সোমবার, ১৯ মে ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

টিসিবির ট্রাকসেল দ্রুতই ফিরছে, জুনে শুরুর আশা

একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ১৯ মে ২০২৫ | ১০:৪১ পূর্বাহ্ন


সাধারণ মানুষের জন্য ভর্তুকি মূল্যে খাদ্যপণ্য বিক্রির লক্ষ্যে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) শিগগিরই পুনরায় ট্রাকসেল কার্যক্রম শুরু করতে যাচ্ছে। টিসিবি ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে, তবে কবে নাগাদ এটি শুরু হবে বা এর পরিধি কেমন হবে, সে বিষয়ে কর্মকর্তারা সুনির্দিষ্টভাবে কিছু জানাননি।

এ প্রসঙ্গে টিসিবির ঢাকা আঞ্চলিক কার্যালয়ের যুগ্ম পরিচালক হুমায়ুন কবির বলেন, “ট্রাকে করে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রির বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভর করে। আমরা শুধু মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী তা বাস্তবায়ন করি। আশা করা যায়, অচিরেই আবার ট্রাকসেল চালু হবে। সিদ্ধান্ত হওয়ার পর বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানানো হবে।”

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, টিসিবির ট্রাকের মাধ্যমে নিত্যপণ্য বিক্রির জন্য উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। প্রস্তাবটি আগামী সভায় অনুমোদনের জন্য তোলা হবে এবং অনুমোদন পেলেই বিক্রি শুরু হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

কোনও কর্মকর্তা সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণের বিষয়ে মন্তব্য না করলেও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় মন্ত্রণালয় ও টিসিবি নীতিগতভাবে ট্রাকসেলের মাধ্যমে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রির বিষয়ে একমত হয়েছে। এখন শুধু উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের অপেক্ষা। ফলে আশা করা হচ্ছে, আগামী জুন মাস থেকেই এই কার্যক্রম পুনরায় শুরু হতে পারে।

চলতি বছরের ২৮ মার্চের আগে টিসিবি সপ্তাহে ছয় দিন রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ৫০টি, চট্টগ্রামে ২০টি, অন্যান্য বিভাগীয় শহরগুলোতে ১০টি এবং ৫৬টি জেলা শহরে ৫টি করে ভ্রাম্যমাণ ট্রাকে পণ্য বিক্রি করত। প্রতিটি ট্রাকে প্রায় ৪০০ জনের উপযোগী পণ্য হিসেবে প্রতিদিন ৪১০টি ট্রাকের মাধ্যমে প্রায় এক লাখ ৬৪ হাজার মানুষের কাছে ভর্তুকি মূল্যে পণ্য পৌঁছে দেওয়া হতো।

এর আগে, গত বছর একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর নিত্যপণ্যের দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়ায় গত বছরের ২৪ অক্টোবর থেকে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরে ট্রাকের মাধ্যমে পণ্য বিক্রি কার্যক্রম শুরু করেছিল টিসিবি, যা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলে। পরবর্তীতে, রমজান মাস উপলক্ষে গত ১০ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত আবারও ভর্তুকি মূল্যে পণ্য বিক্রি করা হয়।

এদিকে, টিসিবির এই ট্রাকসেল কার্যক্রম গত ২৮ মার্চ বন্ধ হওয়ার পর দেড় মাসেরও বেশি সময় অতিবাহিত হয়েছে। দেশে উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে দারিদ্র্য বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি হলেও ভর্তুকি মূল্যে খাদ্যপণ্য বিতরণ ও বিক্রিতে মন্থরতা দেখা দিয়েছে। শুধু টিসিবির কার্যক্রমই নয়, ভিজিএফ ও ভিজিডি কর্মসূচির আওতায় কম আয়ের মানুষের মধ্যে খাদ্য বিতরণও কমেছে বলে জানা গেছে। দেশে দুই বছরের বেশি সময় ধরে মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে, যা কম আয়ের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তাহীনতার ঝুঁকি বাড়াচ্ছে।

বিশ্বব্যাংক গত মাসে প্রকাশিত এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে, ক্রমাগত মূল্যস্ফীতি ও ধীর অর্থনীতির কারণে ২০২৫ সালে বাংলাদেশে সামগ্রিক দারিদ্র্য বেড়ে ২২ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছাতে পারে, যা ২০২২ সালে ছিল ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ।