শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

সীতাকুণ্ডে সওজ’র জায়গা দখল করছে ইউনিটেক্স

প্রকাশিতঃ ১৮ এপ্রিল ২০২১ | ৭:০১ অপরাহ্ন

এম কে মনির, সীতাকুণ্ড : বাংলাদেশ সড়ক ও মহাসড়ক আইন অনুযায়ী কোনও সড়ক বা মহাসড়কের ৩০ ফুটের মধ্যে কোনও স্থাপনা নির্মাণ বা দখল করে ব্যবহারে সরকারি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানছে না ইউনিটেক্স গ্রুপ নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

অভিযোগ ওঠেছে, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ড বাঁশবাড়িয়া চৌধুরী মার্কেট এলাকায় সড়ক ও জনপদের প্রায় ৮০ শতাংশ জায়গা দখলে নিয়ে ভরাট করছে ইউনিটেক্স গ্রুপের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস লিমিটেড।

মূলত ফ্যাক্টরির প্রবেশপথ সরু হওয়ায় তা বড় করা ও বাইরে ফ্যাক্টরির গাড়ি পার্কিং করার উদ্দেশ্যে জায়গাটি দখল করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। স্থানীয়দের অভিযোগ, এ স্থানে যেকোনও সময় অনাকাঙ্ক্ষিত  দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

এদিকে সড়ক ও জনপদ বিভাগের জায়গা ইউনিটেক্স কর্তৃক দখলের বিষয়টি সওজ কর্মকর্তারা জানলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। ফলে দ্বিগুণ উৎসাহে দিনরাত দখলযজ্ঞ চালিয়ে যাচ্ছে ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস লিমিটেড।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের চৌধুরী মার্কেট এলাকায় মহাসড়কের পূর্ব পাশে ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস লিঃ  কর্তৃপক্ষ তাদের কারখানার সামনের সড়ক ও জনপদের খালি জায়গাটি দখল করে নিচ্ছে। বড় ড্রাম ট্রাক যোগে ইটভাঙা, বালি ও ইটের গুড়া এনে ফেলা হচ্ছে খালি জায়গাটিতে।

ইতিমধ্যে সড়কের পাশ্ববর্তী খালি জায়গার বৃহৎ একটি অংশের দখল সম্পন্ন করেছে ইউনিটেক্স। এতে মহাসড়কের ফুটপাত অদৃশ্য হওয়াসহ হুমকির মুখে পড়েছে এলাকার পানি চলাচলের খালটিও।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এতোদিন দখলের পাঁয়তারায় ছিল ইউনিটেক্স। দেশে চলমান লকডাউন ও সরকারি দপ্তরগুলো বন্ধ থাকার সুবাধে রাতের আঁধারে জায়গাটি দখল নিশ্চিত করে এখন ভরাটের কাজ সারছে তারা। দখলের ফলে এলাকার পানি চলাচলের খালটিও হুমকিতে পড়ছে। এভাবে সরকারি জায়গা দখল হতে থাকলে কোনও জায়গাই দখলবাজদের হাত থেকে রেহাই পাবে না। আজকে সড়কের জায়গা দখল করছে, কয়দিন পর খালও দখল করে নিবে। তখন বর্ষার পানিতে ডুবে মরতে হবে।

সড়ক ও জনপদের কুমিরা বিটের সহকারী প্রকৌশলী নাজিম উদ্দীন দখলের বিষয়টি নিশ্চিত করে একুশে পত্রিকাকে বলেন, দখল করা হয়েছে এটি সত্য। তবে আমরা সরেজমিনে গিয়ে তদন্ত করে বলতে পারবো কী পরিমাণ জায়গা দখল করা হয়েছে। এরপর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সড়ক ও জনপদের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রোকন উদ্দিন একুশে পত্রিকাকে বলেন, ইউনিটেক্সের সড়ক ও জনপদের জায়গা দখলের প্রমাণ পেয়েছি। তাদেরকে বিষয়টি জানানো হয়েছে, বর্তমানে কাজ বন্ধ আছে। লকডাউনের পর দখল দেখতে পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ইউনিটেক্স স্পিনিং মিলস লিঃ এর পরিচালক ফারহান আহমেদ একুশে পত্রিকার কাছে দখলের বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘কেউ যদি অভিযোগ করে আমাদের কিছু করার নেই। কারখানার ভিতরে কাজ চলার কারণে বাইরে কিছু সরঞ্জাম রেখেছিলাম। অভিযোগ দেওয়ার পর সেগুলো সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। জায়গাটি এখন খালি আছে।’

এক পর্যায়ে একুশে পত্রিকাকে নিজেদের পত্রিকা দাবি করে প্রতিবেদককে সংবাদ প্রকাশে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করেন ফরহান আহমেদ। প্রতিবেদককে তিনি বলেন, ‘আপনি হয়তো জানেন না। একুশে পত্রিকা আমাদেরই পত্রিকা। ইউনিটেক্স আপনাদেরই (প্রতিবেদক) প্রতিষ্ঠান।’

ফরহান আহমেদ একুশে পত্রিকাকে নিজেদের পত্রিকা দাবি করলেও প্রকৃতপক্ষে একুশে পত্রিকার কোনো ব্যবসা বা বাণিজ্য -প্রতিষ্ঠান নেই।