শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ৮ম সমাবর্তন ৯ মে

প্রকাশিতঃ ২৮ জানুয়ারী ২০২০ | ৫:৩২ অপরাহ্ন


চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে অবস্থিত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের (এইউডব্লিউ) ৮ম সমাবর্তন আগামী ৯ মে অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার এইউডব্লিউ’র রেজিস্টার ড. ডেভ ডোল্যান্ড স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

এতে উল্লেখ করা হয়, ৮ম সমাবর্তনে সমাবর্তন বক্তা থাকবেন নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জন সেক্সটন। এবার সুইজারল্যান্ডের একজন শিক্ষাবিদ, ভারতীয় একজন অর্থনীতিবীদ ও পাকিস্তানী একজন অভিনেত্রী ও গায়িকাকে প্রদান করা হবে সম্মানসূচক ডিগ্রি।

৮ম সমাবর্তনের সমাবর্তন বক্তা নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির ১৫ তম প্রেসিডেন্ট জন সেক্সটন; যার নেতৃত্বে চীনের সাংহাই ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের আবুধাবীতে নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির (এন.ওয়াই.ইউ) ক্যাম্পাস স্থাপিত হয়েছে।

জন সেক্সটন আইন বিষয়ের একজন অধ্যাপক। তিনি এর আগে নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির (এন.ওয়াই.ইউ) স্কুল অব ল্ এর ডিন হিসেবে দায়িত্বরত ছিলেন। জন সেক্সটন আমেরিকার শীর্ষস্থানীয় সিভিল আইন প্রক্রিয়া বিষয়ক অনেক বইয়ের প্রণেতা। এরমধ্যে “বেস্বল এজ এ রোড টু গড: সিং বিয়ন্ড দ্য গেম” এবং স্ট্যান্ডিং ফর রিজন : দ্য ইউনিভার্সিটি ইন এ ডগম্যাটিক এজ” অন্যতম। সমাবর্তনে জন সেক্সটনকে সম্মান সূচক ডক্টর অব হিউম্যান লেটার ডিগ্রি প্রদান করা হবে।

৮ম সমাবর্তনে এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিও) তিনজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে সম্মানসূচক ডিগ্রি প্রদান করবে। তাদের মধ্যে সুইজারল্যান্ডের শিক্ষাবিদ ইউনিভার্সিটি অব বাসেল এর প্রেসিডেন্ট আন্ড্রেয়া শেন্কার – উইকি এবং ভারতের কলকাতায় জন্মগ্রহণকারী ইন্টারন্যাশনাল মনিটরী ফান্ডের প্রথম নারী প্রধান অর্থনীতিবিদ (তিনি হার্ভাড ইউনিভার্সিটির ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ এন্ড ইকোনোমিক্স এর জন জাওয়ানস্ট্রার অধ্যাপক পদ থেকে ছুটিতে নিযুক্ত) গীতা গোপী নাথকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লজ্ ডিগ্রি প্রদান করা হবে। এবং হলিওডের সিনেমা “এ রিলাকট্যান্ট ফান্ডামেন্টালিস্ট” এর প্রয়োজক বিখ্যাত পাকিস্তানী অভিনেত্রী ও গায়িকা মিশা শফিকে সম্মানসূচক ডক্টর অব আর্টস ডিগ্রী প্রদান করা হবে।

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিও) এ অধ্যয়নরত শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১২টি দেশের ১২৩ জন শিক্ষার্থী এবারের ৮ম সমাবর্তনে গ্র্যাজুয়েট হিসেবে ডিগ্রী লাভ করবে। সমাবর্তনে সভাপতিত্ব করবেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের চ্যান্সেলর চেরী ব্লেয়ার এবং বোর্ড অব ট্রাস্টিজ এর চেয়ারম্যান শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি। সমাবর্তন কার্যক্রম পরিচালনা করবেন এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এইউডব্লিও) এর ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর নির্মলা রাও।

বাংলাদেশের মহান জাতীয় সংসদের মাধ্যমে চার্টার প্রাপ্ত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এ.ইউ ডব্লিউ) ২০০৮ সালে চট্টগ্রামে এশিয়ান যাত্রা শুরু করে। বিশ্ববিদ্যালয়টি এ অঞ্চলের প্রথম আঞ্চলিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেটি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নারীদের শিক্ষা ও নেতৃত্ব উন্নয়ন ও বিকাশে অবদান রাখছে, যার শেকড়ে রয়েছে এশিয়ার জনগণের আকাঙ্খা ও প্রত্যাশা।

বাংলাদেশের মহান জাতীয় সংসদের মাধ্যমে চার্টার প্রাপ্ত এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এ.ইউ ডব্লিউ)। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি এ অঞ্চল তথা এশিয়ার নারীদের নারী নেতৃত্ব, উদ্যোক্তা এবং সমাজ পরিবর্তনের অবদানের জন্য নারী নেটওয়ার্ক তৈরি করার জন্য অসাধারণ ভাবে সহযোগিতা করে আসছে। পাশাপাশি এটি এমন সব নারীদের জন্য কাজ করছে, যাদের মধ্যে রয়েছে অসাধারণ শিক্ষার সম্ভাবনা, সাহসী মনোভাব এবং সকল প্রকার অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে গিয়ে সমাজ বির্নিমাণে নিজেদের তৈরি করার অপার আগ্রহ।

এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনে (এ.ইউ ডব্লিউ) বর্তমানে বিশ্বের ১৯ টি দেশের ৯০০ জনের অধিক নারী শিক্ষার্থী অধ্যয়ন করছে। এর মধ্যে রয়েছে আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভূটান, কম্বোডিয়া, চীন, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, লাওস পিডিআর, মায়ানমার, নেপাল, পাকিস্তান, ফিলিস্তিন, সেনেগাল, মালয়েশিয়া, শ্রীলংকা, সিরিয়া, পূর্ব তিমুর, ভিয়েতনাম এবং ইয়েমেন। এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের ছাত্রীদের মধ্যে বেশীরভাগই হলো তাদের পরিবারের প্রথম সন্তান যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত পড়াশোনা করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮৫ শতাংশ ছাত্রী এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের সাথে সম্পৃক্ত বিশ্বের বিভিন্ন সহযোগী ব্যাক্তি ও সংগঠনের প্রদত্ত স্কলারশীপের আওতায় শতভাগ বৃত্তি বা প্রায় শতভাগ বৃত্তি নিয়ে পড়ালেখা করে আসছে। এই পর্যন্ত প্রায় ৮০০ জনের অধিক শিক্ষার্থী এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেন (এ.ইউ ডব্লিউ) থেকে গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রি অর্জন করেছে। এবং বেশিরভাগ ছাত্রী তাদের নিজ নিজ দেশে সরকারী ও বেসরকারী ক্ষেত্রে সুনামের সাথে কাজ করে আসছে। ২৫ শতাংশ ছাত্রী উচ্চতর শিক্ষার জন্য সুযোগ গ্রহণ করেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ডিগ্রিপ্রাপ্ত ছাত্রীরা বা ইতিপূর্বে অধ্যয়নরত ছাত্রীরা বিশ্বের বড় বড় নামী দামি বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি এবং অধ্যয়নের সুযোগ পেয়েছে।