বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

টিকেট কেলেঙ্কারিতে রণক্ষেত্র কক্সবাজার স্টেডিয়াম, ইউএনওসহ আহত অর্ধশতাধিক

কক্সবাজার প্রতিনিধি | প্রকাশিতঃ ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ৯:২০ অপরাহ্ন


ধারণক্ষমতার চেয়ে কয়েকগুণ বেশি টিকেট বিক্রি এবং অব্যবস্থাপনার অভিযোগে দর্শকদের তুমুল বিক্ষোভ, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের মধ্য দিয়ে পণ্ড হয়ে গেছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসক (ডিসি) গোল্ডকাপ ফুটবলের ফাইনাল ম্যাচ।

শুক্রবার বিকেলে কক্সবাজারের বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমিন স্টেডিয়ামে এ ঘটনায় কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।

টেকনাফ ও রামু উপজেলা একাদশের মধ্যে ফাইনাল ম্যাচটি শুরুর আগেই কয়েক হাজার দর্শক স্টেডিয়ামের গেট ভেঙে এবং দেয়াল টপকে মাঠে ঢুকে পড়লে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের বের করে দেওয়ার চেষ্টা করলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতা প্রায় দশ হাজার হলেও ফাইনাল উপলক্ষে ৩০ থেকে ৪০ হাজার টিকেট বিক্রি করা হয়। নির্ধারিত ৫০ টাকার টিকেট কালোবাজারে ১০০ থেকে ৪০০ টাকায়ও বিক্রি হয়েছে বলে দর্শকরা অভিযোগ করেন। বেলা দুইটার মধ্যে গ্যালারি পূর্ণ হয়ে গেলে টিকেট কিনেও হাজার হাজার দর্শক বাইরে আটকা পড়েন। এক পর্যায়ে উত্তেজিত জনতা গেট ভেঙে মাঠে প্রবেশ করে।

পুলিশ ও আয়োজকরা মাঠ থেকে দর্শকদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, লাঠিচার্জ ও সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় বিক্ষুব্ধ দর্শকেরা স্টেডিয়ামের গ্যালারির চেয়ার, দরজা-জানালার কাঁচ ও প্রেসবক্স ভাঙচুর করে। স্টেডিয়ামের বাইরে টায়ার ও কাঠে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে রাখে তারা।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ব্যর্থ হলে পরে সেনাবাহিনী, র‍্যাব ও পুলিশের যৌথ একটি দল এসে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে স্টেডিয়াম নিয়ন্ত্রণে আনে।

জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জসিম উদ্দিন চৌধুরী বলেন, “ধারণক্ষমতার অতিরিক্ত টিকেট বিক্রির কারণেই এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে পুলিশের কয়েকজন সদস্যও আহত হয়েছেন।”

জেলা প্রশাসক ও টুর্নামেন্ট আয়োজক কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, “গেট ভেঙে হাজার হাজার দর্শক মাঠে ঢুকে পড়ায় বিশৃঙ্খলা তৈরি হয় এবং ম্যাচটি আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। অতিরিক্ত ও বেশি দামে টিকেট বিক্রির অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হবে। ফাইনালের নতুন তারিখ পরে জানানো হবে।”

গত ১ সেপ্টেম্বর জেলার বিভিন্ন উপজেলা দল নিয়ে এই টুর্নামেন্ট শুরু হয়েছিল।