
বাবা সামান্য ব্যবসায়ী। তিন বোনের মধ্যে সবার বড় সে। এমন একটি পরিবার থেকে এসে এবারের এসএসসি পরীক্ষায় চমক দেখিয়েছে জয়া খাতুন।
মোট ১৩০০ নম্বরের মধ্যে ১২৬৩ পেয়ে শুধু জিপিএ-৫ ই অর্জন করেনি, কক্সবাজার জেলার ১৪ হাজারের বেশি কৃতকার্য শিক্ষার্থীকে পেছনে ফেলে সেরা হয়েছে চকরিয়া সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের এই শিক্ষার্থী। তার স্বপ্ন, একজন ‘মানবিক চিকিৎসক’ হয়ে মানুষের সেবা করা।
শনিবার বিকালে চকরিয়ায় নিজেদের বাসায় বসে কথা হয় জয়ার সঙ্গে। নিজের অনুভূতি প্রকাশ করে সে বলে, “এই ফলাফলের পেছনে আমার শিক্ষকদের আন্তরিকতা ও যথেষ্ট অবদান রয়েছে। তবে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে আমার বাবা-মা। তাদের কারণেই আজকে আমার এই অর্জন। ভবিষ্যতে একজন মানবিক চিকিৎসক হয়ে এলাকার গরিব-দুঃখী ও অসহায় মানুষকে সেবা দিতে চাই।”
জয়ার বাবা মোহাম্মদ হাসানুর রহমান একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এবং মা শাহিনা বেগম গৃহিণী। তাদের মূল বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলায় হলেও ব্যবসার সুবাদে প্রায় ২০ বছর ধরে চকরিয়ায় বসবাস করছেন। ব্যবসায় নানা প্রতিকূলতার মাঝেও তিনি তিন মেয়ের লেখাপড়া চালিয়ে যাচ্ছেন বলে জানান।
মেয়ের এই সাফল্যে জয়ার বাবা-মা বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক আবু শোয়াইব ও সাইফুদ্দীন আহমদ মানিক তাদের ছাত্রীর এমন সাফল্যে উচ্ছ্বসিত। তারা বলেন, “জয়া পড়ালেখায় যেমন মেধাবী, তেমনি বিনয়ী ও ভদ্র। সে নিয়মিত পড়াশোনা করেছে এবং কোনো বিষয়ে ঘাটতি থাকলে শিক্ষকদের কাছ থেকে সহযোগিতা নিত। তার অভাবনীয় সাফল্যে আমরা গর্বিত।”
চকরিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, “চকরিয়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী জয়া খাতুন জেলায় প্রথম এবং চট্টগ্রাম বোর্ডে ১৫তম স্থান অর্জন করেছে। আমি তার উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করছি।”
চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ আতিকুর রহমান বলেন, “অদম্য ইচ্ছেশক্তি থাকলে সবকিছু অর্জন করা যায়, তার দৃষ্টান্ত জয়া। সে জেলার সেরা শিক্ষার্থী নির্বাচিত হয়ে চকরিয়ার সম্মান বাড়িয়েছে।”
জয়ার পড়াশোনার পথে উপজেলা প্রশাসন পাশে থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, “তার উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অর্জনে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগিতা করার চেষ্টা অব্যাহত থাকবে।”