
ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্গো ভিলেজে ভয়াবহ আগুন লেগেছে। এর জেরে দেশের প্রধান এই বিমানবন্দরে সব ধরনের উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িকভাবে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে বিমানবন্দরের আমদানি পণ্য রাখার গুদামে এই আগুনের সূত্রপাত হয়। তিন ঘণ্টার বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি।
বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালকের মুখপাত্র মো. মাসুদুল হাসান মাসুদ জানিয়েছেন, কার্গো ভিলেজে আগুন লাগার পর উড়োজাহাজ ওঠানামা সাময়িক স্থগিত রাখা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, আগুন নিয়ন্ত্রণে ১৩টি ফায়ার স্টেশনের ৩৭টি ইউনিট কাজ করছে। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী এবং বিমানবাহিনীর দুটি ফায়ার ইউনিট। দুই প্লাটুন বিজিবি সদস্যও আগুন নেভানোর কাজে সহায়তা করছেন বলে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কার্গো ভিলেজ কমপ্লেক্স থেকে প্রচুর কালো ধোঁয়া উড়তে দেখা যাচ্ছে। আগুনের তীব্রতার কারণে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা কাছাকাছি যেতে পারছেন না। সেখানে উৎসুক জনতার ভিড় জমলে বিমানবাহিনীর পক্ষ থেকে মাইকিং করে সবাইকে সরে যেতে অনুরোধ করা হচ্ছে।
এই অগ্নিকাণ্ডের কারণে এখন পর্যন্ত নয়টি ফ্লাইট ঢাকায় অবতরণ করতে না পেরে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (৮টি) এবং সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে (১টি) অবতরণ করেছে।
ঘটনার সূত্রপাত ও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা
বিমানবন্দরের ৮ নম্বর গেটের (হ্যাঙ্গার গেট) পাশে অবস্থিত আমদানি কার্গো কমপ্লেক্সের ৩ নম্বর গেটের কাছে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে জানা গেছে।
উড়োজাহাজ থেকে মালামাল ওঠানো-নামানোয় যুক্ত থাকা কোম্পানি ভয়েজার এভিয়েশনের গাড়িচালক মো. রাসেল মোল্লা জানান, আগুন লাগার সময় তিনি কমপ্লেক্সের কাছেই ছিলেন এবং দ্রুত গাড়ি সরিয়ে নেন। এ সময় ভেতরে থাকা মানুষদের বের করে দেওয়া হয়।
শাহজালাল বিমানবন্দর দিয়ে সাধারণত যন্ত্রপাতি, পচনশীল পণ্য ও ইলেকট্রনিকস পণ্য আমদানি হয়। আগুনের কারণে এসব পণ্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন আমদানিকারকরা।
আকাশপথে পণ্য পরিবহনকারী আরএমকে গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কামরুজ্জামান ইবনে আমিন সোহাইল বলেন, “এই ঘটনায় আমদানিকারকদের বড় ক্ষতি হয়ে গেল।”
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ এবং কার্গো ভিলেজ পুনরায় চালুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।