বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

তামিমের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বরিশালের ঐতিহাসিক জয়

একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | ১০:২৩ অপরাহ্ন


বিপিএলের গতবারের আসরে তামিম ইকবালের নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ফরচুন বরিশাল। বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা এবারও মাঠে নেমেছিল টানা দ্বিতীয়বারের মতো এ টুর্নামেন্টের শিরোপা ঘরে তোলার লড়াইয়ে। একাদশ আসরের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে বরিশালের প্রতিপক্ষ ছিল চিটাগাং কিংস।

প্রথমে ব্যাট করতে নেমে চিটাগাং কিংস ৩ উইকেটে ১৯৪ রানের বড় সংগ্রহ গড়েছিল। বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে তামিমের ২৯ বলে ৫৪ রানের ঝড়ো ইনিংস এবং কাইল মায়ার্সের ৪৬ রানের সুবাদে জয়ের পথে এগিয়ে যায় বরিশাল। এরপর শেষদিকে রিশাদ হোসেনের অসাধারণ ব্যাটিং নৈপুণ্যে ৩ বল হাতে রেখেই ৩ উইকেটের জয় পায় তামিমের দল।

বিপিএলে এর আগে ফাইনালে সর্বোচ্চ ১৭৫ রানের লক্ষ্য তাড়া করে জিতেছিল কুমিল্লা, ২০২৩ সালে। ফলে আজ বরিশালের দ্বিতীয় শিরোপা জিততে হলে নতুন রেকর্ড গড়েই জিততে হতো। সেই রেকর্ড গড়ে অবশেষে জয়ের দেখা পেয়েছে দলটি। তামিম, মায়ার্সের পর রিশাদের বীরত্বে তিন উইকেটের জয়ে টানা দ্বিতীয় শিরোপা ঘরে তুলেছে বরিশাল।

বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বরিশালের দুই ওপেনার দারুণ শুরু করেন। তামিম ও তাওহীদ হৃদয় মিলে স্কোরবোর্ডে ৭৬ রান তোলেন। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা অধিনায়ক তামিম ২৪ বলে ফিফটি করেন। তবে ফিফটির পর বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি তিনি। ব্যক্তিগত ৫৪ রানে শরিফুল ইসলামের বলে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন।

তামিম আউট হওয়ার পর ডেভিড মালান ক্রিজে এসে হৃদয়ের সঙ্গী হন। তবে ইংলিশ এই মারকুটে ব্যাটার আজ দলের হাল ধরতে পারেননি। দলীয় ৭৮ রানে তিনি ১ রান করেই আউট হন। এরপর দলীয় ৯৬ রানে হৃদয়ও ৩২ রানে সাজঘরের পথ ধরেন। এরপর ক্রিজে মায়ার্সের সঙ্গী হন মুশফিকুর রহিম।

মুশফিক ছিলেন আক্রমণাত্মক মেজাজে। ৯ বলে ৩ চারে ১৬ রান করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। তিনি আউট হন দলীয় ১৩০ রানে। এদিকে মুশফিক ফিরলেও শুরু থেকেই আগ্রাসী মেজাজে থাকা মায়ার্স দ্রুত স্কোরবোর্ডে রান তুলতে থাকেন। তাঁর সুবাদেই জয়ের স্বপ্ন দেখতে শুরু করে বরিশাল। তবে ক্যারিবীয় এই ব্যাটারও শেষ পর্যন্ত ২৭ বলে ৪৬ রান করেই আউট হন।

এদিকে দলীয় ১৭২ রানে মায়ার্স আউট হওয়ায় কিছুটা চাপে পড়ে যায় বরিশাল। একই ওভারে মাহমুদউল্লাহও ফিরে গেলে আরও বিপাকে পড়ে দলটি। উনিশতম ওভারের শেষ বলে আউট হন মোহাম্মদ নবীও। তবে নবী আউট হওয়ার এক বল আগেই বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে অনেকটা এগিয়ে দেন রিশাদ। এদিকে শেষ ওভারে জয়ের জন্য ৮ রান দরকার ছিল বরিশালের। ক্রিজে ছিলেন রিশাদ এবং তানভীর। শেষ ওভারের প্রথম বলেই বিশাল এক ছক্কা হাঁকিয়ে দলের জয়ের পথ সুগম করেন রিশাদ। এরপর ৩ বল হাতে রেখেই বাকি ২ রান নিয়ে জিতে যায় দলটি। এই জয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা নিশ্চিত করেছে বরিশাল।

বরিশালের বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে চিটাগাংয়ের দুই ওপেনার খাজা এবং ইমন শুরু থেকেই আগ্রাসী ছিলেন। তারা প্রথম ৬ ওভারেই স্কোরবোর্ডে ৫১ রান তোলেন। বরিশালের বোলারদের ওপর চড়াও হয়ে দ্রুত রান তুলতে থাকেন তারা। খাজার সঙ্গে ১২১ রানের উদ্বোধনী জুটি গড়েন ইমন।

৪৪ বলে ৭ চার আর ৩ ছয়ে ৬৬ রানের ইনিংস খেলে খাজা আউট হন। এদিকে খাজা ফিরলেও আরেক ওপেনার ইমন দলকে পথ দেখিয়েছেন। খাজা ফেরার পর ক্রিজে আসা গ্রাহাম ক্লার্ককে নিয়ে চিটাগাংকে বড় সংগ্রহ এনে দেন ইমন। দুজন মিলে গড়ে তোলেন ৭০ রানের জুটি।

দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেওয়ার পথে ৩০ বলে নিজের ফিফটি পূরণ করেন ইমন। বাংলাদেশি এই ওপেনারের মতোই আগ্রাসী মেজাজে ছিলেন ক্লার্ক। তিনিও খেলেন ২৩ বলে ২ চার আর ৩ ছয়ে ৪৪ রানের দুর্দান্ত ইনিংস। এদিকে দলীয় ১৯১ রানে ৪৪ রান করে ক্লার্ক বিদায় নেওয়ার পর ইমনও আউট হন ব্যক্তিগত ৭৮ রানে।
এ দুজন ফেরার পর আর নিজেদের সংগ্রহ খুব বেশি বাড়িয়ে নিতে পারেনি চিটাগাং। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৪ রানেই থামে বন্দরনগরীর দলটি।