শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বক্তৃতার সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ীর প্রার্থী দাবি, বিব্রত এইচ টি ইমাম

প্রকাশিতঃ ২ অক্টোবর ২০১৮ | ১১:০২ অপরাহ্ন

চট্টগ্রাম : প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমামের সামনে বক্তৃতার সুযোগ নিয়ে মনোনয়ন দাবি করে অনুষ্ঠানস্থলে বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি করেছেন সীতাকুণ্ড থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন-প্রত্যাশী সিমনি শিপিং লাইনস লিঃ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ ইমরান।

শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকালে পাঁচতারকা হোটেল রেডিসন ব্লু চিটাগাং বে ভিউ’র বলরুমে বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ফাউন্ডেশন আয়োজিত মেধাবৃত্তি পরীক্ষায় কৃতী শিক্ষার্থীদের সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠানে এই ঘটনা ঘটে।

জানা যায়, অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় আ.লীগের উপ প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির সহ সাধারণ সম্পাদক, শহীদ বুদ্ধিজীবীকন্যা ডা. নুজহাত চৌধুরী শম্পা। উদ্বোধক ছিলেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের প্রাক্তন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সীমান্ত তালুকদার।

এইচ টি ইমাম প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন তাই এমপি হওয়ার অভিলাষ থেকে কেউ কেউ আয়োজকদের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটিতে নিজেদের অংশগ্রহণ এবং মঞ্চে বসে দু-চার কথা বলার সুযোগ পান।

অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে মঞ্চে বসেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আব্দুচ ছালাম, তাঁর ছোটভাই ওয়েল গ্রুপের পরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী, সীতাকুণ্ড থেকে আ.লীগের মনোনয়ন-প্রত্যাশী মোহাম্মদ ইমরান।

মঞ্চে যারা ছিলেন প্রত্যেকেই এইচ টি ইমামের উপস্থিতিতে এক এক করে বক্তৃতা দেন। উদ্বোকের পর ইমরান ছিলেন দ্বিতীয় বক্তা। তিনি যখন বক্তৃতা দিতে উঠেন, তখনই ঘটে কাণ্ডটি।

কৃতী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বক্তৃতা দিতে উঠে একপর্যায়ে তিনি জানিয়ে দিলেন আগামী জাতীয় নির্বাচনে চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড) আসনে আ.লীগের প্রার্থী হতে চান।

অনুষ্ঠানের সঙ্গে অপ্রাসঙ্গিক এমন বক্তব্য শুনে কিছুটা অস্বস্তি প্রকাশ করেন এইচ টি ইমামসহ উপস্থিত অনেকেই। ফলে কেন্দ্রীয় নেতা আমিনুল ইসলাম একহাত নেন ইমরানকে। বলেন- কীরে ভাই, আপনি কোথায় এসে কী বলছেন, এটা কি মনোনয়ন চাওয়ার জায়গা! আপনি এরকম বক্তব্য দিলে আমরা অনুষ্ঠান থেকে চলে যাবো।

ঘটনার আকস্মিকতায় পুরো হলরুমে অস্বস্তিকর পরিবেশ দেখে দ্রুত নিজেকে সামলে নেন ইমরান। ঘুরিয়ে নেন বক্তৃতার প্রসঙ্গ। এসময় আ.লীগের প্রার্থী হতে চাওয়ার বিষয়টি বেমানান, অপ্রাসঙ্গিক বুঝতে পেরে একপর্যায়ে অডিয়েন্সের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন ইমরান।

অনুষ্ঠানের সভাপতি বঙ্গবন্ধু শিক্ষা ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী (সিইও) মুহাম্মদ সাজ্জাত হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে একুশে পত্রিকাকে বলেন, ‘শিক্ষিত, সজ্জন মানুষ হিসেবে আমরা ইমরান সাহেবকে ডেকেছিলাম শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে দু-চার কথা বলতে। কিন্তু বক্তৃতার শুরুতে তিনি কিছুটা আবেগী হয়ে প্রার্থী হওয়ার কথা বলায় একটু বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। পরক্ষণে বিষয়টা বুঝতে পেরে তিনি দুঃখপ্রকাশ করেন এবং প্রাসঙ্গিক বক্তব্যে ফিরে যান।’

জানা যায়, মোহাম্মদ ইমরান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদার্থ বিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করে শিপিং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠা পান। তার বড়ভাই মোহাম্মদ ইকবাল বাংলাদেশে শিপব্রেকিং ইয়ার্ডের প্রবক্তা, আরেক ভাই ইমতিয়াজ ইকরাম সীতাকুণ্ড উপজেলার তিন তিনবারের উপজেলা চেয়ারম্যান এবং ভগ্নিপতি আইনুল কামাল সীতাকুণ্ডের এমপি ছিলেন।

একুশে/এটি