বৃহস্পতিবার, ৩ অক্টোবর ২০২৪, ১৮ আশ্বিন ১৪৩১

ইরানের হামলার পর বৈরুতে আরও বেশি হামলা ইসরায়েলের

প্রকাশিতঃ ২ অক্টোবর ২০২৪ | ১০:০৭ পূর্বাহ্ন


আন্তর্জাতিক ডেস্ক: মঙ্গলবার রাতে ইসরায়েলে ইরান ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই ইসরায়েলের বিমান বাহিনী লেবাননের রাজধানী বৈরুতে আরও বিমান হামলা চালিয়েছে। হিজবুল্লাহকে লক্ষ্য করে এই হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবি তাদের।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সর্বশেষ এই হামলা চালানোর আগে ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্স এক্স-এ পোস্ট করে ওই এলাকার নাগরিকদের সতর্ক করে দেয়। ওই পোস্টে তারা সতর্ক করে বলে— তারা যে এলাকা লক্ষ্য করছে সেখান থেকে বেসামরিক মানুষকে সরিয়ে নেওয়া দরকার।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে অতর্কিত হামলা চালানোর পর ইসরায়েলি বাহিনী গাজায় অভিযান শুরু করলে হামাসের প্রতি সংহতি জানিয়ে লেবানন-ইসরায়েল সীমান্ত থেকে উত্তর ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনা লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র ও রকেট হামলা শুরু করে হিজবুল্লাহ। জবাবে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনীও সেসবের জবাব দেওয়া শুরু করে। উভয়পক্ষের হামলা-পাল্টা হামলায় গত ১১ মাসে নিহত হয়েছেন শত শত সামরিক-বেসামরিক মানুষ।

গত ১৭ অক্টোবর হিজবুল্লাহর সদস্যদের ওয়াকিটকি হিসেবে পরিচিত কয়েক শ পেজারে একসঙ্গে বিস্ফোরণ হয়। এতে নিহত হন অন্তত ১২ জন এবং আহত হন প্রায় তিন হাজার মানুষ। এই বিস্ফোরণের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করে হিজবুল্লাহ, তবে ইসরায়েল এই অভিযোগ স্বীকার কিংবা প্রত্যাখ্যান— কোনোটিই করেনি।

পেজার বিস্ফোরণের দু’দিন পর থকে ইসরায়েলে বিমান অভিযান শুরু করে আইডিএফ। গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলা সেই অভিযানে ইতোমধ্যে হিজবুল্লাহর প্রধান নেতা ও সেক্রেটারি জেনারেল হাসান নাসরুল্লাহ এবং বেশ কয়েক জন জ্যেষ্ঠ কমান্ডারসহ শত শত মানুষ নিহত হয়েছেন। কেবল রোববারের হামলাতেই নিহত হয়েছেন ১০৫ জন।

এদিকে গতকাল মঙ্গলবার ইসরায়েলের বিভিন্ন জায়গায় প্রায় ২০০টি মিসাইল ছুড়েছে ইরান। সম্প্রতি হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইরানের সিনিয়র কমান্ডারদের হত্যার জবাবে এই মিসাইল হামলা চালানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ইরানের রেভ্যুলশনারি গার্ড।

তারা বলছে, ইসরায়েল যদি এই হামলার জবাব দেয় তবে আরও হামলা চালানো হবে।

ইসরায়েলে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার পর তেহরানের রাস্তায় উদযাপন করতে দেখা গেছে বহু মানুষকে।

ইরান এবং হিজবুল্লাহর পতাকা হাতে বহু মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন। শুক্রবার লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিহত হিজবুল্লাহ নেতার ছবিও ছিল অনেকের হাতে।

ব্রিটিশ দূতাবাসের সামনে মূলত এই জমায়েত হয়। এর আগে এপ্রিলে ইসরায়েলে ইরানের হামলার পরও এই একই স্থানে জমায়েত লক্ষ্য করা যায়।

গতকাল ইরান যে হামলা চালিয়েছে তার অন্যতম লক্ষ্য ছিল ইসরায়েলের নেভাতিম বিমান ঘাঁটি। যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদমাধ্যম সিএনএন হামলার ভিডিও বিশ্লেষণ করে জানিয়েছে, নেভাতিম ঘাঁটিতে অন্তত কয়েক ডজন মিসাইল ছুড়েছে ইরান। যেগুলো একের পর এক ঘাঁটিতে আঘাত হানতে দেখা গেছে।

সংবাদমাধ্যমটি জানিয়েছে, তারা যে দুটি ভিডিও বিশ্লেষণ করেছে সেগুলোর মধ্যে একটি ধারণ করা হয়েছে আরাত আন-নাকাব শহর থেকে। এটি বিমান ঘাঁটির ঠিক দক্ষিণ দিকে অবস্থিত। ভিডিওতে যেসব ভবন দেখা গেছে; সেগুলোর সঙ্গে পুরোনো ছবির সাদৃশ্য খুঁজে পেয়ে সিএনএন নিশ্চিত করেছে, ভিডিওটি ঘাঁটির পাশ থেকেই ধারণ করা হয়েছে।