শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

’৯৪ সালে মাহমুদুল ইসলামের কারণেই মেয়র হয়েছিলেন মহিউদ্দিন চৌধুরী!

প্রকাশিতঃ ২৫ জানুয়ারী ২০২১ | ২:৩০ অপরাহ্ন


চট্টগ্রাম : ১৯৯৪ সালের ৩০ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রথম নির্বাচনে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর কারণেই এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। খোদ এ তথ্য জানিয়েছেন ওই নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সমর্থনে অংশ নেওয়া সাবেক মেয়র ও সংসদ সদস্য মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।

সোমবার (২৫ জানুয়ারি) অত্যাসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে নিজের অভিজ্ঞতা জানাতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি করেন মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী।

তিনি বলেন, ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন চৌধুরী থেকে মাত্র ১৪ হাজার বেশি ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর আমি পেয়েছিলেন ২৭ হাজার ভোট। সেই নির্বাচনে আমি যদি অংশ না নিতাম, তাহলে ভোটের ফলাফল অন্যরকম হতে পারতো। সেক্ষেত্রে মেয়র হতেন মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন। কারণ আমার ভোটগুলোর বেশিরভাগই পেতেন নাছির।

তিনি বলেন, প্রয়াত মহিউদ্দিন চৌধুরী ছিলেন আমার বাল্যবন্ধু। একসাথে আমরা ছাত্ররাজনীতি করেছি। আন্দোলন-সংগ্রাম করেছি। আমাদের সাথে বন্ধুত্ব ছাড়াও চমৎকার বোঝাপড়া ছিল। তাঁর এবং আমার নির্বাচনী মেনিফোস্টোও ছিল অনেকটা একই। এসব কারণে সেই নির্বাচনে আমার অংশগ্রহণ ও প্রাপ্ত ভোট তাঁর নির্বাচনে জয়লাভে ভূমিকা রেখেছিল।

‘নিজে জিততে নয়, বন্ধু মহিউদ্দিন চৌধুরীকে জেতাতেই তাহলে নির্বাচন করেছেন, অর্থাৎ আপনি ছিলেন তাঁর ডামি প্রার্থী’- বিষয়টা কি এমন? জবাবে মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী স্মিত হেসে বলেন, ঠিক সেরকম নয়, তবে এটুকু বলতে পারি, তাঁর জয়ে আমার ভূমিকা ছিল, এটা মহিউদ্দিন চৌধুরীও জানেন।

প্রসঙ্গত, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী জাতীয় পার্টির বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য। তিনি ১৯৭৪ সালের বাঁশখালী ডিগ্রী কলেজের অবৈতনিক শিক্ষক ছিলেন। ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৭৯ পর্যন্ত তিনি চট্টগ্রাম আদালতের প্রথম শ্রেণীর বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এর আগে তিনি ১৯৬৮ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত বৃহত্তর চট্টগ্রাম ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।

১৯৭৯ সালের বিএনপিতে যোগ দিয়ে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের মনোনয়ন নিয়ে চট্টগ্রাম-১৫ আসনে থেকে প্রথম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর পর তিনি ১৯৮৬ সালের তৃতীয় ও ১৯৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

তিনি ১৯৮৮-১৯৮৯ সাল পর্যন্ত তৎকালীন চট্টগ্রাম পৌর কর্পোরেশনের প্রথমে প্রশাসক ও চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রথম মেয়র হিসেবে তিনি ১৯৮৯-১৯৯০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।

১৯৯৪ সাল থেকে ‘৯৬ পর্যন্ত বিএনপিবিরোধী সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদের তিনি ছিলেন শীর্ষস্থানীয় নেতা। এসময় তার পাঁচলাইশস্থ বাসভবন ছিল সংগ্রাম পরিষদের প্রধান কার্যালয়। প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা এম এ মান্নান, এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, ইসহাক মিয়া, ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনসহ চট্টগ্রামের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের নিত্য যাতায়াত ছিল মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর বাসভবনে।।

বলাবাহুল্য, ‘৯৬ সাল পর্যন্ত চট্টগ্রাম বন্দর সিবিএসহ চট্টগ্রামের প্রায়সব প্রতিষ্ঠানের সিবিএ রাজনীতি ছিল মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরীর নিয়ন্ত্রণে।