
শরীফুল রুকন : এই অনুসন্ধান করতে গিয়ে আমরা আরেক সত্য উদ্ঘাটন করতে পেরেছি। সেটা হলো, সব চিকিৎসকই ওষুধ কোম্পানির গিফট নেন না। তারা সততা, নীতি-নৈতিকতা মেনে চলেন। এ রকম দুইজন চিকিৎসকের কথা এবার শুনি।
‘ওষুধ কোম্পানিগুলো নিজেদের ওষুধ রোগীর প্রেসক্রিপশনে লেখানোর জন্য চিকিৎসকদের কী কী দেয়’ প্রশ্ন করলে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহকারী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ আশরাফুল হক একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘টাকার পাশাপাশি ফ্ল্যাটের সুবিধা দিতে পারে। ফ্ল্যাটের ডেকোরেশন করে দিতে পারে। গাড়ির সুবিধা দিতে পারে। তাদের ক্যাপাসিটির মধ্যে যতটুকু সম্ভব, সব করে। ডাক্তার সমাজের একটি অংশকে এভাবে বড় অনুদান দিতে হলে স্বাভাবিকভাবে ওষুধের দাম বেড়ে যাবে। এসব বিষয় নিয়ে আমরা নিজেরাও বিরক্ত। কারণ আমিও ভুক্তভোগী। বাবা-মায়ের জন্য আমাকে ওষুধ কিনতে হয়। বোঝাটা তো আমার ঘাড়েও এসে পড়ছে।’
ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে কখনো টাকার অফার পেয়েছেন কি না প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ওষুধ কোম্পানির লোকজন যোগাযোগ করে, খুশি করার চেষ্টা করে। টাকা-পয়সা তাদেরকেই দেয়, যাদেরকে তারা অ্যাপ্রোচ করার মতো মনে করে। আমার কাছে কখনো সরাসরি টাকার অফার নিয়ে কেউ আসেনি। আমি একটু স্ট্রেট কথাবার্তা বলি। এ কারণে হয়তো ওরা চিন্তা করেছে, আমার কাছে আসলে আমি দুই কথা শুনিয়ে দিতে পারি। এজন্য হয়তো আমার কাছে তারা আসেননি।’
চট্টগ্রামের আনোয়ারায় শেভরণ ক্লিনিকাল ল্যাবরেটরিতে রোগী দেখেন ডা. মো. ওবায়দুল হক। তিনি একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘একটা ওষুধ কোম্পানি ডাক্তারের কাছে ইনফরমেশন নিয়ে আসে। ইনফরমেশন অনুযায়ী ডাক্তার ওষুধগুলো লেখেন। ওষুধ কোম্পানিগুলো ডাক্তারদের অফার করে যে, আমাদের কাছ থেকে আপনি প্রতি মাসে একটা অ্যামাউন্ট নেবেন এবং আমাদের ওষুধ নির্দিষ্ট পরিমাণে লিখবেন। তখন ওই ডাক্তার টাকাটা নিয়ে ওষুধগুলো লেখেন। এরকম ডাক্তার আছেন; সবাই না। তবে বেশিরভাগ ডাক্তার এই রকমই হয়।’
ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে কখনো টাকার অফার পেয়েছেন কি না প্রশ্নে ডা. ওবায়দুল হক বলেন, ‘আমার কাছে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা আসেন। আমাকে কোন কোম্পানি কত টাকা অফার করেছে, সেটা আমি বলতে পারবো না। তবে এটা বলতে পারবো, টাকার অফার পেলেও আমি কোনো ওষুধ কোম্পানির কাছ থেকে কখনো টাকা নিইনি। আমি যে টাকা নিই না, সেটা বুকে হাত দিয়ে বলতে পারবো। আমার সততা আমি মেইনটেইন করি।’
মূল প্রতিবেদন : ডাক্তারদের পটাতে চেক বাড়ি গাড়ি সবই