
বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের ভূমিকায়’ যাওয়ার দাবি জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈঠক শেষে বেরিয়ে এসে সাংবাদিকদের কাছে তিনি এ দাবি তুলে ধরেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আগামী বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে সেই জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে অর্থবহ নিরপেক্ষভাবে সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার জন্য এই মুহূর্ত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আদলে নিতে হবে। অর্থাৎ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের যে ভূমিকা সেই ভূমিকায় তাদেরকে যেতে হবে।”
এর প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে প্রশাসনকে ‘পুরোপুরিভাবে নিরপেক্ষ’ করার ওপর জোর দেন তিনি, যাতে জনগণের মধ্যে আস্থা তৈরি হয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, “সচিবালয়ে যারা এখনও আছেন যাদেরকে চিহ্নিত ফ্যাসিস্টদের দোসর বলা হয় তাদেরকে সরিয়ে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা দেওয়ার জন্য আমরা বলেছি। জেলা প্রশাসনেও একইভাবে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। আমরা মনে করি যে তারা এখনও সেই ফ্যাসিস্ট সরকারের স্বার্থ পূরণ করছে। সেজন্য তাদেরকে অপসারণের কথা আমরা বলেছি।”
পুলিশ ও বিচার বিভাগকে নিরপেক্ষ করার দাবি জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “আমরা পুলিশের নিয়োগের ক্ষেত্রে বিশেষ করে যে সমস্ত পদে নতুন করে নিয়োগ দেওয়া হবে বা যাদেরকে পদোন্নতি দেওয়া হবে সেই ক্ষেত্রে নিরপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছি।”
তিনি আরও বলেন, “পাশাপাশি আমরা বলেছি যে, বিচার বিভাগে বিশেষ করে উচ্চ আদালতে এখনও যে সমস্ত ফ্যাসিস্টদের দোসর আছেন তাদেরকে সরিয়ে সেখানে নিরপেক্ষ বিচারকদের নিয়োগ দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। যদিও এটা বিচার বিভাগের ব্যাপার। তারপরেও প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু সব সবকিছুর দায়িত্বে আছেন তার কাছে আমরা আমাদের সেই দাবিগুলো জানিয়েছি।”
অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়েও কথা বলেছেন জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, “অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার কথাও আমরা বলেছি। সরকারের মধ্যে যদি কোনো দলীয় লোক থেকে থাকেন তাকে অপসারণ করার জন্য আমরা দাবি জানিয়েছি। এটাই ছিল প্রধান মূল কথা।”
কোনো নির্দিষ্ট উপদেষ্টার বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব ‘না’ সূচক জবাব দেন।
এর আগে সন্ধ্যা ৬টায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে তার বাসভবন রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বৈঠকে বসেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে তিন সদস্যের প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হলেন আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সালাহ উদ্দিন আহমদ। রাত ৭টা ১১ মিনিটে তারা যমুনা থেকে বেরিয়ে আসেন।