
বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড’কে ক্যারিবীয় অঞ্চলে মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, যা ভেনেজুয়েলার সঙ্গে দেশটির বিদ্যমান উত্তেজনাকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো এই পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্রের ‘যুদ্ধ বাধানোর নীলনকশা’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ শুক্রবার ভূমধ্যসাগর থেকে ৯০টি বিমান বহনে সক্ষম রণতরীটি এবং এর সঙ্গে থাকা পাঁচটি ডেস্ট্রয়ারের (যুদ্ধজাহাজের) একটি স্ট্রাইক গ্রুপকে ক্যারিবীয় অঞ্চলে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মাদুরোর কড়া প্রতিক্রিয়া
যুক্তরাষ্ট্রের এই সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে প্রেসিডেন্ট মাদুরো রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলেন, “ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন একটি নতুন যুদ্ধের নীলনকশা করছে। তারা আর কখনও যুদ্ধে না জড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, এখন তারাই একটি নতুন অনন্ত যুদ্ধ বাধাচ্ছে।”
পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের এই সামরিক শক্তি প্রদর্শন এবং মাদুরোর কড়া বক্তব্য অঞ্চলটিতে উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে তুলবে।
যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক উপস্থিতি বৃদ্ধি
বিবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউএসএস জেরাল্ড আর ফোর্ড শুক্রবারই ভূমধ্যসাগর থেকে লাতিন আমেরিকার উদ্দেশে রওনা দিয়েছে। রণতরীটি কবে নাগাদ পৌঁছাবে তা নির্দিষ্টভাবে জানানো হয়নি।
এই রণতরী ও ডেস্ট্রয়ারগুলো মোতায়েন হলে ক্যারিবীয় অঞ্চলে মার্কিন নৌবহরের শক্তি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। সেখানে ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের আটটি যুদ্ধজাহাজ এবং প্রায় ছয় হাজার নাবিক ও মেরিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। নতুন এই সংযোজনে অতিরিক্ত আরও সাড়ে চার হাজার কর্মী যুক্ত হবেন।
পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পার্নেল জানিয়েছেন, এই অতিরিক্ত সামরিক শক্তি মোতায়েনের উদ্দেশ্য হলো মাদক পাচার রোধ এবং ট্রান্সন্যাশনাল ক্রিমিনাল অর্গানাইজেশন (টিসিও) ধ্বংস করার ক্ষেত্রে বিদ্যমান সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। রণতরীটি মার্কিন সাউদার্ন কমান্ড অঞ্চলে (মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকা এবং ক্যারিবীয় অঞ্চল) মোতায়েন করা হবে।
সাম্প্রতিক উত্তেজনা
সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে। মাদক পাচারকারীদের দমনের কথা বলে দেশটি সেখানে যুদ্ধজাহাজ, একটি পারমাণবিক সাবমেরিন ও এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান পাঠিয়েছে। বেশ কয়েকটি নৌকায় বিমান হামলাও চালানো হয়েছে। শুক্রবারের এক হামলায় ‘ত্রেন দে আরাগুয়া’ নামে একটি অপরাধী সংগঠনের ছয়জন ‘নারকো-সন্ত্রাসী’ নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ।
এর আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভেনেজুয়েলায় গোপন অভিযান চালানোর জন্য সিআইএ-কে অনুমোদন দিয়েছেন বলে জানান, যা উত্তেজনা আরও বাড়িয়ে দেয়।