আবু আজাদ : সাত বছর পর আগামীকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সম্মেলন হচ্ছে। সম্মেলন ঘিরে যেমন ব্যাপক উত্সাহ উদ্দীপনা আছে, তেমনি সংশয়ও রয়েছে নেতাকর্মীদের মধ্যে। সরাসরি ভোট নাকি সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচন হবে, সেটি নিয়ে চলছে আলোচনার ঝড়। সর্বশেষ দীর্ঘ ১৪ বছর আগে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়।
এ প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আবু তৈয়ব একুশে পত্রিকাকে বলেন,‘ ভোটের আগে সমঝোতার ভিত্তিতে সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচনের চেষ্টা করা হচ্ছে। সভাপতি পদে জেলা ছাত্রলীগের সদস্য তানভীর হোসেন তপু প্রায় নিশ্চিত।’
সাধারণ সম্পাদক পদের বিষয়ে সন্ধ্যার আগে নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সাধারণ সম্পাদক প্রার্থীদের মধ্যে রাঙ্গুনিয়া উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নুরুল আলম, সাধারণ সম্পাদক শিমুল গুপ্ত, বর্তমান জেলা কমিটির সদস্য হাটহাজারীর মিজান উদ্দিন, সন্দ্বীপ উপজেলা সহ-সভাপতি জিকু, ফটিকছড়ির রেজাউল করিম এগিয়ে রয়েছেন। এর বাইরেও যে কেউ চলে আসতে পারে।’
তবে একটি নির্ভরযোগ্য দায়িত্বশীল সূত্র একুশে পত্রিকাকে জানিয়েছে, ছাত্রলীগ নেতা পারভেজ তালুকদার উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হতে যাচ্ছেন। জানা গেছে, পারভেজ চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম এ সালামের অনুসারী। তার বাড়ি হাটহাজারীতে।
উত্তর জেলা ছাত্রলীগের বখতিয়ার সাঈদ ইরান এ প্রসঙ্গে মুখ খুলতে রাজি না হলেও ‘সমঝোতার ভিত্তিতে নির্বাচনের’ চেষ্টা চলছে বলে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন,‘প্রার্থীরা সবাই আমার কর্মী। তাই কারো বিষয়ে বলতে চাই না। সমঝোতার চেষ্টা চলছে, নইলে নির্বাচন।’
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তানভীর হোসেন তপু বলেন, ‘কাউন্সিলররা যদি আমাকে দক্ষ ও যোগ্য মনে করেন, তাহলে আমি নির্বাচিত হবো।’
আগামীকাল মঙ্গলবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে উত্তর জেলা ছাত্রলীগের কাউন্সিল হবে।
সকাল ১০টা থেকে সম্মেলন শুরু হবে। সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকবেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাইফুর রহমান সোহাগ।
সম্মেলনে জেলা ছাত্রলীগের ৯টি ইউনিট থেকে ২২৫ জন এবং জেলার কার্যনির্বাহী কমিটির ১৪১ জন সদস্যসহ মোট ৩৬৬ জন কাউন্সিলর ব্যালটের মাধ্যমে দুটি পদে নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।
দলীয় সূত্র থেকে জানা যায়, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতার জন্য ৭২ জন ছাত্রলীগ কর্মী বায়োডাটা জমা দেন। এরমধ্যে যাচাই-বাছাই করে কেন্দ্রে ৬৮ জনের বায়োডাটা পাঠানো হয়। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় সংসদ ৭ জনকে বিভিন্ন অভিযোগের কারণে বাদ দিয়ে দেন।
সর্বশেষ ২০০৩ সালে সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে উত্তর জেলা ছাত্রলীগের নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়েছিল। তখন কাউন্সিলরদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন রাজিবুল হাসান সুমন ও সাধারণ সম্পাদক হন সৈয়দ মঞ্জুর আলম। এ কমিটির পর আর ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচিত হয়নি।
বখতিয়ার সাঈদ ইরান ও আবু তৈয়বের নেতৃত্বাধীন ১৪১ সদস্যের ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি ২০১১ সালের ৬ জানুয়ারি কেন্দ্র থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল। যদিও এর পাঁচ মাস আগে ২০১০ সালের ২৬ জুলাই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। কিন’ সম্মেলনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কমিটি ঘোষণা করেননি।
এবার সম্মেলনে ভোটের মাধ্যমে নেতৃত্ব নির্বাচনের উদ্যোগ নিয়েছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সংসদ। জেলা ছাত্রলীগ ও জেলা আওয়ামী লীগের সম্মতিতে কেন্দ্র এ সিদ্ধান্ত নেয়।
একুশে/এএ/এটি