বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

চীন থেকে ২০টি যুদ্ধবিমান কিনছে বাংলাদেশ, খরচ হতে পারে ২.২ বিলিয়ন ডলার

বিমানবাহিনীকে আধুনিকীকরণে সরকারের উদ্যোগ, ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিবেচনার তাগিদ
একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ৭ অক্টোবর ২০২৫ | ১০:৪০ পূর্বাহ্ন


বাংলাদেশ বিমানবাহিনীকে আধুনিকীকরণ এবং দেশের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করতে চীন থেকে ২০টি জে-১০সিই (J-10CE) মডেলের মাল্টিরোল যুদ্ধবিমান কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার।

এই ক্রয় চুক্তিতে বিমান সংগ্রহ, প্রশিক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণসহ মোট ব্যয় হতে পারে প্রায় ২.২ বিলিয়ন ডলার বা ২৭ হাজার ৬০ কোটি টাকা। ২০২৭ সালের মধ্যে বিমানগুলো সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

সরকারি নথি অনুযায়ী, অর্থবছর ২০২৬ ও ২০২৭-এর মধ্যে এই ক্রয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে পারে এবং এর অর্থ ১০টি অর্থবছরে, অর্থাৎ ২০৩৫-৩৬ অর্থবছর পর্যন্ত পরিশোধ করা হবে।

চীনের জে-১০সি যুদ্ধবিমানের রপ্তানি সংস্করণ হলো জে-১০সিই। সম্প্রতি ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে ভারতীয় বিমানবাহিনীর রাফাল যুদ্ধবিমানকে ভূপাতিত করার পেছনে এই বিমানের ভূমিকা ছিল বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলেও তা নিরপেক্ষভাবে যাচাই করা যায়নি।

আলোচনা ও কমিটি গঠন

গত মার্চে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের চীন সফরকালে যুদ্ধবিমান কেনার বিষয়ে আলোচনা হয় এবং চীন এতে ইতিবাচক সাড়া দেয় বলে জানা গেছে।

এরই ধারাবাহিকতায়, গত এপ্রিলে বিমানবাহিনী প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খানের নেতৃত্বে ১১ সদস্যের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটি গঠন করে সরকার। এই কমিটি বিমানের চূড়ান্ত মূল্য নির্ধারণ, অর্থ পরিশোধের শর্ত এবং চুক্তি চূড়ান্ত করার বিষয়ে চীনের সঙ্গে আলোচনা করবে।

বিশেষজ্ঞদের সতর্কতা

এই ক্রয় প্রক্রিয়ার ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব বিশ্লেষণের ওপর জোর দিয়েছেন নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পিস অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজের প্রেসিডেন্ট, মেজর জেনারেল (অব.) এ এন এম মুনিরুজ্জামান বলেন, “বর্তমানে বিশ্বে এক নতুন ধরনের ভূ-রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি হয়েছে। তাই যেকোনো দেশ থেকে বিমান কেনার আগে এর ভূ-রাজনৈতিক প্রভাব অবশ্যই বিশ্লেষণ করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “বিশেষ করে এখন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে। যদিও আমাদের যুদ্ধবিমানের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য, তবে এই বিষয়টিও বিবেচনায় রাখতে হবে।”

বর্তমানে বাংলাদেশ বিমানবাহিনীতে ৪৪টি ফাইটার জেটসহ মোট ২১২টি এয়ারক্রাফট রয়েছে, যার মধ্যে ৩৬টিই চীনের তৈরি পুরোনো এফ-৭ মডেলের।