বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক আরোপ: ভিয়েতনামের চেয়ে ঝুঁকিতে বাংলাদেশ, রপ্তানি নিয়ে শঙ্কা

মার্কিন বাজারে ৩৫% শুল্ক, ভিয়েতনামের ২০%
একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ৯ জুলাই ২০২৫ | ১:২৭ অপরাহ্ন


যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ভিয়েতনামের চেয়ে বেশি হারে শুল্ক আরোপিত হওয়ায় দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি খাত বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে বলে আশঙ্কা করছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে শুল্কহারে ছাড় না পেলে নিকটতম প্রতিযোগী ভিয়েতনামের কাছে বাজার হারানোর ঝুঁকিতে পড়বে বাংলাদেশ।

গতকাল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বাংলাদেশসহ ১৪টি দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছেন, যা আগামী ১ আগস্ট থেকে কার্যকর হবে। এতে বাংলাদেশের জন্য ৩৫ শতাংশ শুল্ক নির্ধারণ করা হয়েছে। অন্যদিকে, বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে ভিয়েতনাম তাদের শুল্কহার ২০ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে।

এই পরিস্থিতি এমন এক সময়ে তৈরি হলো, যখন বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির প্রবৃদ্ধি প্রায় স্থবির, অথচ ভিয়েতনামের প্রবৃদ্ধি উল্লেখ করার মতো।

বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (ডব্লিউটিও) তথ্য অনুসারে, ২০২৪ সালে বাংলাদেশ ৩৮ দশমিক ৪৮ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক রপ্তানি করলেও প্রবৃদ্ধি ছিল মাত্র শূন্য দশমিক ২১ শতাংশ এবং বৈশ্বিক বাজারে হিস্যাও কিছুটা কমেছে। অন্যদিকে, নিকটতম প্রতিযোগী ভিয়েতনাম ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশ প্রবৃদ্ধিসহ প্রায় ৩৩ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে।

বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক মো. মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের শীর্ষ রপ্তানি গন্তব্য হওয়ায় এই শুল্কের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হবে। এটি শুধু রপ্তানি আদেশ কমার ঝুঁকিই নয়, এর প্রভাব কর্মসংস্থান হ্রাস ও সামগ্রিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা পর্যন্ত বিস্তৃত হতে পারে।”

তবে বাংলাদেশ নিটওয়্যার ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যান্ড এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিকেএমইএ) নির্বাহী সভাপতি ফজলে শামীম এহসান কিছুটা ভিন্নমত পোষণ করেন। তিনি বলেন, “আমি বাংলাদেশের ওপর কত শুল্ক আরোপ হলো, সেটা নিয়ে চিন্তিত না। চিন্তিত আমাদের অন্য প্রতিযোগী দেশ, যেমন—চীন, ভারত ও পাকিস্তানের ক্ষেত্রে শুল্কহার কী হয়, সেটা নিয়ে। যদি তাদের ওপরও উচ্চহারে শুল্ক থাকে, তাহলে আমরা প্রতিযোগিতায় টিকে থাকব।”

তিনি আরও বলেন, “কিন্তু যদি অন্য প্রধান প্রতিযোগী দেশগুলো আমাদের চেয়ে কম শুল্ক সুবিধা পায়, তবে সেটি বাংলাদেশের জন্য দুশ্চিন্তার কারণ হবে।”

খাতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, এই পরিস্থিতিতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে শুল্কের পরিমাণ কমানো সম্ভব না হলে তা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানিতে বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।