শুক্রবার, ৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১

কিছু ঘরে ঝুলছে তালা, আবার কিছু ঘরে গরু-ছাগল বাঁধা

লোহাগাড়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর

প্রকাশিতঃ ১৮ মার্চ ২০২৪ | ৭:০৬ অপরাহ্ন


মোহাম্মদ আলাউদ্দিন, লোহাগাড়া (চট্টগ্রাম) : কোনোটিতে ঝুলছে তালা, কোনোটির সামনে আশপাশের লোকজন কাপড় শুকাতে দিয়েছে। আবার কোনো কোনো ঘরের বারান্দায় ছাগল পালন করছেন প্রতিবেশিরা।

এটি লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর ইউনিয়নের কুলপাগলি গ্রামে আশ্রয়ণ প্রকল্পের চিত্র। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া আশ্রয়ণ প্রকল্পের এসব পাকা ঘরে বিদ্যুৎ, পানিসহ বিভিন্ন সুবিধা থাকলেও থাকেন না বেশিরভাগ সুবিধাভোগী।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অসহায় ভূমিহীনদের ঘর না দিয়ে বিত্তবানদের বাড়িগুলো দেওয়া হয়েছে। তাই তারা নিজ বাড়ি রেখে উপহারের ঘরে বসবাস করছেন না। তবে উপকারভোগীরা জানান, রাস্তার বেহাল দশা, স্কুল-মাদরাসা মসজিদ, কবরস্থান না থাকা ও নির্জন পাহাড়ি এলাকাসহ বিভিন্ন সমস্যার কারণে এই আশ্রয়ণ প্রকল্পে থাকেন না তারা। তাই বেশিরভাগ ঘরেই ঝুলছে তালা।

শনিবার (১৭ মার্চ) সকালে সরেজমিন কুলপাগলী আশ্রয়ণ প্রকল্পে গিয়ে দেখা যায়, আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘর পেলেও সেখানে বসবাস করছেন না অনেক মালিক। এ সুযোগে তালাবদ্ধ এসব ঘরের বারান্দায় গরু-ছাগল পালন করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। সেখানে ২৯টি ঘরের মধ্যে দক্ষিণ পাশে নির্মিত ১৩টি ঘরে বসবাস করেন ৭ পরিবার উত্তর-পূর্ব পাশে ১৬টির মধ্যে ৮ পরিবার।

কুলপাগলী আশ্রয়ণ প্রকল্পে বসবাসরত জেসমিন আক্তার একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের দক্ষিণ পাশে ১৩টি ঘরের মধ্যে আমরা ৭ পরিবার থাকি। বাকিরা থাকেন না। তাদের নাকি বাড়ি আছে। এজন্য ওরা এখানে নিয়মিত আসেন না। মাঝেমধ্যে এসে পরিস্কার করে চলে যায়। কিন্তু রাতে থাকেন না। আমরা চাই আমাদের মতো গরীব লোক দেখে ঘরগুলো বরাদ্দ দেওয়া হোক।’

আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা আবুল হোসেন একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘আমাদের এখানে সড়কের বেহাল দশা, স্কুল-মাদরাসা নেই। এছাড়া কবরস্থানও নেই। আধুনিক সুযোগ-সুবিধা না থাকায় অনেকেই আসছে না।’

আধুনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল কবির একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘প্রকৃত ভূমিহীন বাছাই করতে না পারা, স্বজনপ্রীতি ও আর্থিক অনিয়ম করায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ঘরগুলো অসহায় মানুষের পাওয়ার কথা থাকলেও যাদের জায়গা-জমি আছে তারা পেয়েছেন। প্রকৃত ভূমিহীনরা ঘর পায়নি। এখন অনেকেই থাকেন না। তাদের মনোনয়ন বাতিল করে নতুন উপকারভোগী পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে লোহাগাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইনামুল হাছান একুশে পত্রিকা বলেন, বরাদ্দ পাওয়া ঘরের উপকারভোগীদের বিষয়ে তথ্য নেওয়া হয়েছে। যারা ঘরগুলোতে থাকতে চান না, তাদের বরাদ্দ বাতিল করে নতুনদের বরাদ্দ দেওয়া হবে। যাতায়াতের ব্যবস্থা, স্কুল-মাদরাসা, মসজিদসহ যে সমস্যাগুলো রয়েছে এগুলো চিহ্নিত করে আমরা সমাধানের জন্য কাজ করছি।