
কক্সবাজারের টেকনাফের নাফ নদের মোহনা থেকে একটি নৌকাসহ চার বাংলাদেশি জেলেকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) ধরে নিয়ে গেছে। সোমবার সকালে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ সংলগ্ন নাফ নদের মোহনায় মাছ ধরার সময় এ ঘটনা ঘটে। অপহৃতরা হলেন- নুর কালাম, শফি আলম, আবুল কালাম ও নৌকার মালিক আব্দুর রহমান। তারা সবাই টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা।
টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ জালিয়াপাড়া নৌঘাটের সভাপতি আবদুল গণি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, “আব্দুর রহমান তার নিজের নৌকায় চার মাঝিমাল্লাকে নিয়ে নাফ নদে মাছ শিকারে যান। এ সময় আরাকান আর্মির সদস্যরা তাদের ধরে নিয়ে যায়। দীর্ঘ ২২ দিন মাছ শিকার বন্ধ খোলার একদিনের মাথায় এ ঘটনায় স্থানীয় জেলেরা আতঙ্কিত।”
এ বিষয়ে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের ইউপি সদস্য আব্দুস সালাম বলেন, “আমার এলাকার একটি নৌকাসহ চার মাঝিমাল্লাকে মিয়ানমারের আরাকান আর্মি ধরে নিয়ে গেছে বলে জেনেছি। বিষয়টি স্থানীয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে অবগত করা হয়েছে।”
এদিকে মিয়ানমার ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম গ্লোবাল আরাকান নেটওয়ার্ক সোমবার বিকেলে জানিয়েছে, অবৈধভাবে আরাকানের জলসীমায় প্রবেশ করার অভিযোগে বাংলাদেশি চার মাঝিমাল্লাকে আটক করা হয়েছে। সংবাদমাধ্যমটি দাবি করেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ১৮ জুলাই পর্যন্ত প্রায় ১৮৮ জন বাংলাদেশি জেলে ও ৩০টি নৌকা আটক করার পর মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, “একটি নৌকাসহ চার বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার খবর পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জানিয়েছে, গত আট মাসে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে নাফ নদসহ সংলগ্ন এলাকা থেকে অন্তত ৩০০ জেলেকে অপহরণ করেছে আরাকান আর্মি। এর মধ্যে চলতি বছরের মার্চ থেকে ২৩ আগস্ট মাস পর্যন্ত অপহৃত হন ২০০ জন। বিজিবির সহায়তায় এদের মধ্যে প্রায় ২০০ জনকে কয়েক দফায় ফেরত আনা হয়েছে। এখনও ১০০ জেলে আরাকান আর্মির হাতে রয়েছে বলে সূত্র জানিয়েছে। এর ফলে অনেক জেলে সাগরে মাছ শিকারে যেতে ভয় পাচ্ছে।