
পরিবেশ পুনরুদ্ধার ও টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে কক্সবাজারে যাত্রা শুরু করল ‘ন্যাচার ইনসাইটস’ নামে একটি নতুন ম্যাগাজিন। কেবল একটি প্রকাশনা হিসেবে নয়, বরং প্রকৃতিকে ‘অধিকারধারী সত্তা’ হিসেবে বিশ্বব্যাপী শাসনব্যবস্থার মূলকেন্দ্রে প্রতিষ্ঠার আহ্বান নিয়ে এই উদ্যোগ।
রোববার (২৫ মে) বিকেলে কক্সবাজারের মারমেইড বিচ রিসোর্টে ‘চেঞ্জ ইনিশিয়েটিভ’ ও ‘আইএসটিআর’-এর যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত এই ম্যাগাজিনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয়।
‘ন্যাচার ইনসাইটস’ ম্যাগাজিনে নদী, বন, বিভিন্ন প্রজাতিসহ প্রকৃতির প্রতিটি উপাদানকে ‘জড়পদার্থ’ হিসেবে না দেখে ‘অধিকারধারী সত্তা’ হিসেবে স্বীকৃতি দিলে বৈশ্বিক ব্যবস্থাপনায় কী ধরনের আমূল পরিবর্তন আসতে পারে, সেই বিষয়ে আলোকপাত করা হয়েছে। আয়োজকরা বলছেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল বিশ্বে প্রাকৃতিক অধিকারের স্বীকৃতি মানব সমাজকে আরও ন্যায়ভিত্তিক, দায়বদ্ধ ও টেকসই করে তুলবে।
ম্যাগাজিনের উদ্বোধনী সংখ্যার সম্পাদকীয়তে প্রধান সম্পাদক এম. জাকির হোসেন খান লিখেছেন, “প্রকৃতিকে কেবল শোষণের উৎস হিসেবে দেখার দৃষ্টিভঙ্গি বদলাতেই এই ম্যাগাজিনের যাত্রা। প্রকৃতিকে আমাদের সহযোগী হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। প্রকৃতির অধিকারকে সম্মান করলেই কেবল সত্যিকারের ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা সম্ভব।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, ‘প্রাকৃতিক অধিকারভিত্তিক শাসনব্যব আইডিয়া’ কোনো প্রতীকী ধারণা নয়, বরং এটি মানবসৃষ্ট আইনকে বাস্তুতান্ত্রিক সীমারেখার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ করে তোলার বাস্তবমুখী পদক্ষেপ।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পরিবেশবিদ, শিল্পী, গবেষক ও সমাজকর্মীরা অংশগ্রহণ করে গঠনমূলক আলোচনায় অংশ নেন। ম্যাগাজিনটিতে বৈজ্ঞানিক গবেষণা, নীতিবিশ্লেষণ, সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপট, মাঠপর্যায়ের প্রতিবেদন, কল্পকাহিনী, কার্টুনসহ নানা উপাদান রয়েছে যা পাঠককে শুধু তথ্যই দেবে না, অনুপ্রেরণা ও কর্মোদ্দীপনাও যোগাবে বলে আয়োজকরা জানান।
প্রথম সংখ্যার উল্লেখযোগ্য বিষয়বস্তুর মধ্যে রয়েছে আর্কটিকের বরফ গলার প্রভাব, আফ্রিকার বন সংরক্ষণের সংগ্রাম, সাজেকের পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর জীবনচিত্র, পরিবেশকর্মীদের সাক্ষাৎকার, বাস্তুসংস্থানভিত্তিক কল্পকাহিনী ও হাস্যরসাত্মক কার্টুন।
অনুষ্ঠানে এম. জাকির হোসেন খানের নতুন বই “প্রকৃতির সার্বভৌমত্ব, সকলের টিকে থাকা: টেকসই ভবিষ্যতের পথে প্রাকৃতিক অধিকারভিত্তিক শাসন”-এর প্রি-অর্ডার শুরুর ঘোষণাও দেওয়া হয়। বইটিতে লেখক নদী, বন ও বাস্তুতন্ত্রকে আইনি সত্তার মর্যাদা দেওয়ার প্রস্তাব করেছেন, যেমনটা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান পেয়ে থাকে।
প্রধান সম্পাদক এম. জাকির হোসেন খান বলেন, “আমাদের উদ্দেশ্য—মানুষকে চিন্তা করতে, বিশ্লেষণ করতে ও পদক্ষেপ নিতে উদ্বুদ্ধ করা। ‘ন্যাচার ইনসাইটস’ হতাশার গল্প বলে না, বরং আশা, দায়বদ্ধতা ও বাস্তবসম্মত সমাধানের কথা শোনায়।”
‘ন্যাচার ইনসাইটস’ ম্যাগাজিনটি বর্তমানে অনলাইন ও মুদ্রিত সংস্করণে পাওয়া যাচ্ছে। বিস্তারিত জানতে ও প্রথম সংখ্যা পড়তে ভিজিট করা যাবে: www.natureinsights.org।