
আসন্ন ফেব্রুয়ারির জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এক মাসের মধ্যেই প্রায় ২০০ আসনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি। একই সঙ্গে মিত্রদের জন্য অন্তত ৫০টি আসন ছেড়ে দেওয়ার বিষয়েও আলোচনা চলছে।
তফসিল ঘোষণার আগেই একক প্রার্থী ঘোষণার মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ কোন্দল এড়িয়ে ভোটের মাঠে গতি আনাই এই কৌশলের মূল লক্ষ্য বলে জানিয়েছেন দলটির নীতিনির্ধারকরা।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান গত ১৫ সেপ্টেম্বর স্থায়ী কমিটির বৈঠকে প্রার্থী মনোনয়নের বিষয়ে তার ধারণা তুলে ধরেন। এরপর থেকেই বিভিন্ন জরিপ ও সম্ভাব্য প্রার্থীদের জীবনবৃত্তান্ত পর্যালোচনার কাজ চলছে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী বলেন, “এলাকাভিত্তিক জরিপ চলছে, প্রার্থীদের সিভি পর্যালোচনা করা হচ্ছে এবং সাক্ষাৎকার নেওয়া হচ্ছে। মনোনয়নের ক্ষেত্রে ন্যায্যতা বজায় রাখাই আমাদের লক্ষ্য।”
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, মনোনয়ন দেওয়ার ক্ষেত্রে ত্যাগ, সততা, জনপ্রিয়তা এবং সাম্প্রতিক আন্দোলনে ভূমিকার মতো বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দেওয়া হবে। দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছেন এমন অভিযুক্তদের বাদ দেওয়া হবে। প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জাবিয়ুল্লাহ।
মনোনয়ন ঘোষণার পর সম্ভাব্য অভ্যন্তরীণ কোন্দল সামলাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন তারেক রহমান। তিনি বিভিন্ন ইউনিটের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে মনোনয়ন নিয়ে কোনো ধরনের কোন্দল সহ্য করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
মিত্রদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি
বিএনপি তাদের জোটের মিত্রদের সঙ্গেও আসন বণ্টন নিয়ে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে। প্রাথমিকভাবে প্রায় ৫০টি আসন মিত্রদের জন্য ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে বেশ কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে তাদের নিজ নিজ আসনে কাজ করার জন্য বিএনপির পক্ষ থেকে ‘সবুজ সংকেত’ দেওয়া হয়েছে।
এই নেতাদের মধ্যে রয়েছেন জেএসডির এএসএম আবদুর রব (লক্ষ্মীপুর-৪), নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না (বগুড়া-২), গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি (ঢাকা-১২), গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর (পটুয়াখালী-৩) ও রাশেদ খান (ঝিনাইদহ-২), জাতীয় দলের সৈয়দ এহসানুল হুদা (কিশোরগঞ্জ-৫), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) আন্দালিব রহমান পার্থ (ঢাকা-১৭) এবং জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের (এনডিএম) ববি হাজ্জাজ (ঢাকা-১৩)।
এ বিষয়ে আন্দালিব রহমান পার্থ জানান, বেশ কয়েকটি আসন নিয়ে বিএনপির সঙ্গে তার দলের আলোচনা চলছে।
এদিকে, বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, যথাযথ প্রক্রিয়া শেষে যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থীদের নাম যথাসময়ে ঘোষণা করা হবে।