
আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে চট্টগ্রামের আলোচিত আসন চট্টগ্রাম-২ (ফটিকছড়ি) এর বিএনপির পাঁচজন মনোনয়ন প্রত্যাশী এক টেবিলে বসে বৈঠক করেছেন। শুক্রবার (১০ অক্টোবর) চট্টগ্রামের লালখান বাজারের ‘ফিটস্টপ রেস্টুরেন্টে’ অনুষ্ঠিত এই বৈঠকের একটি ছবি দিনভর রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনার কেন্দ্রে ছিল।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে এই বৈঠকের আয়োজন করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম। মনোনয়ন দৌড়ে আসনে একাধিক প্রার্থী থাকায় তাদের মধ্যে বোঝাপড়া তৈরি এবং ঐক্যবদ্ধভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়।
দলীয় সূত্র জানায়, মনোনয়ন কে পাবেন, তা সম্পূর্ণভাবে দলীয় হাইকমান্ডের এখতিয়ার। তাই আসন্ন নির্বাচনের পূর্বে বিভেদ ভুলে সকলকে ঐক্যবদ্ধ করার লক্ষ্যেই এই সম্প্রীতি বৈঠক আয়োজন করা হয়, যা দলের নেতাকর্মীদের মাঝে নতুন গতি সঞ্চার করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সভায় চট্টগ্রাম-২ আসনে ‘ধানের শীষ’ প্রতীকে মনোনয়ন প্রত্যাশী পাঁচ প্রার্থীই উপস্থিত ছিলেন। তারা হলেন—উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহ বাহার, উত্তর জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক মো. সরোয়ার আলমগীর, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সাংবাদিক কাদের গণি চৌধুরী, বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী এবং উত্তর জেলা বিএনপি নেতা মো. সালাহ উদ্দিন।
বৈঠকে নেতারা নিজ নিজ বক্তব্য তুলে ধরেন এবং দল যাকে মনোনয়ন দেবে, তার পক্ষেই মাঠে থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
মো. সরোয়ার আলমগীর তার বক্তব্যে বলেন, ‘দলের দুঃসময়ে আমি ফটিকছড়িবাসীর পাশে ছিলাম। নেতাকর্মীদের সুখে-দুঃখে সর্বদা নিজেকে নিয়োজিত রেখেছি। জেল-জুলুমসহ নানা অত্যাচার সহ্য করার পাশাপাশি অসংখ্য হামলা-মামলা মোকাবিলা করেছি। এই বিষয়গুলো আমি হাইকমান্ডকে অবহিত করেছি।’
কর্নেল (অব.) আজিম উল্লাহ বাহার বলেন, ‘নির্বাচনে দলের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানিয়ে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধভাবে দলের জন্য কাজ করব, এমন কথাই হয়েছে।’
এদিকে, চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীমের উপস্থিতিতে পাঁচ নেতার বৈঠকের ছবিটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়ে যায়। ছবিটি অনেকে ইতিবাচকভাবে দেখলেও, কেউ কেউ এটিকে লোকদেখানো ও হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছেন।
সাহেদুল আলম নামে একজন ফেসবুক ব্যবহারকারী তার মন্তব্যে লিখেছেন, ‘এমন দৃশ্য হাস্যকর। নেতারা ভাইরাল হতে ও সস্তা জনপ্রিয়তা পেতে এ ধরনের লোকদেখানো ছবি পোস্ট করেন। বাস্তবে মাঠ পর্যায়ে এমন ঐক্যের প্রতিফলন ঘটবে না। এখানকার বিভক্ত বিএনপি কখনোই এক হবে না।’
অন্যদিকে, আজমগীর নামের একজন শিক্ষক মন্তব্য করেন, ‘এই ছবিটি সম্প্রীতির এক অনন্য দৃষ্টান্ত হতে পারে। তবে শেষ পর্যন্ত নেতারা ছবির মতো ঐক্যবদ্ধ থাকবেন কি না, সেটিই দেখার বিষয়। সাধারণ মানুষ নেতাদের কাছে এমন সম্প্রীতি ও সহনশীলতা প্রত্যাশা করে।’
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুর রহমান শামীম জানান, ‘বিএনপি এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি। মনোনয়ন প্রত্যাশীরা মাঠে কাজ করছেন। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন। আমরা নেতাদের বক্তব্য শুনেছি এবং তা কেন্দ্রে অবহিত করব।’