
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত ৩৫ শতাংশ শুল্কের বোঝা থেকে অব্যাহতি পেতে মার্কিন কোম্পানি বোয়িংয়ের কাছ থেকে ২৫টি উড়োজাহাজ কেনার ক্রয়াদেশ দিয়েছে বাংলাদেশ। এর পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র থেকে গম, সয়াবিন তেল ও তুলার মতো কৃষিপণ্য আমদানি বাড়ানোরও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশাল বাণিজ্য ঘাটতি কমিয়ে আনাই এই পদক্ষেপগুলোর মূল উদ্দেশ্য।
আজ রোববার সচিবালয়ে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।
পহেলা অগাস্ট থেকে কার্যকর হতে যাওয়া এই উচ্চ শুল্ক নিয়ে আলোচনার জন্য বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনের নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল সোমবার ওয়াশিংটনের উদ্দেশে রওনা হবে। আগামী ২৯ ও ৩০ জুলাই ইউএসটিআরের (যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির কার্যালয়) সঙ্গে তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
এই বৈঠকে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা খলিলুর রহমানও উপস্থিত থাকবেন। বাণিজ্য সচিব জানিয়েছেন, ৩১ জুলাই আরেকটি বৈঠক হতে পারে এবং পহেলা অগাস্টের মধ্যেই একটি ফলাফল আসবে বলে আশা করা হচ্ছে।
বাণিজ্য সচিব বোয়িং ক্রয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন যে, বিমানের বহর সম্প্রসারণের পুরনো পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই এই ক্রয়াদেশ দেওয়া হয়েছে, যা আগে ১৪টি কেনার কথা থাকলেও এখন ২৫টিতে উন্নীত করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ফ্রান্সের এয়ারবাস থেকে ১০টি উড়োজাহাজ কেনার প্রতিশ্রুতি থেকে সরে আসল বাংলাদেশ। শুল্ক কমানোর চেষ্টার অংশ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে অন্যান্য আমদানিও বাড়ানো হচ্ছে।
ইতোমধ্যে গম কেনার জন্য চুক্তি করা হয়েছে, বেসরকারি খাতের আমদানিকারকরাও যুক্তরাষ্ট্র থেকে বেশি পরিমাণে সয়াবিন আমদানির প্রচেষ্টা নিচ্ছেন এবং তুলা আমদানি বাড়িয়ে আগের মতো ১.৮ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে, যা প্রায় এক বিলিয়ন ডলারের বেশি আমদানি বৃদ্ধি করবে।
এই তৎপরতা শুরু হয় প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর। গত ২ এপ্রিল তিনি বাংলাদেশের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা দেন। পরে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে আলোচনার জন্য তিন মাসের স্থগিতাদেশ মেলে।
কিন্তু এরপরও ৩৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের ঘোষণা আসে, যা বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের জন্য একটি বড় ধাক্কা, কারণ যুক্তরাষ্ট্রই বাংলাদেশি পোশাকের সবচেয়ে বড় বাজার।