বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫, ২১ কার্তিক ১৪৩২

৪০টি দেশের প্রবাসীরা এখন ভোট দিতে পারবেন, ইসির নতুন উদ্যোগ

একুশে প্রতিবেদক | প্রকাশিতঃ ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ | ৯:২০ পূর্বাহ্ন


৪০টি দেশে বসবাসকারী প্রায় দেড় কোটি প্রবাসীর দীর্ঘদিনের ভোটদানের ব্যবস্থা করার দাবি অবশেষে পূরণ হতে চলেছে। নির্বাচন কমিশন (ইসি) প্রবাসীদের জন্য ভোট দেয়ার ব্যবস্থা চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিভিন্ন দেশের ভোটগ্রহণ পদ্ধতি পর্যালোচনা করে অনলাইন ভোটিং ব্যবস্থাকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে ইসি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নির্বাচনী সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব ও প্রবাসীদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ নিয়ে ইসি সচিবালয়কে একটি প্রস্তাবনা তৈরি করতে বলা হয়েছে। একই সাথে অন্যান্য দেশগুলো কীভাবে তাদের প্রবাসীদের ভোটিংয়ের ব্যবস্থা করেছে, তা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে।

ইসি সচিবালয় পাঁচটি পদ্ধতিতে ভোট গ্রহণের কথা ভাবছে। এগুলো হলো – ডাকযোগে ভোটদান, প্রক্সি ভোটদান, দূতাবাস/কনস্যুলেটে ব্যক্তিগত ভোটদান, ইলেকট্রনিক ভোটদান (অনলাইন বা ইমেল) ও হাইব্রিড সিস্টেমে ভোটদান। তবে অনলাইন ভোটিং সিস্টেমকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।

নির্বাচন কমিশন প্রবাসীদের ভোটদানের ব্যবস্থা করতে গিয়ে ১৫ ধরনের সমস্যা চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছে লজিস্টিক সমস্যা, আইনি বাধা, নিরাপত্তা উদ্বেগ, সচেতনতা, কম শিক্ষা, কর্মস্থল থেকে দূরত্ব, ছুটি, আর্থিক ক্ষতি, অন্য দেশের অনুমতি, দূতাবাসগুলোতে স্থান সংকট, বিশৃঙ্খলা, ব্যালট বিতরণ, ফলাফল তৈরি, সমন্বয় ও খরচ।

কর্মকর্তারা বলছেন, সবচেয়ে বড় বাধা হলো আইনি। কেননা, অন্যগুলোর জন্য আইন নেই। তবে ডাকযোগে ভোটদানের বিষয়টি কার্যকর নয়। তাই অন্যান্য পন্থাগুলো বিবেচনা করতে হবে। অন্যদিকে, অনেক প্রবাসী নিরক্ষর বা প্রযুক্তি ব্যবহারে দক্ষ নয়। তাদের ছুটির বিষয়টিও রয়েছে। কমিশন সবকিছু পর্যালোচনা করে এগোচ্ছে।

নির্বাচন কমিশনার আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, প্রবাসীদের ভোটিং পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। তিনটি পদ্ধতি আমাদের সামনে আছে। একটি হলো পোস্টাল ব্যালট, যা খুব একটা কার্যকর নয়। দ্বিতীয়টি হলো প্রক্সি ভোটিং। তৃতীয় অপশন হলো অনলাইনে ভোট। তবে এটি খুব সহজ নয়। আমরা প্রথম দুটি উপায়কে উন্নত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং অনলাইন ভোটিং আরও বেশি পর্যালোচনা করব। পরে অনলাইন ভোটিংয়ের ওপর পাইলটিং করা হবে।

নির্বাচন কমিশন প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনশক্তি ব্যুরো, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসহ বিভিন্ন সংস্থার কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করে দেখেছে ৪০টি দেশে বাংলাদেশি প্রবাসীদের আধিক্য রয়েছে।

এইসব দেশগুলো হলো – সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কুয়েত, ওমান, কাতার, বাহরাইন, লেবানন, জর্ডান, লিবিয়া, সুদান, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাজ্য, ইতালি, হংকং, মিশর, ব্রুনাই, মরিশাস, ইরাক, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, গ্রিস, স্পেন, জার্মানি, দক্ষিণ আফ্রিকা, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, বেলজিয়াম, সুইজারল্যান্ড, ব্রাজিল, চীন, ইন্দোনেশিয়া, মালদ্বীপ, নিউজিল্যান্ড, রাশিয়া, তুরস্ক ও সাইপ্রাস।

এসব দেশে প্রায় দেড় কোটি প্রবাসী রয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আছে সৌদি আরবে, প্রায় ৪০ লাখ। আর সবচেয়ে কম আছে নিউজিল্যান্ডে, প্রায় ২৫০০ জন।