ্চিত করা, খাবারের মানে রেটিং সিস্টেম চালু, নারীদের জন্য সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, বিনামূল্যে সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজপত্র সংশোধন, চাকসু ভবনে কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন, গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে নিরাপত্তা বুথ ও নিরবচ্ছিন্ন ওয়াই-ফাই সেবা প্রদান, মেধাভিত্তিক বৃত্তির সংখ্যা ও অর্থ বৃদ্ধি, আর্থিকভাবে অসচ্ছল ও বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের সহায়তা, অ্যাম্বুলেন্স সেবা বৃদ্ধি ও দ্রুতকরণ, কেন্দ্রীয় খেলার মাঠসহ হলগুলোর মাঠ সংস্কার এবং মানসিক স্বাস্থ্য সুরক্ষায় নিয়মিত কাউন্সেলিংয়ের ব্যবস্থা করা।
নির্বাচিত হলে মুহাম্মদ ফরহাদুল ইসলাম এবং শহীদুল ইসলাম শাহেদ এর প্যানেল মাসিক প্রতিবেদন প্রকাশের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
গত ২১ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবী চত্বরে ‘অহিংস শিক্ষার্থী ঐক্য’ তাদের পূর্ণাঙ্গ প্যানেল ঘোষণা করেছিল। প্যানেলের সম্পাদকীয় পদে লড়ছেন খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে খায়রুল আমীন হৃদয়, সহ-খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক পদে মুহাম্মদ ফয়সাল হোসেন, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে মুহাম্মদ এহছানুল হক, সহ-সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে মুহাম্মদ ইমরান হোসেন, দপ্তর সম্পাদক পদে এস এম আলী হোসাইন জিসান, সহ-দপ্তর সম্পাদক পদে মুহাম্মদ ইব্রাহীম রুবেল, সমাজসেবা ও পরিবেশ সম্পাদক পদে জাকিয়া সুলতানা, গবেষণা ও উদ্ভাবন বিষয়ক সম্পাদক পদে মুরিদুল হাসান মুরাদ, বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক পদে সৈয়দা সুরাইয়া হোসাইন, ছাত্রীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে জান্নাতুন নাঈম খুকি, সহ-ছাত্রীকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক পদে মিফতাহুল জান্নাত, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক পদে মুহাম্মদ তারেক হাসান, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক পদে মুহাম্মদ জহির উদ্দীন, ক্যারিয়ার ডেভেলাপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক পদে জুলহাসনাঈন সায়েম, যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক পদে ইসমাইল ফাহিম, সহ- যোগাযোগ ও আবাসন বিষয়ক সম্পাদক পদে মুহাম্মদ আল-মামুন, আইন ও মানবাধিকার বিষয়ক সম্পাদক পদে মুহাম্মদ ইমাম হোসাইন এবং পাঠাগার ও ক্যাফেটেরিয়া বিষয়ক সম্পাদক পদে মোহাইমিনুল কবির।
এছাড়া, নির্বাহী সদস্য পদে দৌলতুল ইসলাম সাকলাইন, তাউছিফুর রহমান, হানিফ ইসলাম, মুহাম্মদ সাইদুল ইসলাম এবং মুহাম্মদ সাব্বির রহমান নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন।
