বুধবার, ৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

করছাড় তুলে নতুন বোঝা, বাড়ছে পণ্যমূল্য বৃদ্ধির ঝুঁকি

প্রকাশিতঃ ২৯ নভেম্বর ২০২৪ | ২:৪৯ অপরাহ্ন


ঢাকা : গণ-অভ্যুত্থানের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যখন জিনিসপত্রের দাম কমাতে ও বিনিয়োগ স্থবিরতা কাটাতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, ঠিক তখনই জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নতুন করে ১০টি খাতের করছাড় তুলে দিয়ে বাড়তি ভ্যাট বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে।

এনবিআর সূত্রে জানা গেছে, রাজস্ব ঘাটতি কমাতে চুনাপাথর, মোবাইল ফোন, সমুদ্রগামী জাহাজ, রেফ্রিজারেটর ও ফ্রিজার, পলিপ্রপাইলিন স্ট্যাপল ফাইবার, স্টেইনলেস স্টিল, স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপার, ফোর স্ট্রোক থ্রি-হুইলার, ইপিজেড ও অর্থনৈতিক অঞ্চলের শিল্পে ভ্যাটছাড় তুলে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি এসবের কোনো কোনোটির ওপর বিভিন্ন হারে ভ্যাট ও সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। এনবিআরের এই পদক্ষেপে অতিরিক্ত পাঁচ হাজার ৭৩০ কোটি টাকা আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।

ব্যবসায়ী ও খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এতে ব্যবসা-বাণিজ্য ক্ষতিগ্রস্ত হবে এবং পণ্যমূল্য বৃদ্ধি পাবে।

এনবিআর কর বৃদ্ধির যে প্রস্তাব দিয়েছে তার কিছু উদাহরণ হলো: চুনাপাথর আমদানিতে বর্তমানে ৩৫ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক অব্যাহতি থাকলেও, এনবিআর নতুন করে এই হারে শুল্ক আদায় করতে চায়। এতে সিমেন্ট, নির্মাণ, রাসায়নিক, কাচ ও চিনি শিল্পে প্রভাব পড়বে।

মোবাইল ফোনের ক্ষেত্রে, আমদানি ও উৎপাদনের বিভিন্ন পর্যায়ে থাকা ভ্যাট অব্যাহতি তুলে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপের চিন্তা করছে এনবিআর। রেফ্রিজারেটরের ক্ষেত্রে, উৎপাদন পর্যায়ে বর্তমানে ৭.৫ শতাংশ ভ্যাট থাকলেও, এনবিআর ১০ শতাংশ ভ্যাট বসাতে চায়।

এছাড়াও, স্যানিটারি ন্যাপকিন ও ডায়াপারের উপকরণ আমদানিতে ভ্যাট, সম্পূরক শুল্ক ও আগাম কর অব্যাহতি থাকলেও, ৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এনবিআরের এই পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন অর্থনীতিবিদ ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, “হুটহাট নীতির পরিবর্তন কখনোই ভালো সিদ্ধান্ত নয়।” তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের ওপর বাড়তি ভ্যাট আরোপ না করার পরামর্শ দিয়েছেন।

এনবিআরের এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাবে এবং দেশীয় শিল্প হুমকির মুখে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।