বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

হুইপ সামশুল ও ক্রীড়াসংগঠক দিদারুলের ‘দখলমুক্ত’ হল সরকারি সেই জায়গা

| প্রকাশিতঃ ৭ জানুয়ারী ২০২১ | ৬:০৬ অপরাহ্ন


চট্টগ্রাম : সরকার দলীয় হুইপ শামসুল হক চৌধুরী ও ক্রীড়া সংগঠক দিদারুল আলম চৌধুরীসহ চারজনের লিজ নেওয়া সেই সরকারি জমিটি সিলগালা করে দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জায়গাটির মালিকানা নিয়ে লিজগ্রহীতা এবং স্থানীয় একটি পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টির প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার সরেজমিন তদন্তে গিয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জেলা প্রশাসন সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুজন রায়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে সহকারী কমিশনার সুজন রায় একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘এটা সরকারি সম্পত্তি। হুইপ শামসুল হক চৌধুরীসহ চার ব্যক্তি ১৯৯৭ সালে এক বছরের জন্য এক দশমিক ৫৫ শতক জায়গাটি ইজারা নিলেও তারা চুক্তি নবায়ন করেননি। অপরদিকে ১ নম্বর খাস খতিয়ানভুক্ত সরকারি জায়গা কারো দাবি করার সুযোগ নেই। তাই দু’পক্ষকেই বের করে দিয়ে সেই জায়গাটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে। জায়গাটি পাহারা দেওয়ার জন্য পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’

এক প্রশ্নের উত্তরে জেলা প্রশাসনের এ কর্মকর্তা বলেন,’স্কুল প্রতিষ্ঠার নামে একসনা লিজ নিয়ে গ্রহীতারা ২২ বছর যাবত কেন ইজারা চুক্তি নবায়ন করলেন না, কেন স্কুল প্রতিষ্ঠা করলেন না বিষয়টি জেলা প্রশাসক স্যারের সাথে আলোচনা করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।’

দিদারুল আলম চৌধুরী বলেন, ‘জেলা প্রশাসন আমাদের ইজারা নেওয়া জায়গাটি সিলগালা করে দিয়েছে। সেখানে এখন কেউ ঢুকতে পারবে না বলে সাইনবোর্ড লাগিয়ে দিয়েছে। তবে আমরা জেলা প্রশাসক সাহেবের সাথে আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করব। সরকার যদি জায়গাটা আমাদের দখলে না দেয়, তাহলে মাটি ভরাটের জন্য আমাদের খরচ হওয়া ৪২ লাখ টাকা ফেরত দিতে বলব।’

এ ব্যাপারে হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর বক্তব্য জানার জন্য ফোন করলেও তিনি ধরেননি। প্রতিবেদনটি অনলাইন প্রকাশের কিছুক্ষণ পর অন্য এক মাধ্যমে তিনি তার অবস্থান পরিস্কার করেন।

হুইপ সামশুল হক চৌধুরী বলেন, উক্ত জায়গায় আমাদের কোনও কিছু নেই। এটি দিদারুল আলম চৌধুরী নিজে দখল করে ব্যাবহার করছেন, নিজেই মাটি ভরাট করেছেন। স্থানীয়দের সাথে উনার সমস্যা ও মারামারি হয়েছে। আমাদেরকে কেন এখানে টানা হচ্ছে বুঝলাম না। আমরা কি কোন সালিশদরবার বা থানায় গিয়েছি? গিয়েছেন দিদার সাহেব।-বলেন সামশুল হক চৌধুরী।

জানা গেছে, ১৯৯৭ সালে চট্টগ্রামের শাহ আমানত সেতু সংলগ্ন এলাকায় একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য বাকলিয়া মৌজায় ১ দশমিক ৫৫ একর জায়গাটি একসনা লিজ নেন বর্তমান হুইপ শামসুল হক চৌধুরী ও ক্রীড়া সংগঠক দিদারুল আলম চৌধুরীসহ চারজন। একসনা লিজ নিলেও গত ২৩ বছরেও তারা চুক্তির শর্ত বাস্তবায়ন করেননি।

সম্প্রতি, জায়গাটিতে টিনের ঘেরা দিয়ে মাটি ভরাট করেন তারা। গত ৪ জানুয়ারি সংস্কার করতে গেলে স্থানীয় আরেকটি পক্ষ জায়গাটির মালিকানা দাবি করে বসে। এ নিয়ে গত সোমবার সকালে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। লিজ গ্রহীতার প্রতিপক্ষের দাবি, আরএস এবং পিএস রেকর্ডমূলে জায়গাটি তাদের মৌরশি সম্পত্তি।

মালিকানা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ সৃষ্টি হওয়ায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে জায়গাটিতে অবস্থান নেয় পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে কাগজপত্র যাচাই শেষে জায়গাটি সিলগালা করে দেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের সদর সাকেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) সুজন রায়।