তৌহিদুল আলম : প্রতিটা মুহুর্তকে ভিন্ন খাতে নিতে তৎপর থাকে একটি বিশেষ শ্রেণী। এই শ্রেণীটি হচ্ছে মতলববাজ, লোভী, টাউট ও ধূর্ত। এরা ভালো মানুষের মুখোশে সমাজের উচ্চ শ্রেণীতে থাকে বা যেতে মরিয়া। তারা মুসলমান, হিন্দু ও নানান ধর্মের অনুসারী। তারা ধর্মের জন্য নয়, ধর্ম তাদের জন্য।
আবার প্রতি মূহুর্তে নিজেকে দানব রুপে হাজির করার জন্য একটি মূর্খ শ্রেণী রয়েছে সমাজে। যারা ধর্ম সম্পর্কে জানে না বা জানার জন্য চেষ্টায় থাকে না, আমি তাদের মূর্খ বলছি। এই মূর্খ শ্রেণীও মুসলমান, হিন্দু ও নানান ধর্মের অনুসারী।উপরোক্ত দুই শ্রেণীর মাঝখানের যে শ্রেণীটি বিদ্যমান তারা সর্বাবস্থায় অসহায়। তারা সামর্থহীন ক্ষতহৃদয় নিয়ে হাহাকার করছে।
সম্প্রতি দেশে ঘটে যাওয়া এবং চলমান অপ্রীতিকর, অস্বস্তিকর, হিংস্র ঘটনাসমূহকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হিসেবে আখ্যা দেয়া হচ্ছে, তা কারও জন্য মঙ্গলজনক নয়। মুসলমানের প্রকৃত কাজ হচ্ছে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দেয়া, তাদের মন্দিরে হামলা বা ভাঙচুর করা নয়। আমার কাছে মনে হচ্ছে, সাম্প্রতিক ঘটনাসমূহ এই মতলববাজ, লোভী, টাউট ও ধূর্ত শ্রেণীটির পাতানো ফাঁদ। যার সহজ বাস্তবায়ন হচ্ছে বা করছে মূর্খ শ্রেণীর লোকদের মাধ্যমে।
মতলববাজ, লোভী, টাউট ও ধূর্ত শ্রেণীর লোকগুলো প্রায় সময় সফল হয়ে যায়। তারা ভালো করেই জানে কোন সময়ে কোন ধরনের উস্কানি দিলে আবেগ নির্ভর ধর্মান্ধ জাতিকে দানব রুপে হাজির করা যাবে। চলমান ঘটনা প্রবাহ তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ।
যেভাবে উস্কানি দেয়া হচ্ছে, হিংসা ছড়ানো হচ্ছে তা বিপদজনক সকল সম্প্রদায়ের জন্য। তারা এখন চলমান অপ্রীতিকর, অস্বস্তিকর, হিংস্র ঘটনাসমূহকে মুসলমান ও হিন্দুদের মধ্যে একটি ধর্মযুদ্ধ হিসেবে রুপ দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে মনে হচ্ছে।
আগুন ধর্ম চিনে না। বন্ধ হোক আমার দেশের সম্প্রীতিতে আগুন। ঘটে যাওয়া এবং চলমান প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত হোক। অবশ্য পূর্বের সকল ঘটনা এবং চলমান সহিংসতার ঘটনায় প্রেক্ষিতে চলমান তদন্তের প্রতি আস্থা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ নেতারা। নানা ঘটনা প্রবাহে মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সকল সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষের আস্থার সংকট লক্ষণীয়।
দেশের আইনশৃংখলার সামগ্রিক দায়িত্বে যারা রয়েছেন তাদের উচিত, সকল সম্প্রদায়ের সাধারণ মানুষের আস্থার সংকট নিরসনে দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে ঘটে যাওয়া এবং চলমান সহিংসতায় জড়িতদের প্রমাণসহ গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। ধর্ম নিয়ে খেলা- অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।
লেখক : সাংবাদিক।