চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলায় দুই ছাত্রলীগ কর্মীকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের এক মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়েছে পুলিশ। মামলার এজাহারে বাংলাদেশ ছাত্রলীগকে ‘নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রসংগঠন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
রোববার (১৮ মে) সকালে তাদের আদালতে পাঠানো হয়। এর আগে, শুক্রবার (১৬ মে) গভীর রাতে (আনুমানিক রাত ১টা ২০ মিনিটে) অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয় বলে কর্ণফুলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শরীফ নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—কর্ণফুলী উপজেলার জুলধা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী নজির উল্লাহ বাড়ির আব্দুল মালেকের ছেলে রাহাত মাহমুদ ফারহান (২০) এবং শিকলবাহা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের হাজী ওমরা মিয়া চৌধুরী বাড়ির মৃত জহুর আহমদের ছেলে মো. রিকন ওরফে কফিল (৩০)।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, গত ১৬ মে (শুক্রবার) রাত সাড়ে ১০টার দিকে গোপন সূত্রে খবর পাওয়া যায় যে, জুলধা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডে জুলধা ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্কের পাশে ইউসুফ সাহেবের বালুর মাঠে একটি মিছিল বের করা হয়েছে। এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ‘নিষিদ্ধ সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতা-কর্মীরা’ সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও নাশকতার উদ্দেশ্যে লাঠিসোঁটা হাতে স্লোগান দিয়ে ওই মিছিল থেকে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
ওসি মোহাম্মদ শরীফের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল রাত ১১টা ২০ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে প্রায় ৩০-৩১ জন মিছিলকারী দৌড়ে পালিয়ে যায় বলে মামলায় বলা হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ৯টি লাঠি উদ্ধার করে।
পরে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও বিশ্লেষণ করে এবং এলাকায় অভিযান চালিয়ে ফারহান ও কফিলকে আটক করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে তারা পলাতক সহযোগীদের পরিচয় দিয়েছে এবং জানিয়েছে যে তারা সবাই ‘নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রসংগঠনের’ সক্রিয় সদস্য।
পুলিশ আরও জানায়, ওই রাতের মিছিলের নেতৃত্বে ছিলেন মো. মনির উদ্দিন নাঈম (২৮) এবং তাদের উদ্দেশ্য ছিল জুলধা বিদ্যুৎকেন্দ্রে হামলা চালানো।
ঘটনার পর কর্ণফুলী থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জুয়েল মজুমদার বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের ৬(২)/৮/৯/১০ ধারায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় ফারহান ও কফিলসহ ১৬ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১৪-১৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন—মো. ফয়সাল (১৮), মো. মাসুদ (২০), মো. হানিফ (২২), তৌসিফ (১৮), আকাশ (১৮), জিসান (১৮), জাহিদুল (১৯), নাবিল (২৩), মামুন (৩০), ইমরান (২৫), হাসান (২৬), মিজান (১৯), মনির (২৬) ও সরোয়ার (২৫)। এদের অধিকাংশের বাড়ি জুলধা ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সুলতান বাপের বাড়ি এলাকায় বলে এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে।