বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

‘দিল কাবা প্রতিষ্ঠাই হজের লক্ষ্য, জুলুমের অর্থে ইবাদত কবুল হয় না’

একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ১ জুন ২০২৫ | ৮:২৬ অপরাহ্ন


অন্তরের পরিশুদ্ধতা অর্জনের মাধ্যমে সৃষ্টির কল্যাণ সাধনই ইসলামে হজ ও কোরবানির মূল মাহাত্ম্য বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট মাইজভাণ্ডারী লেখক ও গবেষক মোহাম্মদ শাহেদ আলী চৌধুরী মাইজভাণ্ডারী। তিনি বলেছেন, স্রষ্টার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন এবং মুমিনের অন্তরকে পবিত্র করার জন্য এই দুটি ইবাদত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবলম্বন।

শুক্রবার (৩০ মে) সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম নগরীতে ‘আশেকানে হক ভাণ্ডারী শোকর এ মওলা মনজিল’-এর ব্যবস্থাপনায় আয়োজিত মাসিক সভা, ‘মাইজভাণ্ডারী দর্শন’ শীর্ষক আলোচনা, মিলাদ ও জিকিরে সেমা মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জনাব শাহেদ আলী চৌধুরী বলেন, “মুমিন ব্যক্তি হজ পালনের মাধ্যমে নিজের অন্তরকে খোদার পবিত্র নিদর্শন কাবার প্রতি উপস্থাপন করেন। হজের সময় সর্বোত্তম বিনয়ে অন্তরের আত্মসমর্পণের মাধ্যমে ‘দিল’ পরিশুদ্ধতা লাভ করে। সেই পবিত্র অন্তর বা ‘দিল’-ই হয়ে ওঠে খোদার অবস্থানক্ষেত্র, যা ‘দিল কাবা’ নামে পরিচিত।”

তিনি আরও বলেন, পবিত্র অন্তরের অধিকারী ব্যক্তি সর্বদা সৃষ্টির কল্যাণে নিবেদিত থাকেন। এ প্রসঙ্গেই মাইজভাণ্ডারী দর্শনে ‘বিশ্বঅলি’র উদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, “দুস্থ মানুষের সেবা হজে আকবর (শ্রেষ্ঠ হজ)।”

কোরবানির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে পবিত্র কোরআনের সূরা হজের ৩৭ নম্বর আয়াত – “কোরবানির গোশত বা রক্ত আল্লাহর কাছে পৌঁছায় না, আল্লাহর কাছে পৌঁছায় শুধু তোমাদের নিষ্ঠাপূর্ণ তাকওয়া” – উল্লেখ করে শাহেদ আলী চৌধুরী বলেন, স্রষ্টার প্রতি মুমিনের পবিত্র অন্তরের পরিপূর্ণ আত্মসমর্পণ ও পশুত্ব প্রবৃত্তিকে বিসর্জন দেওয়াই হলো প্রকৃত কোরবানি।

তিনি সতর্ক করে বলেন, “মানুষের ওপর জুলুম করে বা তাদের হক নষ্ট করে অর্জিত সম্পদ দিয়ে হজ কিংবা কোরবানি আদায় করলে তার মূল লক্ষ্য কখনোই অর্জিত হয় না।”

আলোচনায় তিনি কোরআন, হাদিস এবং মাইজভাণ্ডারী তরিকতের আলোকে হজ ও কোরবানির বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানের আধ্যাত্মিক তাৎপর্য বিশ্লেষণ করেন।

‘আশেকানে হক ভাণ্ডারী শোকর এ মওলা মনজিল’-এর সভাপতি মোহাম্মদ আজমের সভাপতিত্বে এবং সংগঠনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস এম নেওয়াজ শাহরিয়ার আসিফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ এহসান উল্লাহ।

এ সময় ‘আশেকানে হক ভাণ্ডারী শোকর এ মওলা মনজিল’ এবং মাইজভাণ্ডারী আদর্শবাহী ছাত্র ও যুব সংগঠন ‘জ্যোতি ফোরাম’-এর বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। মিলাদ ও মোনাজাতের পর সংগঠনের সদস্য শিল্পী গোলাম মওলা রনির পরিবেশনায় জিকিরে সেমা মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।