শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৪১ রান

প্রকাশিতঃ ৯ নভেম্বর ২০১৫ | ১১:০৫ পূর্বাহ্ন

tamimএকদিকে বাংলাদেশের সিরিজ নিশ্চিত করার মিশন। অপরদিকে জিম্বাবুয়ের সিরিজে ফেরার মিশন। লক্ষ্য ভিন্ন হলেও সংকল্প এক এবং অভিন্ন। এমনই সংকল্প বুকে নিয়ে মিরপুরের শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শুরু হয়েছে ব্যাট বলের লড়াই।

টস হেরে শুরুতে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। সাকিব আল হাসানের পরিবর্তে দলে সুযোগ পাওয়া ইমরুল কায়েস ইনিংস ওপেন করতে নেমেছে তামিম ইকবালের সঙ্গে। দু’জনই বাঁ-হাতি। দুই বাঁ-হাতি বিপক্ষে বল করছেন জিম্বাবুয়ের দুই পেসার তিনাশে পানিয়াঙ্গারা এবং লুক জংউই।

প্রথম ওভারে ১ রান নিয়ে শুরু করেছে বাংলাদেশ। শুরুতে তাড়াহুড়া না করে দুই ওপেনার তামিম এবং ইমরুল মিলে উইকেটে সেট হওয়ার চেষ্টা করছেন। একই সঙ্গে ধীরে ধীরে রান বাড়ানোর কাজটাও করে যাচ্ছিলেন তারা।

কিন্তু বেশিক্ষণ পারলেন না। সপ্তম ওভারের শেষ বলেই বাংলাদেশ ইনিংসের ওপর আঘাত হানলেন তিনাশে পানিয়াঙ্গারা। হালকা সুইং করে তার বলটি বেরিয়ে যাচ্ছিল। তামিম ডিফেন্স করার চেষ্টা করলেন। কিন্তু বল ব্যাটের কানায় লেগে চলে গেল উইকেটরক্ষকের গ্লাভসে। ২৯ বলে ১৯ রান করে ফিরে গেলেন তামিম। দলীয় রান তখন ৩২।

তামিম আউট হওয়ার পর ইমরুলের সঙ্গে জুটি গড়তে আসেন লিটন কুমার দাস। প্রথম ম্যাচে ইনিংস ওপেন করতে নেমে নিজের নামের প্রতি কোনো সুবিচারই করতে পারেননি তিনি। তবে দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে নেমে শুরু থেকেই চড়াও হলেন জিম্বাবুুয়ে বোলারদের ওপর। ছক্কা মেরে ভীতি ছড়ানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু উল্টো নিজেই শেষ পর্যন্ত উইকেট বিলিয়ে দিলেন।

১১তম ওভারের পঞ্চম বলে তিনাশে পানিয়াঙ্গারার হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা বলটি বুঝতেই পারেননি। পুল করতে গেলেন। কিন্তু শটে কোনো নিয়ন্ত্রণ ছিল না। ফলে কানায় লেগে আবারও চলে গেল উইকেট রক্ষকের হাতে। মাত্র ৭ রান করে ফিরে গেলেন সাজঘরে। দলীয় রান তখন ৪৭।

৪৭ রানে দুই উইকেট হারানোর পর মাহমুদুল্লাহ রিয়াদকে নিয়ে ইনিংস মেরামত শুরু করেন ইমরুল কায়েস। তবে বেশিক্ষণ ক্রিজে স্থায়ী হতে পারেননি মাহমুদুল্লাহ। গ্রায়েম ক্রেমারের করা ১৮তম ওভারের চতুর্থ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। মাত্র ৪ রান করতে ২০ বল খেলেন রিয়াদ।

দলীয় ৭৯ রানের মাথায় মাহমুদুল্লাহ ফিরে গেলে চতুর্থ উইকেটে মুশফিককে নিয়ে ৪৮ রানের জুটি গড়ে প্রাথমিক বিপদ সামলান ইমরুল কায়েস। দলীয় ১২৭ রানের মাথায় মুশফিক ফিরে গেলে ফের চাপে পড়ে টাইগার-শিবির।

এক প্রান্তে সতীর্থদের আসা-যাওয়ার মিছিল দেখছিলেন ইমরুল কায়েস। নিজে উইকেটে সেট হয়ে চাপা বাড়াচ্ছিলেন জিম্বাবুয়ের ওপর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি নিজেও সেই মিছিলে যোগ দিয়ে দিলেন। ৮৯ বলে ৭৬ রান করে আউট হয়ে গেলেন বাংলাদেশ দলের ওপেনার। দলীয় রান এ সময় ১৫১। তার ইনিংসটি সাজানো ছিল ৬টি বাউন্ডারি আর ৪টি ছক্কায়। ইমরুলের বিদায়ে নিশ্চিতভাবেই আরও চাপে পড়ে গেলো বাংলাদেশ।

ইমরুল ফিরে যাওয়ার পর বাংলাদেশ ইনিংসের হাল ধরতে মাঠে নামেন নাসির হোসেন। জুটি বাধেন সাব্বির রহমানের সঙ্গে। এ দু’জনের ওপর ভর করে ভালোই এগিয়ে চলছিল বাংলাদেশের ইনিংস। দু’জন মিলে গড়েন ৪২ রানের জুটি। কিন্তু আবারও ভূল করে বসলেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা।

এবার সাব্বির। লুক জংউই’র বলটি অফসাইড দিয়ে বের হয়ে যাচ্ছিল। সাব্বির জোরালোভাবে অফ ড্রাইভ করতে চাইলেন; কিন্তু ব্যাট ছূঁয়ে বল চলে গেলো উইকেটক্ষকের হাতে। ৬ষ্ঠ উইকেটের পতন ঘটলো। দলীয় রান এ সময় ১৯৩। ৪০ বলে ৩২ রান করেন সাব্বির।

সাব্বির রহমান আউট হয়ে যাওয়ার পর ক্রিজে নামেন দলীয় অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। জুটি বাধেন নাসির হোসেনের সঙ্গে। ক্রিজে নেমে দারুন ব্যাটিং করে যাচ্ছেন মাশরাফি। বাংলাদেশের রানকে এ দু’জন মিলে পার করে দিলেন ২০০’র গণ্ডি।

দু’জন মিলে গড়েছেন ৩৮ রানের জুটি। তবে ১৪ বলে ১৩ রান করার পর আর টিকতে পারলেন না দলীয় অধিনায়ক। মুজারাবানির বলে উড়িয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ দেন চামু চিভাবার হাতে। ২৩১ রানে পড়লো সপ্তম উইকেট।

এাশরাফি ফিরে যাওয়ার পর ইনিংস শেষ করার দায়িত্ব ছিল নাসিরের ওপর। কিন্তু ৫৩ বলে ৪১ রান করা নাসিরও ক্যাচ তুলে দিলেন। পানিয়াঙ্গারার বলে আরভিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নাসির।

মাশরাফি ফিরে যাওয়ার পর ইনিংস শেষ করার দায়িত্ব ছিল নাসিরের ওপর। কিন্তু ৫৩ বলে ৪১ রান করা নাসিরও ক্যাচ তুলে দিলেন। পানিয়াঙ্গারার বলে আরভিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নাসির।

নাসির আউট হওয়ার পর উইকেট হারান আরাফাত সানিও। মুজরাবানির বলে ক্রেইগ আরভিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৮ বলে তিন রান করা আরাফাত। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশকে অলআউট হওয়া থেকে বাঁচান আল আমিন আর মুস্তাফিজুর রহমান এবং বাংলাদেশের রান নিয়ে যান ৯ উইকেট হারিয়ে ২৪১ রান পর্যন্ত।

জিম্বাবুয়ের পক্ষে পানিয়াঙ্গারা নেন ৩ উইকেট। ২টি করে উইকেট নেন মুজরাবানি এবং গ্রায়েম ক্রেমার। ১টি করে উইকেট নেন লুক জংউই এবং শন উইলিয়ামস।