ঘুষ গ্রহণের দায়ে আদালতের রায়ে দণ্ডিত চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আজিমেল কদর তার আগের কর্মস্থলে পুনর্বহাল হওয়ায় স্থানীয় শিক্ষক সমাজে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি ফটিকছড়ি উপজেলা শিক্ষা কার্যালয়ে যোগ দেন। দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত একজন কর্মকর্তার একই পদে ফিরে আসাকে কেন্দ্র করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চলছে ব্যাপক সমালোচনা।
২০১৯ সালে ফটিকছড়ির বেড়াজালী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৎকালীন সহকারী শিক্ষক তাসলিমা আক্তারের বদলির জন্য ঘুষ নেওয়ার সময় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) হাতে হাতেনাতে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আজিমেল কদর।
পরবর্তীতে ২০২৩ সালের ১৫ জুন চট্টগ্রামের একটি আদালত তাকে দুটি ধারায় মোট আড়াই বছরের কারাদণ্ড ও জরিমানা করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দণ্ডপ্রাপ্ত আজিমেল কদর আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করেন, যা গৃহীত হয়। পরবর্তীতে দুদকও ওই মামলায় আর আপিল না করার সিদ্ধান্ত নেয়। সেই আইনি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবেই তিনি বিধি অনুযায়ী তার শেষ কর্মস্থল ফটিকছড়িতে যোগদান করেছেন বলে জানা গেছে।
আজিমেল কদরের যোগদানের খবরে ফটিকছড়ির প্রাথমিক শিক্ষক সমাজে চরম অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। শিক্ষক নেতারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করে অবিলম্বে তাকে প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। অন্যথায় কঠোর আন্দোলনের হুমকিও দিয়েছেন তারা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমাজ নেত্রী রহিমা বেগম ফেসবুকে লিখেছেন, “ঘুষের টাকা নিয়ে হাতেনাতে ধরা খেয়ে অপমানিত হলেন, আবার প্রায় ৭ বছর পর চেয়ারে বসে আবার অপমানিত হবেন। উনি অন্যত্র বদলি হয়ে যাওয়াটাই হবে উত্তম।”
মো. শাহজাহান নামে আরেক শিক্ষক লিখেছেন, “শিক্ষকের অভিযোগে দুদকের হাতে তিনি গ্রেপ্তার হলেন, সাজাও হলো। কিন্তু আবার কিভাবে তিনি এই কর্মস্থলে যোগ দিলেন? এটি শিক্ষক সমাজ মানতে পারছে না। তাকে প্রত্যাহার না করলে কঠোর কর্মসূচি দেব।”
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আজিমেল কদর বলেন, “আলোচনা-সমালোচনা থাকতেই পারে। আমি আদালতের প্রতি সম্মান রেখে যোগদান করেছি। শিক্ষক সমাজকে আইন-আদালত জানতে ও বুঝতে হবে। পরে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে যা হবার তাই হবে।”