শনিবার, ৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২

ইংল্যান্ডেও মোস্তাফিজ জাদু

| প্রকাশিতঃ ২২ জুলাই ২০১৬ | ৯:০৩ পূর্বাহ্ন

mustafizঢাকা : তাঁকে পাওয়ার জন্য অধীর হয়ে উঠেছিল সাসেক্স।প্রথম ম্যাচেই কান্ডারি হয়ে দলের সেই প্রত্যাশা মিটিয়ে দিলেন তিনি। জাতীয় দল, আইপিএল’এর পর কাউন্টি লিগেও অনন্য মোস্তাফিজের রহমান। ১৩ ঘন্টার ভ্রমণ ক্লান্তি ছুড়ে ফেলে গত রাতে নেমেছিলেন খাদের কিনারায় চলে যাওয়া সাসেক্সের হয়ে। অভিষেক ম্যাচেই সেই চিরচেনা মোস্তাফিজ। সেই কাটার, সেই স্লোয়ার এবং বুদ্ধিদীপ্ত ইয়র্কার।ব্যাটসম্যানদের নাভিশ্বাস বেরিয়ে আসার সেই দৃশ্য অচেনা অজানা চেমসফোর্ড মাঠেও। মাত্র ২৩ রান দিয়ে দিলেন ৪ উইকেট। অন্য বোলাররা রান দিলেন ভুরিভুরি।অথচ কী ম্যাজিক যে শিখে নিয়েছেন কাটার বয়, রান তো দূরের কথা, উইকেটে দাঁড়াতেই দিলেন না বাটসম্যানদের!

বোলিং মহানায়কের হাত ধরে ২৪ রানের দারুণ জয় নিয়ে পরের রাউন্ডে যাওয়ার স্বপ্ন দেখছে এখন সাসেক্স। টি-২০ ব্লাস্টের শেষ চারে খেলতে হলে পরের দুটি ম্যাচও জিততে হবে মোস্তাফিজদের।

বৃহস্পতিবার রাতে প্রথমে বাট করে ৬ উইকেটে ২০০ রানের বিরাট স্কোর গড়ে তুলে সাসেক্স। জবাবে ৮ উইকেটে ১৭৬ রানে থামতে হয় এ্যাসেক্সকে।

২০১ রানের বিরাট টার্গেট নিয়ে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই হোচট খায় এ্যাসেক্স। মাত্র ১ রানে মিলসের বলে মোস্তাফিজের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরেন ওপেনার ব্রাউন। তবে শুরুর এই ধাক্কা সামলে নেন লরেন্স, ওয়েসলে এবং রবি বোপারা।

আইপিএলে হায়দরাবাদ অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নারের পথেই হাঁটলেন সাসেক্স অধিনায়ক লুক রাইট।মোস্তাফিজের হাতে তিনি বল তুলে দেন একটু দেরিতে, দলীয় ৫ম ওভারে। কাউন্টি অভিষেকের প্রথম ওভারটা অসাধারণ করলেন কাটার বয়। তার বল ঠিকমত খেলতেই পারলেন না দুই ব্যাটসমান। এ ওভারে দিলেন মাত্র ৪ রান। নিজের দ্বিতীয় ওভারে তো রীতিমত ভয়ঙ্কর হয়ে উঠলেন ‘দ্য ফিজ’। তাঁর কাটারে দিশেহারা এ্যাসেক্সের দুই ভরসা বোপারা ও রায়ান টেন ডোশেটে। দারুণ এক স্লোয়ারে বোপারেকে (৩২) ফিরিয়ে দেন মোস্তাফিজ। এই ওভারে মাত্র ২ রান দিয়ে এক উইকেট নেন তিনি। প্রথম ২ ওভারে দেন মাত্র ৬ রান, নেন এক উইকেট।

মোস্তাফিজের তৃতীয় ওভারের প্রথম বলেই ছক্কা হাঁকিয়ে বসেন ডোশেটে।কিন্তু তৃতীয় বলে ফস্টারকে ৫ রানে সরাসরি বোল্ড করে দেন কাটার বয়। ওভারের শেষ বলে আরো একটি উইকেট। রানের খাতা খোলার আগেই অসাধারণ এক ইয়র্কারে কালম টেলরের উইকেট উপড়ে ফেলেন মোস্তাফিজ।

নিজের শেষ ওভারেও খালি হাতে ফিরেননি। উইকেট পেয়েছেন এ ওভারেও। লড়তে থাকা ডোশেটেকে তিনি ফেরান ২৬ রানে। মোস্তাফিজের মারাত্মক বোলিংয়ে শেষ পর্যন্ত ১৭৬ রানে শেষ হয় এ্যাসেক্সের ইনিংস।

৪ ওভারে ২৩ রান দিয়ে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচের নায়ক তিনিই। অন্য বোলাররা যেখানে ওভার প্রতি রান দিয়েছেন ৮-১০ করে, সেখানে কাটার বয় দিয়েছেন মাত্র ৫.৭৫। ২৪ বলের মধ্যে ১৫টিই ডট বল দিয়েছেন তিনি।

এর আগে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ৫ উইকেটে ২০০ রানের বিরাট স্কোর করেছে মোস্তাফিজের সাসেক্স।

পরের রাউন্ডে যেতে হলে এই ম্যাচসহ পরের দুটি ম্যাচও জিততে হবে- এই সমীকরণ নিয়ে মাঠে নেমে শুরুতেই পিটিয়ে খেলেন সাসেক্সের দুই ওপেনার ক্রিস ন্যাশ ও লুক রাইট। ভালো ব্যাটিং করেন ফিলিপ সল্ট এবং রস টেলরও। তবে কাজের কাজ করেন ক্রিস জর্ডান। তার বিধ্বংসী ব্যাটিংয়েই বিরাট স্কোর গড়ে তুলে সাসেক্স। ২১ বলে ৪৪ রান করেন জর্ডান। সল্ট ৩৩, লুক রাইট ৩২, ন্যাশ ২৫ ও রস টেলর ২৪ রান করেন।এ্যাসেক্সের পক্ষে ৩২ রানে ২ উইকেট নেন।