
উচ্চ মূল্যস্ফীতি ও প্রবৃদ্ধির ধীরগতির কারণে বাংলাদেশে দারিদ্র্যের হার কিছুটা বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক। তবে সংস্থাটির এই তথ্য ও জরিপ পদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ।
মঙ্গলবার প্রকাশিত ‘বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট আপডেট’ শীর্ষক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাংক বলেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে দেশে দারিদ্র্যের হার বেড়ে ২১.২ শতাংশ হয়েছে, যা আগের অর্থবছরে ছিল ২০.৫ শতাংশ।
এ প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, মাত্র ৫ হাজার মানুষের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে দারিদ্র্যের হার নির্ধারণের এই পদ্ধতি কতটা নির্ভরযোগ্য, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তিনি অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে উদ্ধৃত করে বলেন, মানুষের বাহ্যিক অবস্থাও দারিদ্র্য পরিমাপের একটি সূচক।
তবে অর্থনীতিবিদরা বলছেন, তথ্যের যথার্থতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও দেশে যে দারিদ্র্য ও বেকারত্ব বাড়ছে, তা উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।
ইনস্টিটিউট ফর ইনক্লুসিভ ফাইন্যান্স অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের নির্বাহী পরিচালক মোস্তফা কে মুজেরি বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির মধ্যে গত তিন বছরে ইতিবাচক অর্থনৈতিক চিত্র দেখা কঠিন।
পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান মাসরুর রিয়াজ বলেন, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা বিনিয়োগকে নিরুৎসাহিত করে, যা কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে বড় বাধা।
এর আগে স্থানীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) জানিয়েছিল, ২০২২ সালে দারিদ্র্যের হার যেখানে ১৮.৭ শতাংশ ছিল, তা মে ২০২৫-এ বেড়ে ২৭.৯৩ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর অর্থবছরের প্রথমার্ধে অর্থনীতি কিছুটা বাধাগ্রস্ত হলেও দ্বিতীয়ার্ধে শক্তিশালী রপ্তানি ও রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্সের ওপর ভর করে ঘুরে দাঁড়িয়েছে।
সংস্থাটি পূর্বাভাস দিয়েছে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.৮ শতাংশে উন্নীত হতে পারে। তবে প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে জরুরি সংস্কার প্রয়োজন বলে তারা মনে করে।
প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে ‘নীতিগত অনিশ্চয়তা’ এবং ব্যাংকিং খাতের দুর্বলতা বেসরকারি খাতের কার্যক্রমে প্রভাব ফেলছে।