বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

বেড়ানো হলো না: কক্সবাজার যাওয়ার পথে ঝরল ৫ আরোহীর প্রাণ

চকরিয়া (কক্সবাজার) প্রতিনিধি | প্রকাশিতঃ ৫ নভেম্বর ২০২৫ | ১:৫৭ অপরাহ্ন


কক্সবাজারের চকরিয়ায় বেপরোয়া গতির একটি যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে নোহা মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে একই পরিবারের পাঁচ নারী পর্যটক নিহত হয়েছেন। বুধবার (৫ নভেম্বর) সকাল ১০টার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ফাঁসিয়াখালী হাঁসের দিঘিস্থ সেনাক্যাম্পের অদূরে ঢালা এলাকায় এই দুর্ঘটনায় মাইক্রোবাসের চালক, তার বাবা ও শিশু ছেলেসহ আরও তিনজন গুরুতর আহত হয়েছেন। আহতদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

মালুমঘাট হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান জানান, নিহতরা সবাই কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাতিসা এলাকার একই পরিবারের সদস্য। নিহতরা হলেন এনামুল হকের স্ত্রী রুমানা আকতার (৬২), তাঁর মেয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমবিএ শিক্ষার্থী সাদিয়া হক (২৪), ছেলে আমিনুল হকের স্ত্রী লিজা মজুমদার (২৮), লিজার মা রাশেদা বেগম শিল্পী (৫০) এবং তাঁর বোন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ছাত্রী ফারজানা মজুমদার (২৪)।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, নিহতদের এক নিকটাত্মীয় জান্নাতুল ফেরদৌস চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করেছেন। জান্নাতুল ফেরদৌস জানান, আমিনুল হক (৪০) বুধবার ভোরে তার স্ত্রী-সন্তান, মা-বাবা, বোন, শাশুড়ি ও শ্যালিকাকে নিয়ে কুমিল্লার বাড়ি থেকে কক্সবাজারের উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তিনি নিজেই তার ব্যক্তিগত নোহা মাইক্রোবাসটি চালাচ্ছিলেন। সকাল দশটার দিকে চকরিয়া উপজেলার ফাঁসিয়াখালী সেনাক্যাম্পের অদূরে ঢালা এলাকায় পৌঁছালে চট্টগ্রামমুখী মারছা পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে তাদের মাইক্রোবাসটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়।

চকরিয়া থানা পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সংঘর্ষে নোহা মাইক্রোবাসটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই তিন নারী এবং হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও দুই নারী মারা যান। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন চালক আমিনুল হক, তার বাবা এনামুল হক (৭২) এবং আমিনুলের শিশুসন্তান সাদমান (৬)।

দুর্ঘটনার খবর পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশ, মালুমঘাট হাইওয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী এবং চকরিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে হতাহতদের উদ্ধার করে।

মহাসড়কে দুই গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষের পর প্রায় এক ঘণ্টা যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে পড়ে, এতে সড়কের উভয়পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। পরে হাইওয়ে পুলিশ দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দুটি সরিয়ে নিলে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (চকরিয়া সার্কেল) এএসপি অভিজিৎ দাশ বলেন, নিহত পাঁচ নারীর মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তাদের স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তারা ঢাকা থেকে চকরিয়া পৌঁছালে আইনি প্রক্রিয়া শেষে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি দুটি হাইওয়ে পুলিশ জব্দ করেছে এবং এব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।