বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

নতুন পে-স্কেলের চাপ মেটাবে বর্ধিত রাজস্বই: পে কমিশনকে অর্থ বিভাগ

জানুয়ারি থেকে কার্যকর হতে পারে নতুন বেতন কাঠামো, সংশোধিত বাজেটে বরাদ্দের পরিকল্পনা
একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ২৫ অক্টোবর ২০২৫ | ৮:২৮ পূর্বাহ্ন


সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে যে অতিরিক্ত অর্থের প্রয়োজন হবে, তা বর্ধিত রাজস্ব আহরণের মাধ্যমেই মেটানো সম্ভব বলে মনে করছে অর্থ বিভাগ। জাতীয় পে-কমিশনকে দেওয়া এক মতামতে অর্থ বিভাগ জানিয়েছে, নতুন বেতন কাঠামোর ফলে সরকারি ব্যয় বাড়লেও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আয়কর প্রদান এবং সরকারি আবাসন থেকে ভাড়া আদায় বাড়ার কারণে সরকারের রাজস্ব আয়ও বৃদ্ধি পাবে।

অর্থ বিভাগ মনে করে, ২০১৫ সালের পর গত এক দশকে সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতা বাড়ানো হয়নি। মূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বর্তমান বেতন কাঠামো পুনর্বিন্যাস করা অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

পে-কমিশন সূত্রে জানা গেছে, রাজনৈতিক পটপরিবর্তন ও অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে গঠিত হওয়ায় পে-কমিশন অর্থের সংস্থান নিয়ে কিছুটা উদ্বিগ্ন ছিল এবং এ বিষয়ে অর্থ বিভাগের মতামত চেয়েছিল। সংশ্লিষ্টরা ধারণা করছেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় নতুন বেতন কাঠামোতে বেতন প্রায় দ্বিগুণ বা শতভাগ পর্যন্ত বাড়তে পারে।

অর্থ সংস্থানের পথ

অর্থ বিভাগ দুটি প্রধান উৎস থেকে অতিরিক্ত রাজস্ব আসার আশা করছে। প্রথমত, নতুন কাঠামোতে সর্বনিম্ন বেতন স্কেল ১৬ হাজার টাকার বেশি হলে নিম্নপদের অনেক কর্মচারী প্রথমবারের মতো আয়করের আওতায় আসবেন। দ্বিতীয়ত, বেতন বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সরকারি আবাসনে বসবাসকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বাড়ি ভাড়াও বাড়বে, যা সরকারের রাজস্ব আয় বৃদ্ধি করবে।

অর্থ বিভাগের মতামতে আরও বলা হয়েছে, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব, বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবর্তন এবং ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে সরকারি প্রশাসনে দক্ষ ও মেধাবী মানবসম্পদ আকৃষ্ট করতে একটি প্রতিযোগিতামূলক ও সময়োপযোগী বেতন কাঠামো অপরিহার্য।

বাস্তবায়ন ও সরকারের সদিচ্ছা

অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সম্প্রতি জানিয়েছেন, নতুন বেতন কাঠামো বর্তমান সরকারের মেয়াদের মধ্যেই চূড়ান্ত করে গেজেট প্রকাশ করা হবে এবং এর জন্য চলতি (২০২৫-২৬) অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটেই অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হবে। বাজেট সংশোধন প্রক্রিয়া ডিসেম্বরে শুরু হওয়ার কথা।

জাতীয় পে-কমিশনের সভাপতি ও সাবেক অর্থ সচিব জাকির আহমেদ খান বলেছেন, সীমিত সম্পদের মধ্য থেকেই তারা সর্বোচ্চ বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করার চেষ্টা করবেন।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, অনলাইনে প্রাপ্ত মতামত এবং বিভিন্ন কর্মচারী সমিতির সুপারিশ যাচাই-বাছাই শেষে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সরকারের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ চলছে।