
শেষ ওভারের চরম নাটকীয়তায় পাকিস্তানকে ৮ রানে হারিয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখেই টি-টোয়েন্টি সিরিজ নিজেদের করে নিল বাংলাদেশ। লো-স্কোরিং এই থ্রিলারে বোলারদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এবং জাকের আলির দায়িত্বশীল ফিফটিতে ভর করে এই ঐতিহাসিক জয় পেয়েছে টাইগাররা। এই জয়ের মাধ্যমে বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো পাকিস্তানের বিপক্ষে একাধিক ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ জয়ের ইতিহাস গড়ল।
মিরপুরে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশ সবকটি উইকেট হারিয়ে ১৩৩ রানের মামুলি সংগ্রহ পায়। জবাবে, ফাহিম আশরাফের দুর্দান্ত ফিফটির পরেও পাকিস্তান ১৯.২ ওভারে ১২৫ রানে অলআউট হয়ে যায়।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে পাকিস্তানের প্রয়োজন ছিল ১৩ রান, হাতে মাত্র এক উইকেট। বোলার মুস্তাফিজুর রহমান। প্রথম বলেই দানিয়েল বাউন্ডারি হাঁকালে ম্যাচ পাকিস্তানের দিকে ঝুঁকে পড়ে। কিন্তু পরের বলেই ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে দানিয়েল সরাসরি মিডউইকেটে শামীম হোসেনের হাতে ধরা পড়লে উল্লাসে ফেটে পড়ে পুরো স্টেডিয়াম।
এর আগে ১৩৪ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে বাংলাদেশি বোলারদের তোপের মুখে পড়ে পাকিস্তান। ইনিংসের পঞ্চম ওভারেই মাত্র ১৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। তানজিম হাসান সাকিব একাই তুলে নেন দুই উইকেট। শরিফুল ইসলামও শিকার করেন দুটি উইকেট, যার মধ্যে রয়েছে অভিজ্ঞ ফখর জামানের উইকেটটিও।
দলীয় ফিফটির আগে ৭ উইকেট হারানোর পর পাকিস্তানকে অবিশ্বাস্যভাবে ম্যাচে ফেরান ফাহিম আশরাফ ও আব্বাস আফ্রিদি। অষ্টম উইকেটে তারা ৪১ রানের জুটি গড়েন। তবে আব্বাস (১৯) ফিরে গেলেও একাই লড়াই চালিয়ে যান ফাহিম। মাত্র ৩২ বলে ৫১ রানের এক ঝড়ো ইনিংস খেলে তিনি বাংলাদেশকে প্রায় ভয় পাইয়ে দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯তম ওভারে তিনি আউট হতেই বাংলাদেশের জয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।
এর আগে বাংলাদেশের ইনিংসের চিত্রও ছিল প্রায় একই রকম। মাত্র ২৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ধুঁকছিল দল। অধিনায়ক লিটন দাস, নাঈম শেখ, পারভেজ ইমন ও তাওহিদ হৃদয় দ্রুত ফিরে যান। এরপর দলের হাল ধরেন শেখ মেহেদি ও জাকের আলি। তাদের ৫৩ রানের জুটিতে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। মেহেদি ২৫ বলে ৩৩ রানের কার্যকর ইনিংস খেলেন। অন্য প্রান্তে জাকের আলি একাই লড়াই করে যান। ৪৮ বলে ৫৫ রানের এক অনবদ্য ইনিংস খেলে তিনি দলকে ১৩৩ রানের লড়াকু পুঁজি এনে দেন, যা শেষ পর্যন্ত জয়ের জন্য যথেষ্ট প্রমাণিত হয়।