
চট্টগ্রাম মহানগরী জামায়াতের আমির নজরুল ইসলাম বলেছেন, যুব প্রজন্মকে সাথে নিয়ে “ইসলামপন্থীদের বাংলাদেশ” গঠন করা হবে। শুক্রবার (৭ নভেম্বর) নগর জামায়াতের কার্যালয়ে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নজরুল ইসলাম বলেন, “যারা বঙ্গভঙ্গ রদ করেছিল তারাই সাতচল্লিশের প্রথম স্বাধীনতার পর থেকেই নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। পঁয়ষট্টির যুদ্ধে হেরে যাওয়ার পর থেকেই তাদের ষড়যন্ত্র আরো জঘন্য রূপ নিয়েছিল। আগরতলা, ছয়দফা, ঊনসত্তরে শহীদ আবদুল মালেকের হত্যাকাণ্ড, সত্তরে জামায়াতের পল্টন সমাবেশে হামলাসহ সর্বত্রই তাদের ষড়যন্ত্র সক্রিয় ছিলো।”
তিনি আরও বলেন, “সত্তরের নির্বাচনের পর ম্যান্ডেট মেনে না নেওয়ায় অনিবার্য হয়ে পড়া মুক্তিযুদ্ধে মুজিব বাহিনীর গণহত্যা, স্বাধীনতা উত্তর বাংলাদেশে গণবাহিনী-রক্ষীবাহিনির রক্তক্ষয়ী ঘোলাটে পরিস্থিতি, লুটপাট ও দুর্ভিক্ষ, বাকশালের একদলীয় শাসন থেকে শেখ মুজিবের হত্যাকাণ্ডে তাদেরই কালোহাত সক্রিয় ছিলো।” তিনি মন্তব্য করেন, “শেখ মুজিবের ইন্ডিয়ান আর্মি প্রত্যাহারের প্রসঙ্গ আনা এবং চুয়াত্তরে ওআইসি সম্মেলনে যোগদানসহ পাকিস্তানের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার প্রক্রিয়া হয়তোবা তারা মেনে নিতে পারেনি।”
নজরুল ইসলাম বলেন, “পনেরো আগস্টের নৃশংস হত্যাকাণ্ডের পর শেখ মুজিবুর রহমানের ক্যাবিনেটের একুশ জন মন্ত্রী নিয়েই গঠিত হয়েছিল খোন্দকার মুশতাকের সরকার। যে সরকারই আসুক, যত ষড়যন্ত্রই হোক বাংলাদেশের ইসলামি চেতনা বরাবরই অটুট ছিলো।” তিনি দাবি করেন, খোন্দকার মুশতাকের তিরাশি দিনের শাসন জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এবং এক পর্যায়ে বাংলাদেশকে ইসলামী প্রজাতন্ত্রই ঘোষণা করা হয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, “ইন্ডিয়ান হেজেমনির ষড়যন্ত্র আবারো সক্রিয় হয়ে উঠে। খালেদ মোশাররফের নেতৃত্বে ক্যু করে আবারো দখলে নিতে চায় তারা। জিয়াউর রহমানকে সেনাপ্রধানের পদ থেকে অপসারণ করে গৃহবন্দী রাখা হয়।” তিনি উল্লেখ করেন, কর্নেল তাহেরের পরিকল্পনা ছিল জিয়াকে মুক্ত করে বাংলাদেশকে সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ঘোষণা করা, “কিন্তু জিয়া জনগণের সেন্টিমেন্ট বুঝেই সমাজতান্ত্রিক ষড়যন্ত্রে পা দেননি।”
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ উল্লাহর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও চট্টগ্রাম মহানগরীর সেক্রেটারি অধ্যক্ষ মুহাম্মদ নুরুল আমিন (যিনি চট্টগ্রাম ২ ফটিকছড়ি আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী), নগর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চট্টগ্রাম ৯ আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী ডা. এ কে এম ফজলুল হক এবং নগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি এস এম লুৎফুর রহমান।
উক্ত আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন নগর কর্মপরিষদ সদস্য ডা. সিদ্দিকুর রহমান, আবু হেনা মোস্তফা কামাল, আমির হোছাইন, খুলশী থানা আমীর অধ্যাপক আলমগীর ভূঁইয়া, পাঁচলাইশ থানা আমীর ইন্জিনিয়ার মাহবুবুর হাসান রুমী, কোতোয়ালি থানা নায়েবে আমীর অধ্যাপক আব্দুজ্জাহের এবং চকবাজার থানা নায়েবে আমীর আব্দুল হান্নান।